আশরাফুজ্জামান বাবু, স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের যশোর জেলা ও উপজেলা কমিটি গঠন করা হয়েছে। আর কেন্দ্রীয় কমিটিকে না জানিয়ে উক্ত কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যশোরের ঝিকরগাছার বিতর্কিত সেই কথিত ডাঃ বিল্লাল হোসেনকে। সে উপজেলার পানিসারা ইউনিয়নের কুলিয়া গ্রামের মৃত মোরশেদ আলী ও আমেনা খাতুনের ছেলে।

মশিয়ার রহমান নামের একজন মুক্তিযোদ্ধার নাম ব্যবহার করে জালিয়াতির মাধ্যমে ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করছে মৃত মোরশেদ আলীর স্ত্রী আমেনা খাতুন নামের এক ব্যক্তি। এই অনৈতিক কাজের সার্বিক সহযোগিতা করেছেন তারই বড় সন্তান বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের ঝিকরগাছা উপজেলা কমিটির সভাপতি পদ স্থগিত হওয়া, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নামধারী ও নিজ উপজেলায় ২৫০ জনের টিউবওয়েলের অর্থ আত্মসাৎকারী গ্রাম্য চিকিৎসক তথাকথিত ডাঃ বিল্লাল হোসেন।

শুক্রবার (১০মার্চ) যশোর জেলা কমিটির আহবায়ক কাজী টিটো ও সদস্য সচিব শাফি সমুদ্র স্বাক্ষরিত দুটো কমিটিতে যশোর জেলার আহবায়ক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক ও ঝিকরগাছা উপজেলার পুর্নাঙ্গ (আংশিক) কমিটির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পদে তাকে রাখা হয়েছে। গত ৪ ডিসেম্বর একমাসের মধ্যে প্রমান হাজির করতে নির্দেশ দিয়ে বিল্লালকে সংগঠনের ঝিকরগাছা কমিটি থেকে সাময়িক অব্যহতি দেওয়া হয়েছিল। যদিও ৪ মাস পেরিয়ে গেলেও সে তার স্বপক্ষে কোনো প্রমান পেশ করতে পারেনি বলে স্বীকার করেছেন যশোর জেলা কমিটির আহবায়ক কাজী টিটো।

বিতর্কিত কথিত ডাঃ বিল্লাল হোসেনের অনৈতিক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে মাননীয় মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী, জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন, জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, জেলা নির্বাচন অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, থানার অফিসার ইনচার্জ ও উপজেলা নির্বাচন অফিসকে জানিয়ে অভিযোগ দায়ের হওয়ার এবং উপজেলার ৬৩ জন মুক্তিযোদ্ধার লিখিত অভিযোগের বিষয়ে জেলা কমিটি সব জানার পরেও তাকে আবারও দুটো কমিটিতে পদ দেওয়ার কারণে সচেতন মহল ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার লিয়াকত আলী বলেন, বিল্লালের বিরুদ্ধে ৬৩ জন মুক্তিযোদ্ধা লিখিত অভিযোগ জানানোর পরেও তার মতো এরকম বিতর্কিত একজন ব্যক্তিকে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ যশোর জেলা কমিটির যুগ্ম আহবায়কের দায়িত্ব দেয়াটা অত্যান্ত দুঃখজনক। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

যশোর জেলা কমিটির আহবায়ক কাজী টিটো বলেন, বিল্লালকে এক মাসের মধ্যে তার স্বপক্ষে প্রমাণাদি পেশ করার শর্তে ঝিকরগাছা শাখার সভাপতি পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে এখনও পর্যন্ত কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি। কিছু কৌশলগত কারণে তাকে এই পদ দেওয়া হয়েছে।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান সংসদের প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব শফিকুল ইসলাম বাবু বলেন, জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ যেটা করেছে সেটা আমার জানা নেই। আমি আমার চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে উক্ত বিষয়ের উপর পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান সংসদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মোঃ সোলায়মান মিয়া বলেন, আমাদের সংগঠন একটি মানবিক সংগঠন। যারা অপকর্মের সাথে জড়িত তাদেরকে এখানে কোনে পদে রাখা হবেনা। যশোর জেলা কমিটি আমাকে না জানিয়ে আমার রেফারেন্স ব্যবহার করে বিল্লাল হোসেনকে যশোর জেলা কমিটির যুগ্ম আহবায়ক ও উপজেলা কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য করেছে। যার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উঠেছে তাকে পদ দেয়া ঠিক হয়নি। বিষয়টি আমি খোঁজ নিচ্ছি।