ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ রুহুল আমিন সাত বছর ধরে থাকেন মালয়েশিয়ায়। এই সময়ে তিনি দেশে আসেননি। অথচ তার অনুপস্থিতিতে বিয়ের জাল নোটারী বানিয়ে জেসমিন আরা শিলা নামে ২২ বছর বয়সী এক তরুনী রুহুল আমিনের বাড়ি উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে হরিণাকুন্ডু উপজেলার দখলপুর গ্রামে।

তবে শিলার দাবী তাদের বিয়ে হয়েছে মোবাইলে। জাল নোটারীর বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।

সরজমিন অনুসন্ধান করে জানা গেছে, ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার দখলপুর গ্রামের নওশের আলীর ছেলে রুহুল আমিনের সঙ্গে পাশ্ববর্তী পারদখলপুর গ্রামের আশরাফুল ইসলামের মেয়ে জেসমিন আরা শিলার চেনাজানা ছিল। অভিযোগ উঠেছে এই চেনাজানার সুযোগ নিয়ে জেসমিন আরা শিলার পরিবার তৈরী করে জাল নোটারি। সেখানে ২০২০ সালের ২০ ফেব্রয়ারি তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয় বলে উল্লেখ করা হয়। অথচ রুহুল আমিনের পাসপোর্ট ও ভিসার রেকর্ড মতে ২০১৫ সালের ৮ ডিসেম্বর কাজের সন্ধানে তিনি মালয়েশিয়ায় চলে গেছেন এবং এখনো পর্যন্ত তিনি বিদেশেই অবস্থান করছেন। নোটারী পাবলিকের আদালতে বিয়ের শপথ নামায় রুহুল আমিনের যে সাক্ষর রয়েছে তার সঙ্গে পাসপোর্টে থাকা সাক্ষরের কোন মিল নেই। ফলে বিষয়টি জাল বলে প্রমাণিত হয়। এই জাল বিয়ে নিয়ে রুহুল আমিনের পরিবার পড়েছে বিপাকে। এক অচেনা তরুনী স্ত্রী সেজে জোর করে ঘরে ওঠায় তারা কি করবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না। এ্যাডভোকেট সাদ্দাতুর রহমান হাদির সাক্ষরযুক্ত নোটারী পাবলিকের শপথ নমায় উল্লেখ করা হয়েছে, “সুখি জীবন যাপন করতে উভয় বিয়ে করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করি এবং উভয় উপস্থিত থিকে এক লাখ টাকার কাবিনে হিজাব কবুল পড়ে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হলাম। আমরা স্বজ্ঞানে সুস্থ শরীরে নিজ নিজ নাম সাক্ষর সম্পাদন করলাম”। শপথ নমায় মেয়ের সাক্ষর সঠিক হলেও ছেলের সাক্ষর জাল করা হয়েছে। এ বিষয়ে মালয়েশিয়া প্রবাসি রুহুল আমিন মুঠোফোনে জানান, শিলার সঙ্গে আমার কোন বিয়ে হয়নি। সে জোর করে স্ত্রী সেজে দুই মাসের বেশি আমার বাড়িতে উঠেছে। মোবাইল করে বহিরাগতদের ডেকে এনে অত্যাচার করছে। শিলা ও তার স্বজনরা আমার ভিটেয় ঘুগু চরাবে বলে প্রতিনিয়ত হুমকী দিয়ে যাচ্ছে। যে কারণে আমার বৃদ্ধ মা রহিমা খাতুন জীবনহানীর আশংকায় বাড়ি ছেড়ে হামিরহাটী গ্রামে বড় দুলাভাই বাড়ি চলে গেছেন। বিয়ের পক্ষে শিলা যে ডকুমেন্ট দেখাচ্ছে তা জাল এবং ভুয়া বলে রহুল আমিন অভিযোগ করেন। এদিকে শিলার দাবী ২০২০ সালের ৫ এপ্রিল তাদের বিয়ে হয়। তিনি নোটারীর বিষয়ে কিছুই জানেন না। আসলাম নামে এক যুবক নোটারী করে তার কাছে কাগজটি পৌছে দিয়েছেন। বর ৭ বছর ধরে বিদেশে থাকতে কেমন করে বিয়ে হলো ? এমন প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারেনি শিলা। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ নোটারী পাবলিক আদালতের আইনজীবী এ্যাডভোকেট সাদ্দাতুর রহমান হাদির বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে জানান, এ ধরণের জালিয়াতির ঘটনা আমার এখানে ঘটেনি। যদি কোন মেয়ে কারো স্বামী বানিয়ে নোটারী পাবলিকে নিয়ে আসে সেটা তো যাচাই করার দায়িত্ব আমার নয়। এমন কোন ঘটনা যদি ঘটেই থাকে তবে, ভুল তথ্য প্রদানের জন্য ওই মেয়ের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হতে পারে।