আব্দুল্লাহ আল-মামুন: যশোরের চৌগাছায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুই বন্ধু ইব্রাহিম হোসেন (২৭) ও জাহাঙ্গীর হোসেন (২৭)’র মৃত্যু হয়েছে। ইব্রাহিম চৌগাছা পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কুঠিপাড়া গ্রামের ইউসূফ আলীর ছেলে। জাহাঙ্গীর একই গ্রামের বাকি বিল্লাহ বাক্কির ছেলে। শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে উপজেলার চৌগাছা-মহেশপুর সড়কের বাটিকামারী নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, ইব্রাহিম ও জাহাঙ্গীর একই এলাকার সমবয়সী দুই বন্ধু। লেখাপড়া সহ দিনের অধিকাংশ সময় একসঙ্গে চলাফেরার কারণে এলাকার লোকজনের কাছেও ভালো বন্ধু হিসেবে পরিচিত তাঁরা। জীবনের অসময়ে দুই বন্ধুর মৃত্যুও হলো একসঙ্গে। আজ শনিবার বাদ জোহর চৌগাছা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে জানাজা শেষে দুই বন্ধুকে পারিবারিক কবরস্থানে পাশাপাশি দাফন করা হবে বলে জানিয়েছে পরিবার।

পুলিশ বলছে, দুর্ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে রাত ৯টায় দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইব্রাহিমকে মৃত ঘোষণা করেন এবং জাহাঙ্গীরকে যশোর ২৫০ শয্যা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখান থেকে রাতেই তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে শনিবার ভোররাতে জাহাঙ্গীরেরও মৃত্যু হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ বলছে, রাত সাড়ে ৮টার দিকে দুই বন্ধু চৌগাছা থেকে মোটরসাইকেলযোগে মহেশপুরের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে চৌগাছার নারায়ণপুর ইউনিয়নের বাটিকামারী গ্রামের কাজী ফার্ম থেকে ২০০ গজ দূরে চৌগাছা-মহেশপুর সড়কে হঠাৎ চালক মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। পরে রাস্তার পাশের একটি রেইনট্রি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে মোটরসাইকেলচালক ইব্রাহিম ও তাঁর সঙ্গে থাকা বন্ধু জাহাঙ্গীর গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। কিন্তু সেখানে আনার আগেই মৃত্যু হয় তাদের।

দুই বন্ধুর একসঙ্গে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুতে গ্রামে নেমেছে শোকের ছায়া। স্থানীয়রা বলছে, দুই বন্ধু একসঙ্গেই বেড়াতেন। বেশির ভাগ সময় এক মোটরসাইকেলে চলতেন। গতকালও এক মোটরসাইকেলে একসঙ্গে যাচ্ছিলেন চৌগাছা থেকে মহেশপুর। দুর্ঘটনায় মারাও গেলেন একসঙ্গে। একসঙ্গে জানাজা ও সমাহিত হতে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল শুক্রবার রাতে সড়ক দুর্ঘটনায় দুজন আহত হন। পরে তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক একজনকে মৃত ঘোষণা করেন। অপরজনকে ঢাকায় নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এ বিষয়ে তাঁদের পারিবারিক কোনো অভিযোগ নেই।’