স্বপন বিশ্বাস, শালিখা মাগুরাঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে সামনে রেখে বাংলাদেশের প্রথম একটি শিক্ষা পার্ক গড়তে পেরে নিজেকে ধন্য মনে হচ্ছে। একটি জাতি তার ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংষ্কৃতিকে লালল না করে কখনো উন্নত হতে পারে না। তাই আমার একান্ত ইচ্ছে ছিল আগামী প্রজন্মের কাছে একটা বিশেষ কিছু রেখে যাবো, সেই স্বপ্ন থেকেই গড়ে তোলা এ-ই পার্ক। এমন অভিব্যক্তি প্রকাশ করলেন দেশের প্রথম শিক্ষা পার্কের স্বপ্ন দ্রষ্টা শালিখা উপজেলা চেয়ারম্যান এড কামাল হোসেন। ।

শিক্ষা পার্কটি মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলা আড়পাড়া সদর ডিগ্রী কলেজের ১০ শতাংশ জায়গা জুড়ে অবস্থিত। এছাড়াও ডিগ্রী কলেজের কয়েকটি কক্ষও ব্যবহৃত হচ্ছে শিক্ষা পার্কের জন্য। নতুন এই পার্কটি দেখতে প্রতিদিন ভীড় করছে নানা শ্রেণি পেশার মানুষ।

পার্কটিতে ঘুরতে আসা শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার জানায়, এখানে একটি টেলিস্কোপ আছে যা দিয়ে চাঁদের পাহাড় পর্বত পর্যন্ত স্পষ্ট দেখাা যাচ্ছে। এছাড়া সহজে মহাকাশ পর্যবেক্ষণ করা যায়় বলেও জানায় সে। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে রয়েছে ইলেকট্রনিক মাইক্রস্কোপ যা দিয়ে জীবানু জগৎ দেখা যায় এবং ছাত্রছাত্রিরা সহজেই জীবানু জগৎ ও কোষবিদ্যা সম্পর্কে ধারনা লাভ করতে পারছে। এখানে রয়েছে একটি সাহিত্য কর্ণার যেখানে বাংলাদেশের বিখ্যাত কবি ও সাহিত্যিকদের ছবি সাজ্জিত। এখানে বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কিত বই, পুস্তিকা। । এই পার্কে আছে টাইল্সের উপর এ্যম্বুস করা শালিখার ম্যাপ যেখানে শালিখা সম্পর্কিত অধিকাংশ তথ্য আছে। যিনি এখানে ঘুরতে আসবেন তিনি প্রথমেই শালিখা উপজেলা সম্পর্কে ভালো একটি ধারনা পাবেন। এর পরই আছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালিন ম্যাপ যেখানে টাইল্সের উপর এ্যাম্বুস করে সকল সেক্টরকে অত্যন্ত চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। যাতেকরে ছাত্র/ছাত্রী একনজরেই মহান মুক্তিযুদ্ধের তথ্য গুলো দেখে নিতে পারবে। রয়েছে মুক্তিযুদ্ধবেদি যেখানে ১০ ফুট/১০ ফুট বেদির প্রথমেই আছে টাইল্সের উপর অংকিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি। পাশেই তাঁর জীবনী। এর নিচে আছে তথ্য সম্বলিত আমাদের সাত বীর শ্রেষ্ঠের ছবি। এছাড়াও ছয় ফুট উচ্চতা সম্পন্ন ভূগোলক যা সহজে তার অক্ষে ঘুরতে পারে। এখান থেকে ছাত্র/ছাত্রীরা সহজেই পৃথিবীর আহ্নিক গতি, বার্ষিক গতি ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারছে। এখানে ঘুরতে আসা শিক্ষার্থী প্রত্যয় ও প্রতীক জানায়, শিক্ষাপার্ক পেয়ে আমরা খুবই খুশি কারণ হিসেবে তারা বলে, সেখানে থাকা ভূগোলক তাদের ভূগোল শিক্ষার সহায়ক হিসেবে কাজ করছে। এছাড়াও তারা প্রতিটি গ্রহের নাম, ওজন, ঘূর্ণায়ন গতি, তার বছর, সুর্য হতে তার দুরত্ব ইত্যাদি সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করছে।সেখানে থাকা জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও চিচেন ইতজার রেপলিকা যা দেখে বিশ্ব সভ্যতা ও ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারছে তারা। এছাড়াও রয়েছে পিরামিডের রেপলিকা যা মিশর বা প্রচীন ইতিহাস সম্পর্কে জানবে এবং আইফেল টাওয়ারের রেপলিকা যা দেখে এর টেকনোলজি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারবে শিক্ষার্থীরা। প্রেমা শিকদার শিউলি, স্নিগ্ধা, রাইমাসহ শিক্ষাপার্কে ঘুরতে আসা কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হলে তারা জানায়়, শিক্ষাপার্কটি আসলেই একটি শিক্ষনীয় জায়গা যেখান থেকে বিভিন্ন ধরনের বিষয় সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করা যাচ্ছে।উপজেলা ডেভলেপমেন্ট ফেসিলিটেটর ও শিক্ষা পার্কের সহ যোদ্ধা ইবাদ আলী জানান, শিক্ষা পার্কটির সাথে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করি। এরকম শিক্ষা পার্ক দেশের অন্যান্য উপজেলাতে হলে বর্তমান সরকারের শিক্ষাণীতি বাস্তবায়নে সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। উপজেলা পরিচালন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় গত ৩১ জানুয়ারি দেশের প্রথম শিক্ষাপার্ক হিসেবে পার্কটি সকলের জন্য উন্মুক্ত করেন মাগুরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাছের বেগ।