খুলনা বিভাগ, জেলার খবর, যশোর | তারিখঃ জানুয়ারি ৫, ২০২৩ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 5281 বার
এসএম স্বপনঃ বেনাপোলে নিখোঁজ মা জোৎস্না চক্রবর্তীকে (৪৯) উদ্ধারে প্রশাসনসহ বিভিন্ন দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে তার স্বামী-সন্তান ও পরিবার।
অবশেষে ৮ দিন অতিবাহিত হলেও মাকে খুঁজে না পেয়ে বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারী) বেলা সাড়ে ১১ টার সময় বন্দর প্রেসক্লাব, বেনাপোলে সংবাদ সম্মেলন করেছে তার স্বামী-সন্তান ও পরিবার।
সংবাদ বিবরণীতে নিখোঁজ জোৎস্নার স্বামী মান্দার চক্রবর্তী বলেন, আমি বেনাপোল পোর্ট থানার ছোট আঁচড়া গ্রামের বাসিন্দা। আমার স্ত্রী জোৎস্না প্রতিদিনের ন্যায় বাড়ীতে ছিল। আমি আমার মেয়ের জন্ম নিবন্ধণ করার জন্য মেয়ে সহ ২৮/১২/২০২২ তারিখ সকাল অনুমান ১০ টার সময় বাড়ীর বাহিরে যাই। আমার ছেলে সকাল অনুমান ০৯ টার সময় দোকানে যায়। একই তারিখ সকাল অনুমান ১১ টার সময় আমার মেয়ে চন্দা চক্রবর্তী স্কুল থেকে বাড়ীতে এসে তার মাকে বাড়ীতে দেখে নাই। আমার ছেলে অমৃত চক্রবর্তী দোকান থেকে বাড়ীতে এসে আমার স্ত্রীকে বাড়ীতে না পাইয়া আমাকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি অবহিত করে। আমি বাড়ীতে এসে স্ত্রীর সন্ধান করে কোথাও পাইনি। পরে প্রতিবেশী শান্তিপদ গাঙ্গুলী আমাকে জানায় সে মন্দিরে পূজা করার সময় সকাল অনুমান ১০:৪৫ টার সময় আমার স্ত্রীকে বাড়ীর বাহিরে চলে যেতে দেখেছে। পরে আমি আমার নিকট আত্মীয় স্বজনের বাড়ীতে স্ত্রীকে খোঁজা-খুঁজি করে কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। হারিয়ে যাওয়ার সময় তার পড়নে লাল রংয়ের শাড়ী ও নীল রংয়ের ফুলওয়ালা সোয়েটার পরিহিত ছিল।
উল্লেখিত বিষয়টি থানায় ডায়রীভূক্ত করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
জোৎস্নার ছেলে তাপস দাস বলেন, আমি খুলনা সদরে ঔষধ কোম্পানিতে চাকরি করি। আমার বাবা-মা, ভাই-বোন বাড়িতে থাকে। ২৮/১২/২০২২ তারিখে আমার ভাই দোকানে এবং বাবা ও বোন জন্ম নিবন্ধণ করার জন্য স্কুলে চলে যায়। আমার মা একা একা বাড়িতে থাকে। আমার বোন বাড়িতে এসে মাকে না পেয়ে আমাদেরকে জানালে অনেক খোঁজা-খুঁজি করেও আমার মাকে পাইনি। আমার বাড়ীর উত্তর পার্শ্বে অবস্থিত শিব মন্দিরের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখে জানতে পারি যে,
কাৰ্ত্তিক বিশ্বাস (৩০), পিতা-কেউ বিশ্বাস, রত্না বিশ্বাস (৪৫), স্বামী বিমল বিশ্বাস, ও বৃষ্টি বিশ্বাস (২৫), স্বামী-বিধান মিত্র সুশান্ত, সর্বসাং-ছোট আঁচড়া, থানা-বেনাপোল পোর্ট। ২৮/১২/২০২২ তারিখ সকাল অনুমান ১০.৩৫ মিনিটের সময় উপরোক্ত আসামীরা আমাদের বসত ঘরে ঢুকে আমার মা এর সাথে কথা বলে আমার মাকে কৌশলে বাড়ীর বাহিরে ডাকিয়া নিয়ে যায়। তারপর থেকে আমার মার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। আমার মা নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে বিবাদী কার্ত্তিক বিশ্বাসকে এলাকায় দেখা যায়নি। বিভিন্ন মাধ্যমে সন্ধান করে বিবাদী কার্ত্তিকের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। কার্ত্তিকের পরিবারের লোকজনের নিকট জিজ্ঞাসাবাদে তার কোন সদ উত্তর দিতে পারে নাই। আমার মা কোন ফোন ব্যবহার না করায় তার সাথে যোগাযোগ করিতে পারি নাই। আমার ধারণা ইং-২৮/১২/২০২২ তারিখ সকাল অনুমান ১০.৩৫ মিনিটের সময় আসামীরা আমাদের বসত বাড়ীতে গিয়া আমার মাকে কৌশলে বাড়ীর বাহিরে ডেকে শিব মন্দিরের পার্শ্ববর্তী পাকা রাস্তার উপর নিয়ে অজ্ঞাতনামা সহযোগীদের যোগসাজশে আমার মাকে জোর পূর্বক অপহরণ করে ইজিবাইকে করে নিয়ে অজ্ঞাতস্থানে আটক রাখিয়াছে। আমার মার সন্ধান করে না পাইয়া আত্মীয় স্বজনের সাথে আলোচনা করে থানায় উক্ত আসামিদের নামে এজাহার দায়ের করি।
তিনি জানান, আজ ৮ দিন ধরে প্রশাসন সহ বিভিন্ন জায়গায় তিনি ও তার পরিবার খোঁজা-খুঁজি করেও মাকে আর উদ্ধার করতে পারেননি। হারিয়ে যাওয়ার সময় তার মায়ের গলায় ১৪ আনা চেইন ও কানে টানা করা ১০ আনা ওজনের কানের ছিল বলেও তিনি জানান।