বিল্লাল হোসেন, ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ভালুকা উপজেলা একটি অন্যতম উপজেলা। এ উপজেলায় আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটেছে। এ উপজেলায় বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার মানুষ বসবাস করার সুবাদে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই এর মতো ঘটনা হর হামেশাই ঘটছে।

গত শনিবার ভোররাতে দুই খামারির গোয়াল ঘরের তালা ভেঙে চারটি বাছুরসহ ১১ টি গরু চুরি করে নিয়ে গেছে সঙ্ঘবদ্ধ চুরেরদল। এতে দুই খামারীর অনুমান ২২/২৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে, উপজেলার ডাকাতিয়া ও সোয়াইল গ্রামে ওইসব চুরির হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ডাকাতিয়া চৌরাস্তা এলাকার বিএ মৌলভী বাড়ির জুবায়ের হোসেনের খামারের তালা ভেঙে শনিবার রাতে একটি সঙ্ঘবদ্ধ চুরেরদল দু’টি বাছুরসহ সাতটি গরু চুরি করে নিয়ে গেছে। খামার মালিক জানান, তিনি দীর্ঘদিন বিদেশ করে বাড়ি এসে ১৫ লাখ টাকা খরচ করে হলিস্টিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের গরুর খামারটি করেছিলেন। তার একটি গরু ২২ লিটার দুধ দিতো এবং ওই গরুটি তিন লাখ টাকা দাম হয়েছিলো। দু’টি বাছুরসহ তার খামারের সাতটি গরুই চুরি হয়ে যাওয়ায় তার প্রায় ১৮/২০ লাখ টাকার টাকার ক্ষতি হয়েছে।

অপরদিকে উপজেলার সোয়াইল বৈলর খার বাড়ির মৃত মাতু খানের ছেলে এমরান খানের গোয়াল ঘরের তালা ভেঙে দু’টি গাভী ও দু’টি ষাড় বাছুর চুরি করে নিয়ে যায় চুরেরদল। গরুর মালিক জানান, গরুগুলো চুরি হওয়ায় তার প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

সাবেক মেম্বার শাহজাহান খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

ভালুকা মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি) মোহাম্মদ কামাল হোসেন জানান, গরু চুরির বিষয়ে তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে আছি, অভিযোগমূলে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে গত ২ জুন, ২০২২ উপজেলার ভরাডোবা-সাগরদিঘী রোডে মেদুয়ারী ইউনিয়নের নিঝুরী এলাকাধীন ডিম বোঝাই গাড়ি হেলপারও ড্রাইভারকে মারধর করে রাস্তার সাইটে ফেলে রেখে গাড়ি নিয়ে উধাও হয়ে যায়।

বিগত বুধবার ২৫ মে, খিরু নদীর পাড়ে মৃত আব্দুল আউয়াল মাষ্টারের আকাশমনি বাগানের পশ্চিম পাশে একটি গর্তে অজ্ঞাত এক যুবতীর লাশ মডেল থানা পুলিশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে। লাশটির মুখে ও মাথায় আঘাতের চিহ্নসহ তার মুখমণ্ডল রক্তাক্ত অবস্থায় ছিলো। মডেল থানাপুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই অজ্ঞাত লাশের পরিচয় তিনি ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বাল্লুকবেড় গ্রামের সোহেল মিয়ার মেয়ে গার্মেন্টস শ্রমিক তাহমিনা বেগম।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিয়ত এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। গ্রাম গন্জের মানুষ আগে রাতে দরজা-জানালা লাগাতে ভুলে গেলেও ঘর-বাড়ি থেকে কোনাে কিছু চুরি হতাে না। কিন্তু ইদানীং থানা পুলিশের গাফিলতিতে এসব অপকর্মের মধ্যে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি ও হত্যার মতাে জঘন্য ঘটনাও ঘটছে। যে কারণে এলাকার মানুষ ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। ভালুকা উপজেলা যেভাবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছে, তাতে ধারণা করা যায় সন্ত্রাসীদের দাপটে সাধারণ মানুষ এলাকা ছাড়তে বাধ্য হবে। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযােগ থাকা সত্ত্বেও থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়। যদিও মাঝে মধ্যে মামলা গ্রহণ করে । তাতেও ভুক্তভোগীরা সঠিক বিচার পায় না।