আশরাফুজ্জামান বাবু, প্রতিনিধি, যশোর : যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার সদর ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের শ্রীরামপুর সিদ্দিকীয়া আলিম মাদরাসার দাখিল পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীকে অপহরন করার চেষ্টা করেছে এক দুর্বৃত্ত। এই ঘটনায় ছাত্রীর পিতা বাদি হয়ে চার জনের নাম উল্লেখ করে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত আসামিরা হলেন শ্রীরামপুর গ্রামের মাদ্রাসা পাড়ার ১। মোঃ হাসিবুল হাসান শান্ত (২৫), পিতা- আজিজুর রহমান, ২। আজিজুর রহমান (৫০), পিতা- মৃত মুন্তাজ আলী, ৩। রিনা বেগম (৪৫), স্বামী- আজিজুর রহমান, ৪। স্বপ্না বেগম (৩০), স্বামী- মিন্টু হোসেন সহ আরও ৫/৬জন অজ্ঞাত ব্যক্তি।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, শ্রীরামপুর গ্রামের মোঃ জাহাঙ্গীর আলম এর মেয়ে মোছাঃ সাদিয়া সাহারা (১৫) বর্তমানে শ্রীরামপুর সিদ্দিকীয়া আলিম মাদ্রাসার এসএসসি-২০২৩ সনের পরিক্ষার্থী। প্রতিদিনের ন্যায় বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল ০৮ টার সময় মাদ্রাসায় কোচিং ক্লাসে যাওয়ার জন্য বাড়ি হতে বের হয়ে আলিউলের মুরগীর ফার্মের নিকট আসলে পূর্বে থেকে উৎ পেতে থাকা ১নং বিবাদী শান্ত সাদিয়াকে অপহরণের উদ্দেশ্যে টানা হেচড়া করে। সাদিয়া বাধা দিলে ১নং বিবাদী তাকে জোরপূর্বক জড়িয়ে ধরে এবং শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করা সহ নানাবিধ অসভ্য আচরণ করে। সেসময় একই মাদ্রাসার ছাত্র মাসুম কে দেখে সাদিয়া বাচার জন্য সাহায্য কামনা করলে মাসুম এগিয়ে আসলে ১নং বিবাদীর মাজায় থাকা চাকু বের করে সাদিয়ার গলায় ধরলে সে ঘটনাস্থলে বেহুশ হয়ে পড়ে যায়। এই অবস্থায় ১নং বিবাদী তার চুল ধরে টানতে টানতে পার্শ্ববর্তী মেহগনী বাগানের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে এবং তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে খামছানো, কামড় ও লাথি মেরে নীলা ফোলা জখম করে।

ঘটনার সময় সাদিয়াকে বাচানোর জন্য মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা এগিয়ে আসলে ১নং বিবাদী তার হাতে থাকা চাকু উঁচু করে শিক্ষার্থীদের বলে আমি আমার মনের স্বাদ মিটিয়ে সাদিয়াকে হত্যা করবো। তোরা সামনে থেকে সরে যা, না হলে তোদেরকেও মেরে ফেলবো। শিক্ষার্থীরা জীবনের মায়া না করে তাদের সহপাঠীকে বাচাঁনোর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে শান্তকে ধরে মাদ্রাসায় নিয়ে যাওয়ার সময় ২, ৩, ৪নং বিবাদী সহ আরো ৫/৬ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা লাঠিসোটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে ১নং বিবাদীকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। ঘটনার পর থেকে সাদিয়া ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে শান্তর পিতা আজিজুর রহমান বলেন, তিন বছর আগে ঐ মেয়ের সাথে আমার ছেলের বিয়ে হয়েছিল। প্রায় বছর খানেক আগে দু’পরিবারের সমঝোতায় তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। আজ সকালে লোকমুখে ঘটনার কথা শুনে আমার পরিবারের লোকজন সহ মাদরাসায় গিয়ে আমার ছেলেকে ছাড়িয়ে নিয়ে এসেছি।

ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ সুমন ভক্ত জানান, ঘটনা জানার সাথে সাথে আমার ফোর্স ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। কিন্তু পুলিশ পৌছানোর পূর্বেই অভিযুক্ত আসামি সেখান থেকে পালিয়ে যায়। থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এদিকে মাদ্রাসা কতৃপক্ষ এবং গ্রামবাসী এই ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন যাতে করে ভবিষ্যতে আর কেউ এ ধরনের ঘৃণ্য অপরাধ করতে সাহস না পায়।