যশোর অফিস : যশোরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা ঘিরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ চাঙা হয়ে উঠেছে। সমাবেশে পাঁচ লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে তোড়জোড় শুরু হয়েছে।

জনসভা সফল করতে নেতারা জেলার আটটি উপজেলা, আটটি পৌরসভা ও ৯৩টি ইউনিয়নে গণসংযোগ করছেন। আটটি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। দলটির নেতাদের দাবি-জনসভা ঘিরে তৃণমূল চাঙা হয়েছে। সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মীদের মধ্যেও ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

১৯৭২ সালের ২৬ ডিসেম্বর যশোর স্টেডিয়ামে ভাষণ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেই দিনের ঐতিহাসিক জনসভায় মানুষের ঢল নেমেছিল। জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিল। একই মাঠে ৫০ বছর পর আগামী ২৪ নভেম্বর জনসভায় ভাষণ দেবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনসভা সফল করার লক্ষ্যে সাংগঠনিক নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে সহযোগী সংগঠনগুলোর প্রতিটি ইউনিটও কাজ করছে। ইউনিটের নেতাকর্মীরা সরকারের উন্নয়ন ও সফলতার বার্তা তৃণমূলে পৌঁছে দিচ্ছেন। একই সঙ্গে জনসভায় হাজির হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন। এ বিষয়ে চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক ও সুখপুকুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান হবিবর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ঘিরে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত। জনসভা সফল করতে গ্রামে গ্রামে গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছি।

এ বিষয়ে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য অমিত কুমার বসু বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হবে বলে আমরা আশাবাদী। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহারুল ইসলাম বলেন, নেতাদের মধ্যে গ্রুপিং, দ্বন্দ্ব থাকতে পারে। কিন্তু আওয়ামী লীগের সাধারণ কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। আগের দিনই নেতাকর্মীরা শুকনা খাবার সঙ্গে নিয়ে জনসভাস্থলে হাজির হবে। নেত্রীকে খুব কাছ থেকে তারা দেখতে চায়। জনসভায় সাধারণ মানুষের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস দেখা যাবে। আমরা প্রতিটি পাড়া মহল্লায় গণসংযোগ করছি।

জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম মনির বলেন, করোনা পরিস্থিতির আড়াই বছর পর যশোরে প্রথম জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় জনসমাগম হবে। জনসভা সফল ও সার্থক করার লক্ষ্যে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ।

শামস উল হুদা স্টেডিয়াম নতুনরূপে সাজছে। স্টেডিয়ামের উত্তর পাশের জীর্ণ গ্যালারি ভেঙে ফেলা হয়েছে। এতে স্টেডিয়াম ও ডা. আবদুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজ মাঠ একাকার হয়েছে। বিশাল মাঠে ব্যাপক জনসমাগম ঘটাতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল মজিদ বলেন, নৌকার আদলে মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে।

জনসভা সফল করার লক্ষ্যে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আটটি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারকে সদস্য সচিব করে ১১ সদস্যের অভ্যর্থনা উপকমিটি, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল মজিদকে আহ্বায়ক করে ১০ সদস্যের মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপকমিটি, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারকে সদস্য সচিব করে ২০ সদস্যের অর্থ উপকমিটি, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল খালেককে আহ্বায়ক করে আট সদস্যের আপ্যায়ন উপকমিটি, জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ডা. এমএ বাশারকে আহ্বায়ক করে ১৩ সদস্যের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা উপকমিটি, যশোর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদকে আহ্বায়ক করে ছয় সদস্যের দপ্তর উপকমিটি, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মুন্সি মহিউদ্দিন আহমেদকে আহ্বায়ক করে ১০ সদস্যের প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটি, জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুখেন মজুমদারকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের শৃঙ্খলা ও স্বেচ্ছাসেবক উপকমিটি গঠন করা হয়েছে।