আশরাফুজ্জামান বাবু, ঝিকরগাছা প্রতিনিধি : যশোর বেনাপোল মহাসড়কের ঝিকরগাছা বাসস্ট্যান্ডে অবস্হিত বিশাল বড় আকারের মরা, শুকিয়ে যাওয়া রেইনট্রি (শিশু গাছ) গাছটি এখন সাক্ষাৎ যমদূতে পরিনত হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি বা বাতাসে এর শুকনো ডাল ভেঙে পড়ছে। ইতিমধ্যেই কয়েকজন এই ভাঙা ডালের আঘাতে আহত হয়েছে। বড় আকারের ঝড়বৃষ্টি হলে এই গাছটি উপড়ে পড়ে ব্যপক প্রাণহানি সহ বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করছেন এলাকাবাসী।

যশোরের ঝিকরগাছা বাজার একটি ঐতিহ্যবাহী বাজার। এই বাজারের প্রাণকেন্দ্রে বাসস্ট্যান্ড অবস্হিত। আর বাসস্ট্যান্ডের একেবারে মাঝখানে মরা গাছটি যমদূত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এই গাছের নীচে রয়েছে ৩৩ হাজার ভোল্টের বৈদ্যুতিক তারের খুটি আর তিনটি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার। একেবারে গাছের নীচেই আছে ঝিকরগাছা বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদ, এস কে সুপার মার্কেট, একটি হোটেল, ট্রাক মালিক সমিতির অফিস, একটি মুদিখানা, একটি চায়ের দোকান সহ ভ্রাম্যমাণ ফলের দোকান। যশোরগামী বাসগুলো প্রতিনিয়ত এই গাছের নীচে এসে দাড়িয়ে থাকে। তাছাড়াও সারাদিন এই গাছের নীচে দিয়ে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। এরকম ব্যস্ততম একটি জায়গায় এই মরা গাছটি দাড়িয়ে থাকায় জনমনে সর্বদা চরম আতংক বিরাজমান।
গাছের নীচে অবস্থিত চা বিক্রেতা হাকিম জানান, শুধুমাত্র পেটের দায়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখানে দোকানদারি করি। সামান্য বাতাসেই এই মরা গাছের ডাল ভেঙে পড়ে। আমার দোকানের ওপরেও একবার গাছের ডাল ভেঙে পড়ে আমি আহত হয়েছি। গাছটি কেটে ফেললে ভালো হয়।
বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদ এর পেশ ইমাম জনাব আব্দুস শুকুর বলেন, পাঁচ ওয়াক্ত সালাতে নামাজ পড়তে আসা মুসুল্লিদের নিরাপত্তা নিয়ে সবসময়ই শংকিত থাকি, কখন না জানি গাছের ডাল ভেঙে মসজিদের উপর পড়ে। স্থানীয় সংসদ সদস্যকেও বিষয়টি জানিয়েছি কিন্তু গাছ কাটা হয়নি।
এসকে সুপার মার্কেট এর মালিক বাবুল হোসেন বলেন, এই গাছটি যদি ভেঙে পড়ে তাহলে আমার মার্কেট এর ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হবে। আমার দোকান সহ এই গাছের নীচে অবস্থিত আরও দোকানে সবসময় মালিক, কর্মচারী এবং খরিদদার থাকে। সবসময় আতংকে থাকি কখন না জানি গাছ ভেঙে মানুষ মারা যায়।

ঝিকরগাছার ঐতিহ্যবাহী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেবা’র সহ সভাপতি আলীশাহ বলেন, আমরা গত ৬ বছর ধরে যশোর বেনাপোল মহাসড়কের সকল গাছ অপসারণ করতে আন্দোলন, সংগ্রাম, মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদান সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে চলেছি। কিন্তু পরিবেশবাদী নামধারী কিছু অবিবেচক উন্নয়ন বিরোধী লোকের একটি আবেদনের দোহাই দিয়ে এই গাছগুলো কাটা হচ্ছে না যেটি অত্যান্ত দুঃখজনক।

ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মোঃ মাহবুবুল হক জানান, এই গাছ সহ যশোর বেনাপোল মহাসড়কের সকল মৃত ঝুকিপূর্ণ গাছগুলো অপসারণের জন্য আমি জেলা পরিষদে চিঠি দিয়েছিলাম কিন্তু কোর্টের স্থগিতাদেশ থাকায় গাছগুলো অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। এই গাছগুলোর কারনে মহাসড়কে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনা ঘটছে।

স্হানীয় জনগন এই মরা শুকনো গাছটি সহ যশোর বেনাপোল মহাসড়কের সকল গাছ অপসারণ করে অনতিবিলম্বে রাস্তাটি ছয়লেনে উন্নীত করার দাবী জানিয়েছেন।