এস এম মহিদার রহমান, সাতক্ষীরা ঃ সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দরে ট্রাক প্রতি বাড়তি চার’শ’ টাকা লোড আনলোড চার্জের দাবি নিয়ে বিরোধে সিএন্ডএফ এজেন্ট কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন ও হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে তিন শ্রমিক কর্মচারী আহত হওয়ার ঘটনায় বন্দরের লোড আনলোড বন্ধ রেখে সকাল থেকে কর্মবিরতি পালন করছে শ্রমিকরা। এর ফলে মালামাল খালাসের অপেক্ষায় ভোমরা বন্দরে পন্যবাহি ট্রাকের দীর্ঘ লাইন পড়ে গেছে। খুব দ্রুত পণ্যবাহি ট্রাকের এসব মালামাল ভোমরা বন্দরে খালাস না করতে পারলে তারা প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
ভোমরা স্থল বন্দরের হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান জানান,ট্রাক প্রতি লোড আনলোড করতে ৮শ’ টাকা দিতেন ব্যবসায়ীরা। দ্রব্যমুল্যের উর্দ্ধগতিতে দিশেহারা হয়ে আমরা ১ হাজার ২শ’ টাকা দাবি করেছিলাম। এই দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছিলাম। শনিবার সন্ধ্যায় কর্মচারি ইউনিয়নের নেতৃত্বে ব্যবসায়ীদের গুদামের শ্রমিকদের দিয়ে ট্রাক লোড-আনলোড করার সময় সঙ্গত কারণে শ্রমিকরা বাঁধা দেয়। এনিয়ে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষে সিএন্ডএফ কর্মচারি ইউনিয়নের সাব্বির হোসেন, শ্রমিক ইউনিয়নের দেলওয়ারসহ তিনজন আহত হয়। ট্রাক প্রতি আনলোড চার্জ ১ হাজার ২শ’ টাকা না হলে শ্রমিকরা কাজ করবেনা বলে জানান হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের এই নেতা।
এবিষয়ে ভোমরা কর্মচারি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মিলন হোসেন জানান, শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়ার বিষয়ে সিএন্ডএফের এজেন্ট নেতৃবৃন্দের সাথে বিকেলে সভা হওয়ার কথা রয়েছে। আশা করছি,সভায় বিষয়টি নিস্পত্তি হবে।
ভোমরা স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম জানান, হ্যান্ডলিং শ্রমিকরদের মালামাল লোড আনলোড করার জন্য ট্রাক প্রতি সরকার নির্ধারিত ঠিকাদারের কাছে প্রায় ২২’শ টাকা পরিশোধ করতে হয়। এছাড়া শ্রমিকদের ট্রাক প্রতি আরো ৮’শ টাকা বকশিস দিতে হয়। এই বকশিস সম্প্রতি তারা তা বাড়িয়ে আরো ৪’শ টাকা দাবী করে আসছিল যা অযৌক্তিক বলে তিনি দাবী করেন। কিন্তু ব্যবসায়ীরা তা দিতে রাজী না হওয়ায় তারা গতকাল থেকে লোড আনলোড বন্ধ করে দেয়। একপর্যায়ে সন্ধ্যায় সিএন্ডএফ এজেন্ট কর্মচারীরা তারা অন্য শ্রমিক দিয়ে ট্রাকে মালামাল লোড আনলোড শুরু করলে তাদের সাথে সংঘর্ষ বাধে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছে বলে জেনেছি। তিনি আরো জানান, আজ রবিবার সকাল থেকে হ্যান্ডলিং শ্রমিকরা তাদের কাজ বন্ধ করে দিয়ে তারা কর্মবিরতি পালন করছে। এরফলে পন্য উঠানো-নামানো বন্ধ করে দেয়ায় ভোমরা বন্দরে মালামাল খালাসের অপেক্ষায় ট্রাকের দীর্ঘ লাইন পড়ে গেছে। তিনি অরো জানান, খুব দ্রুত এসব ট্রাক থাকা পচনশীল কাঁচা মালামাল ভোমরা বন্দরে খালাস না করতে পারলে তারা প্রচুর ক্ষতির সম্মুখিন হবেন।
এদিকে, ভারতীয় পণ্যবাহি একটি ট্রাক মালামাল নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় ভোমরা কাষ্টমস অফিসের সামনে গাড্ডায় পড়ে সড়কের উপর পাল্টি খেয়ে পড়ে যাায়। এতে সড়কটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পণ্যবাহি ট্রাক ওপার থেকে এপারে প্রবেশ করতে পারছেনা। যা মরার উপর খাড়ার ঘা মত অবস্থা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বন্দরের সহকারী কমিশার আমীর মামুন। ফলে ভারতে ঘোজাডাঙ্গা এলাকায় পন্য বাহি ট্রাকের দীর্ঘ লাইন পড়ে গেছে। তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যে ট্রাকটি সড়কের উপর থেকে সরানোর কাজ চলছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে পণবাহি ট্রাক ভোমরা বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে।