খুলনা বিভাগ, জেলার খবর, যশোর | তারিখঃ আগস্ট ২৯, ২০২৪ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 570 বার
আনোয়ার হোসেন : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পরিস্থিতি সামলাতে পল্লবী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপূর্ব হাসানের হুমকিমূলক একটি ভিডিও ভাইরাল হয়।
ভিডিওটিতে তাকে বলতে দেখা যায়, ‘মাইরা তো ফেলছি, এখন কী করবা।’ যা তীব্রভাবে সমালোচিত হয়।
যশোরের শার্শার চাঞ্চল্যকর কলেজছাত্র রেজওয়ান গুমের ঘটনায় পুলিশের তিন কর্মকর্তার নামে যশোর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা হয়েছে।
গত বুধবার (২৮ আগস্ট) বিচারক বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে এজাহার হিসাবে গ্রহণের জন্য বেনাপোল পোর্টথানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী আলমগীর হোসেন আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের আদেশের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গুমের ঘটনায় ভিকটিম রেজওয়ানের বড় ভাই মোঃ রিপন হোসেন বিজ্ঞ আদালতে মামলার আর্জি করেছিলেন।
মামলার আসামীগন হলেন বেনাপোল পোর্ট থানার দায়িত্বরত সাবেক এস আই নূর আলম, সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপূর্ব হাসান একই সময়ে থানার তদন্ত ওসির দায়িত্বে থাকা খন্দকার শামীম আহমেদ।
গুমের স্বীকার হয়ে এখনো পর্যন্ত নিঁখোজ থাকা বাগ আঁচড়া কলেজের অনার্স পড়ুয়া কলেজ ছাত্র রেজওয়ান শার্শা উপজেলার পুটখালী ইউনিয়নের মহিষাডাজ্ঞা গ্রামের মোঃ মিজানুর রহমানের ছেলে।
মামলায় উল্লেখিত বিবরন ও গুম ঘটনার বিষদ জানিয়ে বাদী রিপন হোসেন বলেন, বিগত ৪ঠা আগস্ট ২০১৬ইং তারিখে বেলা আনুমানিক ১২ টার দিকে বেনাপোল বাজার ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সামনে থাকা চায়ের দোকান হতে তার ভাই রেজওয়ানকে এস আই নূর আলম ঘটনার প্রত্যক্ষ স্বাক্ষী (১) রেজাউল ও (২) আনোয়ার হোসেনের সামনে হতে সাদা পোশাকে তুলে নিয়ে যায়।
এরপরপরই পরিবারের লোকজন বেনাপোল পোর্টথানায় গেলে তৎকালিন ওসি অপূর্ব হাসান রেজওয়ানকে আটক করার ঘটনা অস্বীকার করেন এবং জানান ডিবি পুলিশ ধরতে পারে খোঁজ নিয়ে দেখুন। তারপর ৬ আগস্ট রিপন রেজওয়ানের নিখোঁজ থাকার কথা জানিয়ে তদন্ত (ওসি) শামীম আহমেদের কাছে সাধারন ডায়েরী অন্তভূক্তির লিখিত আবেদন করি। তাৎক্ষনিক ডায়েরী অন্তভূক্তির কপি না দিতে অপূর্ব হাসান তদন্ত ওসি শামীমকে নির্দেশ দেয়।
দুইদিন পর জিডি কপি পুলিশ বাসায় পৌঁছে দিলে তাতে মনগড়া মিথ্যা বানোয়াট লেখা ও জাল স্বাক্ষর দেখতে পাই। থানায় গিয়ে ওসি অপূর্ব হাসানকে বিষয়টি জানালে তিনি অশ্রাব্য গালিগালাজসহ পরিবারের সদস্যদের প্রকাশ্য প্রাননাশের হুমকি দেন। সাথে এও বলেন তোর ভাই আই এস এ যোগ দিয়েছে। বাড়াবাড়ি করলে তোকেও মামলায় চালান দিবো। এ ঘটনায় আমার পরিবার ভীত হয়ে পড়ে ও গুমের মামলা প্রক্রিয়ার পথ অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।
দীর্ঘ ৮ বৎসর হলো গুম নির্যাতনের স্বীকার রেজওয়ানের এখনো কোন খোঁজ পাইনী আমার পরিবার। সে বেঁচে আছে কি তাও নিশ্চিত না আমরা। নিখোঁজ ভাইকে ফিরে পেতে সরকার, প্রশাসনের উর্দ্ধতণ কর্মকর্তাসহ সমাজের ক্ষমতাবান মানুষের সহযোগীতা চেয়েছেন বাদী রিপন হোসেন।
এই ঘটনায় শার্শা উপজেলার ছাত্র-জনতা ও সুশীল সমাজের দাবী দ্রুত রেজওয়ান গুমের রহস্য উন্মোচনসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের। মামলার বিষয়ে জানতে আসমী পুলিশ কর্মকর্তাদের মুঠোফোনে কল করেও সংযোগ না মেলায় বক্তব্য জানা যাইনী।
এজাহার গ্রহন বিষয়ে জানতে বেনাপোল পোর্টথানায় যোগাযোগ করা হলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন ভক্ত সাংবাদিকদের জানান, বেনাপোল পোর্ট থানায় কর্তব্যরত সাবেক ৩ কর্মকর্তার নামে আদালতে মামলার বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এখনো পর্যন্ত কোন কাগজ হাতে পাননি। কাগজপত্র পেলে তিনি বিস্তারিত জানাবেন জানান।