আশরাফুজ্জামান বাবু, স্টাফ রিপোর্টার : দুর্নীতি, অনিয়ম প্রতিরোধের পাশাপাশি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমধর্মী নানামুখী সৃজনশীল পদক্ষেপের ফলে ঝিকরগাছা উপজেলায় বদলে গেছে উপজেলা ভূমি অফিস। বর্তমান সময়ে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় সেবা প্রত্যাশীদের, অফিসে কর্মকর্তাদের দেখা মিললেও একটা কথার জায়গায় দুইটা কথা বলা যায় না সেখানে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমধর্মী ঝিকরগাছা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কে এম মামুনুর রশীদ। তাঁর গৃহীত নানামুখী পদক্ষেপের ফলে ইতিমধ্যে সাধারণ মানুষের কাছে ঝিকরগাছা উপজেলা ভূমি অফিস একটি জনবান্ধব অফিসে পরিণত হয়েছে।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কে এম মামুনুর রশীদ কাজে যোগদানের পর থেকেই ভূমি কর্মকর্তাদের সঙ্গে জনগণের দূরত্ব কমেছে। জনগণের ভোগান্তি লাঘবে সেবার সবকিছু এখন অনলাইনে। উপজেলা ভূমি অফিসে কোন আর্থিক লেনদেনের সুযোগ নেই। বর্তমান সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমি ব্যবস্থাপনা শতভাগ অনলাইন আপডেট বাস্তবায়নের লক্ষ্যে, ভূমি সংক্রান্ত কাগজপত্র অনলাইনে আপলোড, বাদি-বিবাদীর সরাসরি শুনানি আর দ্রুততম সময়ের মধ্যে জমির নামজারিসহ নানামুখী সেবায় পাল্টে গেছে ঝিকরগাছা উপজেলা ভূমি অফিস। সেবা নিতে নেই আগের মতো তৃতীয় পক্ষ কিংবা দালালের দৌরাত্ম। কোনো হয়রানি ছাড়াই মিলছে জমির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। ভূমি অফিসের নানামুখী সেবা পেয়ে খুশি সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ। যারা এক সময় তৃতীয় পক্ষের সহায়তা ছাড়া জমির কোনো কাজই করতে পারতেন না, তাঁরাই এখন নিজের সমস্যার কথা নিজেরাই ভূমি অফিসে এসে বলতে পারছেন এসিল্যান্ডকে।

সরেজমিন ঝিকরগাছা ভূমি অফিসে গিয়ে দেখা যায়, এসিল্যান্ড অফিসে বসে আছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ১৫/২০ জন সেবা প্রার্থী। সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিজেই প্রত্যেকের সঙ্গে তাদের সমস্যা নিয়ে কথা বলছেন, দিচ্ছেন সমাধানও। জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিজ অফিস রুমে প্রায় প্রতিদিনই গণশুনানি করেন। সেবা গ্রহীতারা জানান, ‘বর্তমান এসিল্যান্ডের সৃজনশীল কাজ করার মানসিকতা আছে বলেই জনগণ সেবা পাচ্ছে। মূলত এ কারণেই ভূমি অফিসের সেবার মান পরিবর্তন হয়েছে। সেবাপ্রার্থীরা জানান, যেকোনো মানুষ যেকোনো সময় সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সঙ্গে কথা বলতে পারছেন। সেবা গ্রহীতা ঝিকরগাছা সদরের মল্লিকপুর গ্রামের মোঃ আবু বক্কার বলেন, আমি সহকারী কমিশনার (ভূমি) মহোদয়ের সেবা ও আচরণে অত্যন্ত সন্তুষ্ট। একজন কর্মকর্তা আমার সাথে এত সময় দিয়ে সুন্দর ভাবে কথা বলবেন তা আগে ভাবিনি। তিনি সব কথা শুনলেন এবং পরামর্শ দিলেন। এসিল্যান্ড সাহেব অনেক ভালো মানুষ। খুব ভালো লাগছে। উনার জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া করছি। ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা শিমুলিয়া ইউনিয়নের সোলায়মান হোসেন বলেন, অতিরিক্ত টাকা-পয়সা দেওয়া লাগে না। সরকারি খরচ যা তাই দিতে হচ্ছে। হয়রানি ছাড়াই সব কাজ করে দিয়েছে।

ঝিকরগাছা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কে এম মামুনুর রশীদ বলেন, জনবান্ধব জনসেবা নিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর। একজন মানুষও যাতে ভোগান্তির স্বীকার না হয় সেজন্য ভূমি অফিসের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তৎপর রয়েছে। আমরা সব সময়ই চেষ্টা করি সর্বোচ্চ সেবা দিতে। তিনি আরও বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, বাজার মনিটরিং, খাদ্যে ভেজাল বন্ধে ব্যবস্থা, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচলনা সহ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।