রাসেল আহমেদ, খুলনা জেলা প্রতিনিধি: গত এক দশকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে চরমপন্থি দলের তৎপরতা থিঁতিয়ে গেলেও আবারও আলোচনায় এসেছে তাদের তৎপরতা।

যার ফলে অশান্ত হয়ে উঠছে খুলনা। গত এক মাসে একজন ইউপি চেয়ারম্যান, সাবেক ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতাসহ দুর্বৃত্তদের হাতে অন্তত ৫ জন নিহত হয়েছে।

এ সকল হত্যাকান্ডের পর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে খুলনার জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে। রাজনৈতিক বিরোধ, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও জমি জমা সংক্রান্ত কোন্দলের জের ধরে এসব হত্যাকান্ড সংগঠিত হয়েছে। সম্প্রতি সময়ে এসব হত্যাকান্ডের ঘটনায় সাধারন মানুষের মধ্যেও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

গত ১ জুলাই রাতে ডুমুরিয়া উপজেলার শরাফপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আ’লীগ নেতা শেখ রবিউল ইসলাম রবি দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হয়। পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা এলাকায় প্রভাব বিস্তার, রাজনৈতিক কোন্দল এবং ইউপি নির্বাচন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের বিরোধকে কেন্দ্র করে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

এ ঘটনায় নিহত ইউপি চেয়ারম্যানের স্ত্রী বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৭/৮ জনকে আসামি করে ডুমুরিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় জেলা আ”লীগ নেতা আজগর বিশ্বাস তারা।এদিকে গত ২৪ জুন নগরীর ফুলবাড়ি গেট এলাকায় দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন আরিফ হোসেন নামের এক যুবলীগ নেতা। নিহত আরিফ দিঘলিয়া উপজেলার যোগীপোল ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ও নগরীর ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক।এলাকায় অধিপত্য বিস্তার, জমাজমি বিক্রয় নিয়ে বিরোধ ও ঠিকাদারী কাজের ২ কোটি টাকা ভাগাভাগি নিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ তদন্তে জানা গেছে। এছাড়া ৮ জুলাই প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীরা নগরীর পূর্ব বানিয়া খামার লোহার গেট এলাকার যুবলীগ নেতা আলামিন কে কুপিয়ে হত্যা করে। এলাকার কিশোর গ্যাংয়ের আধিপত্য ও মাদকের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

এর বাইরে নগরীর জোড়াগেট এলাকায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে শাওন তালুকদার নামে এক যুবক নিহত হয়।সর্বশেষ গত বুধবার ফুলতলা উপজেলার খানজাহানপুর গ্রামে ভাতিজার ধাঁরালো হাসুয়ার গোপে চাচা শেখ মজিবুরকে হত্যা করে।

এদিকে ইউপি চেয়ারম্যানসহ গত এক মাসে খুলনা সদরসহ জেলায় একাধিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। সন্ধ্যার পর অনেক জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতারা আতঙ্কে ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইদুর রহমান বলেন, চেয়ারম্যান রবি হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিও অতীতের তুলনায় এখন অনেকটা ভালো আছে।