০২:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫

১৫ অক্টোবরের আগেই শেষ করতে হবে জুলাই সনদ, ঐকমত্য হলে ভালো, অন্যথায়…

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট: ০৬:৫০:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৫
  • /

নিজস্ব প্রতিবেদক : ১৫ অক্টোবরের আগেই জুলাই সনদের কাজ শেষ করতে চায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এই সময়ের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট একটি প্রস্তাব পেলে তা সরকারকে দেওয়া ও বাস্তবায়ন করা সহজ হবে। অন্যথায় কমিশন তার মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে। জানিয়েছেন কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ।

আজ রোববার (৫ অক্টোবর) ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আয়োজিত সংলাপের চতুর্থ দিনে এ কথা বলেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে ছয়টি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম, এই ছয়টি প্রক্রিয়ার বিষয়ে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে যদি এটাকে একটি জায়গায় আনা যায়। উপস্থিত ৩০টি রাজনৈতিক দল যদি একটি প্রস্তাব দেয়, তাহলে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সানন্দে সেই প্রস্তাব উপস্থাপন করতে পারব।’

আলী রীয়াজ বলেন, ‘আজকে আপনাদের কাছে আমরা এসেছি একটিমাত্র কারণে। সেটি হলো আপনাদের পক্ষ থেকে যদি আরও সুনির্দিষ্ট, সুস্পষ্ট এবং স্বল্প প্রস্তাব থাকে বাস্তবায়নের, তাহলে আমাদের পক্ষে সেটাকে সমন্বিত করে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন উপায় উপস্থাপন করব। আমাদের লক্ষ্য হলো, অবশ্যই ১৫ অক্টোবরের আগে এই প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।’

আগামী দিনগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ব্যস্ততায় জড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানান আলী রীয়াজ। বলেন, ‘নির্বাচনের প্রক্রিয়ার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সাংগঠনিক ব্যস্ততা আছে। নির্বাচনী প্রস্তুতি আছে। আপনারা বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছেন, সেগুলো যেন বাধাবিঘ্ন না হয়, সেটা আমরা করতে চাই। তাছাড়া মেয়াদের দিক থেকে কমিশনের ১৫ অক্টোবরই মেয়াদ শেষ হবে। তার আগে আমরা এটা শেষ করতে চাই।’

কমিশনের সহসভাপতি বলেন, ‘আপনাদের মধ্যে যদি একমত হওয়ার জায়গা তৈরি হয় তাহলে এটা বাস্তবায়ন করা সহজ হবে। দ্রুততার সঙ্গে করা সম্ভব হবে। এসব বিবেচনায় আজকে কমিশন সকালে প্রধান উপদেষ্টা এবং কমিশনের প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছে।‘

প্রধান উপদেষ্টা অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার তাগিদ দিয়েছেন জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, ‘বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াসহ বিশেষত সনদের জায়গাতে সনদকে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য করে সকলের স্বাক্ষরিত একটি রাজনৈতিক দলিলে পরিণত করা যায় কি না, সে বিষয়ে আমাদের তাগিদ দিয়েছেন।’

সভায় রাজনৈতিক দলের নেতাদের উদ্দেশে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আজকে আমরা প্রত্যাশা করছি, আপনারা সুনির্দিষ্টভাবে প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন। আপনারা যদি দলগত বিবেচনার বাইরে গিয়ে সম্মিলিতভাবে কোনো প্রস্তাব দিতে পারেন, সেটা নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করব। তারই প্রেক্ষাপটে আমাদের লক্ষ্য হলো, যদি আজকে ৩০টি রাজনৈতিক দল এক জায়গায় আসেন, তাহলে আমরা আর বিশেষজ্ঞদের সাথে বসবোই না। কিন্তু যদি প্রয়োজন হয়, বিশেষজ্ঞতার সাথে আবার বসার তাহলে সেটা আমরা বসব।’

আলী রীয়াজ বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ তাদের প্রাণ দিয়ে, রক্ত দিয়ে আমাদের একটা দায়িত্ব দিয়েছে। এটা শুধু দায়িত্ব নয় এটা আমাদের দায়। সেই দায় আমাদের পালন করতে হবে। কেবল সনদ স্বাক্ষর করাই সে দায়ের শেষ নয়। আমাদের সকলে মিলে এই প্রচেষ্টা এই রাষ্ট্রের সংস্কার, কাঠামোগত সংস্কারের জায়গাটা তৈরি করতে হবে।’

বিগত আন্দোলনে নাগরিকদের অবদান, রাজনৈতিক দলের কর্মীদের অবদান, যারা প্রাণ দিয়েছেন, যারা বেঁচে আছেন আহত অবস্থায়, তারা রাজনৈতিক দল ও কমিশনের কাছে প্রত্যাশা করছেন জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আসুন, আমরা সকলে মিলে সেই প্রত্যাশার জায়গাটায় যাতে যেতে পারি।’

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য কমিশন) মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও ড. আইয়ুব মিয়া।

Please Share This Post in Your Social Media

১৫ অক্টোবরের আগেই শেষ করতে হবে জুলাই সনদ, ঐকমত্য হলে ভালো, অন্যথায়…

আপডেট: ০৬:৫০:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : ১৫ অক্টোবরের আগেই জুলাই সনদের কাজ শেষ করতে চায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এই সময়ের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট একটি প্রস্তাব পেলে তা সরকারকে দেওয়া ও বাস্তবায়ন করা সহজ হবে। অন্যথায় কমিশন তার মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে। জানিয়েছেন কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ।

আজ রোববার (৫ অক্টোবর) ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আয়োজিত সংলাপের চতুর্থ দিনে এ কথা বলেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে ছয়টি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম, এই ছয়টি প্রক্রিয়ার বিষয়ে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে যদি এটাকে একটি জায়গায় আনা যায়। উপস্থিত ৩০টি রাজনৈতিক দল যদি একটি প্রস্তাব দেয়, তাহলে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সানন্দে সেই প্রস্তাব উপস্থাপন করতে পারব।’

আলী রীয়াজ বলেন, ‘আজকে আপনাদের কাছে আমরা এসেছি একটিমাত্র কারণে। সেটি হলো আপনাদের পক্ষ থেকে যদি আরও সুনির্দিষ্ট, সুস্পষ্ট এবং স্বল্প প্রস্তাব থাকে বাস্তবায়নের, তাহলে আমাদের পক্ষে সেটাকে সমন্বিত করে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন উপায় উপস্থাপন করব। আমাদের লক্ষ্য হলো, অবশ্যই ১৫ অক্টোবরের আগে এই প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।’

আগামী দিনগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ব্যস্ততায় জড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানান আলী রীয়াজ। বলেন, ‘নির্বাচনের প্রক্রিয়ার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সাংগঠনিক ব্যস্ততা আছে। নির্বাচনী প্রস্তুতি আছে। আপনারা বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছেন, সেগুলো যেন বাধাবিঘ্ন না হয়, সেটা আমরা করতে চাই। তাছাড়া মেয়াদের দিক থেকে কমিশনের ১৫ অক্টোবরই মেয়াদ শেষ হবে। তার আগে আমরা এটা শেষ করতে চাই।’

কমিশনের সহসভাপতি বলেন, ‘আপনাদের মধ্যে যদি একমত হওয়ার জায়গা তৈরি হয় তাহলে এটা বাস্তবায়ন করা সহজ হবে। দ্রুততার সঙ্গে করা সম্ভব হবে। এসব বিবেচনায় আজকে কমিশন সকালে প্রধান উপদেষ্টা এবং কমিশনের প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছে।‘

প্রধান উপদেষ্টা অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার তাগিদ দিয়েছেন জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, ‘বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াসহ বিশেষত সনদের জায়গাতে সনদকে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য করে সকলের স্বাক্ষরিত একটি রাজনৈতিক দলিলে পরিণত করা যায় কি না, সে বিষয়ে আমাদের তাগিদ দিয়েছেন।’

সভায় রাজনৈতিক দলের নেতাদের উদ্দেশে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আজকে আমরা প্রত্যাশা করছি, আপনারা সুনির্দিষ্টভাবে প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন। আপনারা যদি দলগত বিবেচনার বাইরে গিয়ে সম্মিলিতভাবে কোনো প্রস্তাব দিতে পারেন, সেটা নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করব। তারই প্রেক্ষাপটে আমাদের লক্ষ্য হলো, যদি আজকে ৩০টি রাজনৈতিক দল এক জায়গায় আসেন, তাহলে আমরা আর বিশেষজ্ঞদের সাথে বসবোই না। কিন্তু যদি প্রয়োজন হয়, বিশেষজ্ঞতার সাথে আবার বসার তাহলে সেটা আমরা বসব।’

আলী রীয়াজ বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ তাদের প্রাণ দিয়ে, রক্ত দিয়ে আমাদের একটা দায়িত্ব দিয়েছে। এটা শুধু দায়িত্ব নয় এটা আমাদের দায়। সেই দায় আমাদের পালন করতে হবে। কেবল সনদ স্বাক্ষর করাই সে দায়ের শেষ নয়। আমাদের সকলে মিলে এই প্রচেষ্টা এই রাষ্ট্রের সংস্কার, কাঠামোগত সংস্কারের জায়গাটা তৈরি করতে হবে।’

বিগত আন্দোলনে নাগরিকদের অবদান, রাজনৈতিক দলের কর্মীদের অবদান, যারা প্রাণ দিয়েছেন, যারা বেঁচে আছেন আহত অবস্থায়, তারা রাজনৈতিক দল ও কমিশনের কাছে প্রত্যাশা করছেন জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আসুন, আমরা সকলে মিলে সেই প্রত্যাশার জায়গাটায় যাতে যেতে পারি।’

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য কমিশন) মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও ড. আইয়ুব মিয়া।