রাসেল আহমেদ,খুলনা জেলা প্রতিনিধি:খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার ভূমি অফিস, সাব-রেজিস্ট্রার অফিস সহ বিভিন্ন দপ্তরে বেড়েই চলেছে দালালদের দৌরাত্ম্য।

মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে দালালদের জরিমানা করলেও দালালদের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। কোনোভাবেই যেন তাদের নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। বিভিন্ন কৌশলে ফাঁদে ফেলছে এসব অফিসে সেবা নিতে যাওয়া মানুষকে। এসব অফিসগুলোতে গড়ে উঠেছে স্থানীয় কিছু ব্যক্তির সমন্বয়ে দালাল চক্র। অনেক সময়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে অর্থ। যা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও জানেন না।

ভুক্তভোগীরা জানান, অফিসগুলোতে ৬০/৭০ এর মত দালাল রয়েছে। এই দালাল সিন্ডিকেট ভূমি সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজের জন্য প্রতিনিয়ত হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। সূত্রে জানা গেছে, ২৯টি সরকারি সীল মোহরসহ ভুজনীয়া গ্রামের এক প্রতারক দালালকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৬। জেল খেটে এসে সে পুনরায় ফিরেছেন পুরনো পেশা দালালিতে। উপজেলার সরকারি অফিসগুলোতে তার পদচারণায় পিষ্ঠ সেবাগ্রহিতারা। এমনকি তার বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলায় স্বাক্ষী দেয়া ব্যক্তিদের নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, ভূমি অফিস, সাব-রেজিস্ট্রার অফিস বা সরকারি কোনো দপ্তরের কর্মচারী না হলেও দালালরা তেরখাদা ও বারাসাত ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে প্রতিনিয়তই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এরা এখন এসব অফিসের অঘোষিত কর্মচারী! এদের অত্যাচারে ভূমি ও সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে আসা জমির মালিকরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। দালাল ছাড়া কোনো ভুক্তভোগী ভূমি অফিসের ধারেকাছেও যেতে পারেন না। দালালরা নির্নিষ্ট সময়ে জমির খতিয়ান, ভূমিসংক্রান্ত মামলাসহ ভূমির বিভিন্ন সমস্যা দ্রুত সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাসে ভূমি অফিসের প্রকৃত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম ভাঙিয়ে সেবা প্রত্যাশীদের প্রলোভনে ফেলে আদায় করে মোটা অঙ্কের টাকা।

এ ছাড়াও ভূমি অফিসের একশ্রেণির কর্মচারীর সঙ্গে এসব দালালের দারুণ সখ্যতা। জয়সেনা গ্রামের বিশ্বজিৎ সরকার নামের একজন ভুক্তভোগী জানান, জমির দলিল তুলতে ৫০ টাকা লাগার কথা- সেখানে দেড় হাজার টাকা নিয়েছে। কাটেঙ্গা এলাকার শামীম বিশ^াস দাখিলা কাটতে যেয়ে পড়েন বিড়ম্বনায়। তিনি জানান, ২০০ টাকার দাখিলা কাটতে গেলে-আমাকে গুনতে হয়েছে ১৫ হাজার টাকা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ভূমি অফিসের আশপাশে কম্পিউটারের দোকানগুলোতে কর্মদিবসে ওৎ পেতে বসে থাকেন দালালরা। নানান কৌশলে সেবাপ্রত্যাশীদের হয়রানীর ফাঁদে ফেলে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেবার অভিযোগ রয়েছে।

একই চিত্র সাব-রেজিস্টার অফিসের আশপাশেও। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারুফা বেগম নেলি বলেন, দালালদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।