ডেস্ক রিপোর্ট : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার (২১ জুন) বিকেলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে পৌঁছেছেন।

প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট বিকেল ৩টা ২৯ মিনিটে (ভারতীয় সময়) নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এর আগে, ফ্লাইটটি দুপুর ২টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যায়।

ভারতের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শ্রী কীর্তিবর্ধন সিং এবং ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মুস্তাফিজুর রহমান বিমানবন্দরে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান। সেখানে ঐতিহ্যবাহী লোকনৃত্যের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানানো হয়। পালাম বিমানবন্দর থেকে হোটেল তাজ প্যালেস পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন ভাষায় বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে।

বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করার পর ভারতে কোনো সরকার প্রধানের এটিই প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর। সফরের সময় শনিবার (২২ জুন) দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠক হবে এবং তারপরে প্রতিনিধি পর্যায়ে আলোচনা হবে। ঢাকা ও নয়াদিল্লি বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরো শক্তিশালী করতে বেশ কয়েকটি চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর সই হবে।

এছাড়া একটি সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। গত এক দশকে শক্তিশালী আঞ্চলিক অংশীদারত্বের অংশ হিসেবে বেশ কিছু আন্তসীমান্ত উদ্যোগ চালু করা হয়েছে।

এটি ১৫ দিনেরও কম সময়ের মধ্যে ভারতের রাজধানীতে শেখ হাসিনার দ্বিতীয় সফর। গত ৯ জুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।

শুক্রবার সন্ধ্যায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার বাসভবনে সাক্ষাৎ করবেন।

শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে রাষ্ট্রপতি ভবনে লাল গালিচা বিছানো হবে। এসময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আনুষ্ঠানিকভাবে শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানাবেন এবং দু’দেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গার্ড অব অনার দেয়া হবে এবং তিনি গার্ড পরিদর্শনও করবেন।

এরপর তিনি রাজঘাটে ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। সেখানে পরিদর্শন বইয়ে তিনি স্বাক্ষর করবেন।

একই দিন শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একান্ত বৈঠক এবং প্রতিনিধি পর্যায়ে আলোচনার জন্য হায়দরাবাদ হাউজে যাবেন।

উভয়েই সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করবেন। এরপর দুই প্রধানমন্ত্রী বিবৃতি দেবেন। হায়দরাবাদ হাউজে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত ভোজসভায় যোগ দেবেন তিনি।

বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখারের সঙ্গে তার সচিবালয়ে সাক্ষাৎ করবেন। সন্ধ্যায় শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতি ভবনে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করবেন।

স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় প্রধানমন্ত্রী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে পালাম বিমানবন্দর থেকে ভারতের রাজধানী ত্যাগ করবেন এবং রাত ৯টায় ঢাকায় অবতরণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।