সিলেট প্রতিনিধি : সিলেটের বন্যা কবলিত তিনটি উপজেলায় হাসপাতাল চত্বরে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) ডেপুটি সিভিল সার্জন জন্মেজয় দত্ত বলেন, মঙ্গলবার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরে হাঁটু সমান পানি ছিল। এখন হাসপাতালের ভেতর থেকে পানি নেমে গেলেও চত্বর ডুবে আছে। ফেঞ্চুগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরেও পানি রয়েছে।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী পরিচালক সজীব হোসাইন বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ১১০.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ৯টার মধ্যে হয়েছে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত। বৃষ্টিপাতের মাত্রা কমছে। আরও কমলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

এদিকে সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ৫টি পয়েন্টে পানি এখনও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে সারি ও গোয়াইন নদীর গোয়াইনঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচে নেমেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সুরমার পানি যত কমবে, নগরীর নিচু এলাকার পানিও নেমে যাবে। আশার খবর হচ্ছে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাতের হার কমে এসেছে।

জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যায় সিলেটে ৮ লাখ ২৫ হাজার ২৫৬ জন মানুষ পানিবন্দি হয়ে রয়েছেন। এছাড়া ৬২৭ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ১৯ হাজার ৯৪৯ জন মানুষ। সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ভারতের চেরাপুঞ্জির বৃষ্টির ওপর সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির বিষয়টি অনেকটা নির্ভর করছে। কারণ পাহাড়ি ঢলেই সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়। চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি কম হলে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হবে।

জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, কিছু কিছু উপজেলায় সরকারি স্থাপনায় পানি উঠলেও সেবা ব্যাহত হচ্ছে না। এছাড়া যারা আশ্রয়কেন্দ্রে গেছেন তাদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত ২৯ মে ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সিলেটে বন্যা দেখা দেয়। ৮ জুনের পর থেকে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। সর্বশেষ গত ১৭ জুন সোমবার থেকে শুরু হওয়া অবিরাম বৃষ্টিতে ফের জেলায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।