আন্তর্জাতিক ডেস্ক : উত্তর এবং মধ্যভারতের একটি বড় অংশকে হিন্দি বলয় বা গো-বলয় বলা হয়। এই অঞ্চলে গরুর মাংস নিষিদ্ধ। তবে মহিষের মাংস নিষিদ্ধ নয়। মধ্যপ্রদেশ এই গোবলয়ের অংশ।

মধ্যপ্রদেশের পুলিশ জানিয়েছে, জনজাতি অধ্যুষিত মানডলা অঞ্চলে কিছু ব্যক্তি গরুর মাংসের ব্যবসা করছেন বলে তারা খবর পান। সেই সূত্র ধরেই তারা ওই এলাকায় পৌঁছান এবং দেখেন- ১১টি বাড়িতে ফ্রিজে গরুর মাংস রাখা আছে।

পুলিশের অভিযোগ, ঘরের ভেতর থেকে পশুর কঙ্কালও তারা পেয়েছেন। ঘরগুলোর পেছনে ১৫০টি গরু বাঁধা ছিল বলেও অভিযোগ করেছে পুলিশ।

১১টি বাড়ি থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের সন্ধানে তল্লাশি চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। একইসঙ্গে ওই বাড়িগুলো ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলেও পুলিশ জানিয়েছে।

স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় চাঞ্চল্য় ছড়িয়েছে গোটা ভারতে। হায়দরাবাদের সংসদ সদস্য আসাদুদ্দিন ওয়েসি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে কেন ওই ব্যক্তিদের বাড়ি ভাঙা হলো, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন, “বিজেপির মধ্যপ্রদেশে একটি ধর্মের মানুষকেই বেছে বেছে আক্রমণ করা হচ্ছে।”

মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব বলেন, “আসাদুদ্দিন অকারণ রাজনীতি করার চেষ্টা করছেন। ওই ব্যক্তিরা সরকারি জমির ওপর বাড়ি বানিয়ে বেআইনি ব্যবসা করছিলেন বলে তাদের বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে।”

মোহন যাদব বলেন, “ওই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তির বিরুদ্ধে পশু-নির্যাতন আইনে মামলা করা হয়েছে। যার জেরে তার সাত বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।”

২০২৪ সালকে “গোবংশ রক্ষা”-এর বছর হিসেবে পালন করতে চান বলেও জানান মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব।

এ ব্যাপারে প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা বলেন, “মধ্যপ্রদেশে গোমাংস বিক্রি নিষিদ্ধ। সরকারি জমিতে বাড়ি বানিয়ে ব্যবসা করাও নিষিদ্ধ। কিন্তু বিচারের কাজ আদালতের। আদালত রায় দিলে সেই মতো শাস্তি হবে। পুলিশ বা সরকার নিজে থেকে এমন কাজ করতে পারে কি?”

সাংবাদিক আশিস গুপ্ত বলেন, “মহম্মদ আকলাখের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। ফ্রিজে গোমাংস আছে এই অভিযোগে, আকলাখকে পিটিয়ে হত্য়া করা হয়েছিল। আর মধ্যপ্রদেশে পুলিশ নিজেই আইন হাতে তুলে নিয়েছে। পুলিশ যা করেছে তা ঠিক নয়।”