শার্শা অফিস : কোরআনের হাফেজ হবে, সেই স্বপ্ন পূরন হলোনা নয়নের। অকালেই ঝরে গেল কোরআনের পাখি। এমনি সব বাধভাঙ্গা আর্তি স্বজনদের।

জানা গেছে, নিষ্টুর অত্যাচারে পৃথিবী থেকে চলে যেতে হলো আদরের সন্তানকে। পিতা মাতা ও বোনসহ পরিবারে চলছে শোকের মাতম। চাপা আহাযারিতে এলাকার বাতাস যেন ভারী হয়ে উঠেছে। সবাইকে কাদিয়ে আপন ঠিকানায় চলে গেছে মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র নয়ন।

যশোরের শার্শা উপজেলার একটি হেফজখানায় এই শিশু শিক্ষার্থীকে তার সহপাঠীরা গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছে স্বজনরা। ঘটনাটি ঘটেছে যশোরের শার্শা উপজেলার গোগা হাফিজিয়া মাদ্রাসায়। নিহত শিশু শিক্ষার্থী তাজনিন মাহমুদ নয়ন (১৩) উপজেলার বেনাপোল বৃত্তিআঁচড়া গ্রামের আলতাফ হোসেনের একমাত্র ছেলে।

স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, গত ৬ মে গোগা হাফিজিয়া মাদ্রাসার জন্য গ্রামে যান ধান সংগ্রহ করাতে। এসময় তুচ্ছ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মাঝে গন্ডগোলের সুত্রপাত হয়। এসময় নয়নকে দেখে নেওয়া হবে বলে হুমকি দেয় সহপাঠিরা। এরই সুত্র ধরেই রাতে শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম ইয়ানুর ও মাহিম মিলে তাজনিন মাহমুদ নয়নকে শ্বাস রোধ করে হত্যার চেষ্টা করে বলে জানান পরিবারের সদস্যরা। নয়নের মৃত্যু হয়েছে ভেবে তারা মাদ্রাসার সিড়ির উপর ফেলে রেখে শিক্ষক ও পরিবারকে খবর দেওয়া হয়। এসময মাদ্রাসার শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে তারে জড়িয়ে আহত হয়েছে বলে প্রচার চালানো হয়। অবশেষে ৩ জুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। এ ব্যাপারে ৪জুন শার্শা থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

পরিবারের অভিযোগ তার নির্যাতনের পর মাদ্রাসায় থাকা বাক্স ভাংচুর করা হয়। মাহিম মৃত্যুর আগে তার নির্যাতনের কথা পরিবারের কাছে জানিয়ে বিচার দাবী করেছে বলে জানান স্বজনেরা। এই ঘটনার সুষ্ট বিচার দাবী করেন নিহতের পরিবার।

পিতা মাতা ও স্বজনেরা প্রকৃত ঘটনা বের করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।
বিষয়টি থানায় লিখিতভাবে জানিয়ে স্বজনেরা নয়নের চিকিৎসার জন্য প্রথমে যশোর ও পরে ঢাকায় নিয়ে যায়। ৩জুন ঢাকায় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা ধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে বলে জানায তারা।

তবে ঘটনাটির বিষয়ে ভিন্ন কথা বলছেন অভিযুক্তরাসহ মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি গোলাম মোস্তফা ও অধ্যাক্ষ আব্দুল মজিদ। মাদ্রাসার দড়িতে গলায়ফাস লেগে সে আহত হয়েছে বলে দাবী করেন তারা।

এ বিষয়ে শার্শা থানার ওসি মনিরুজ্জামান মনির বলেন এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হযেছে যার মামলা নং ১৯, তাং ০৬-০৬-২৪।

পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। লাশের পোস্ট মর্টেম করা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে। এ ঘটনায় কেউ দোষী হলে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

প্রকৃত ঘটনা উদঘাটিত হোক দোষীদের শাস্তি দেয়া হবে এমনটাই দাবী পরিবার ও স্থানীয়দের।