মোঃ সাইদুল ইসলাম : পাচারের শিকার বাংলাদেশী ২৩ জন কিশোর-কিশোরী, শিশু ও মহিলা বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ শেষে বেনাপোল চেকপোষ্ট দিয়ে বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যেমে দেশে ফিরেছে।
মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টার সময় কোলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ উপ দূতাবাসের প্রথম সেক্রেটারী শামিমা ইয়াসমিন স্মৃতি ও ভারতের পেট্রাপোল চেকপোষ্ট ইমিগ্রেশন পুলিশ বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে তাদের হস্তান্তর করেন। এ সময় শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর আলীফ রেজা উপস্থিত ছিলেন।
ফেরত আসারা হলেন, নড়াইল জেলার আব্দুর রব মোল্যার মেয়ে রিপা খাতুন (১৯), একই জেলার ইসরাফিল শেখ এর ছেলে আলাউদ্দিন শেখ (১৫), প্রশান্ত বিশ্বাসের ছেলে প্রান্ত বিশ্বাস (১৫), নজরুল সিকদার এর মেয়ে জুলি খাতুন (৩০), নোয়াখালী জেলার নুর ইসলামের মেয়ে তানিয়া আক্তার (১৯), বাগেরহাট জেলার বেলাল শেখ এর মেয়ে হামিদা আক্তার (১০), একই জেলার মহসিন মোল্যার মেয়ে সাদিয়া খাতুন (১৬), হানিফ সর্দার এর মেয়ে নুসরাত জাহান জান্নাতি (১১). মনির হাওলাদারের ছেলে মেহেদী হাসান (৮), আন্না তালুকদার এর ছেলে জাকির তালুকদার (১৩), গোপাল বিশ্বাসের মেয়ে বিউটি মন্ডল (২৪), নিহার মন্ডল এর ছেলে পার্থ মন্ডল (০৩), শরীয়তপুর জেলার নুর হোসেন গাজির মেয়ে শান্তা আক্তার গাজি (১৬), মুন্সিগঞ্জের নওশিন রহমান (১৪), ঢাকা জেলার জামাল হোসেনের ছেলে নাঈম হোসেন (১১), খুলনার মুছা সর্দার এর ছেলে মনির হোসেন (১০), একই জেলার আজিজুল গাজির মেয়ে ফাতেমা খাতুন (১২), শাহিন হোসেনের মেয়ে সুমনা আক্তার রিয়া (২০), ময়মনসিংহ জেলার আজিজুল হক এর মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৯), নরসিংদী জেলার রবিউল আওয়াল এর মেয়ে তাছলিমা আক্তার সেতু (১৭), লালমনিরহাট জেলার মুকুল দাসের ছেলে হৃদয় দাস (১৫), জয়পুরহাট জেলার সিরাজুল ইসলামের ছেলে হাসান মোহাম্মাদ (১৬) ও যশোর মনিরামপুর থানার হযরত আলীর মেয়ে শিল্পী খাতুন (২৬)।
ফেরত আসা জুলি খাতুন বলেন, অভাব অনটনের সংসারে সে ভালো কাজের আসায় সীমান্তের অবৈধপথে ভারত পাড়ি জমায়। এরপর সেখানে রাজমিস্ত্রির যোগাড়ে হিসাবে কাজ করার সময় পুলিশের কাছে আটক হয়। সে প্রায় ৭ বছর পর ছাড়া পেয়ে আজ দেশে ফিরেছে।
বেনাপোল নোম্যান্সল্যান্ডে ভারতের কোলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ উপ দূতাবাসের প্রথম সেক্রেটারী শামিমা ইয়াসমিন স্মৃতি বলেন, এরা ভালো কাজের আশায় আবার অনেকে ইচ্ছাকৃত ভাবে পাসপোর্ট ভিসা বাদে ভারতে যায়। এরপর সেদেশের পুলিশের কাছে আটক হয়ে ২ থেকে ৭ বছর পর্যন্ত কারাভোগ করেন। এরা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে আদালতের মাধ্যমে সুবায়ন, অলবেঙ্গলসহ বিভিন্ন শেল্টার হোমে ছিল। এরপর দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে বিশেষ ট্রাভের পারমিটের মাধ্যেমে আজ দেশে ফেরে।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের পরিদর্শক (তদন্ত) ইলিয়াছ হোসেন বলেন, এরা দালাল এবং স্বইচ্ছায় অবৈধপথে ভারতে পাড়ি জমায়। আবার এর মধ্যে অনেকের বাবা মা এখনো ভারতে রয়েছে। তারা পুলিশের ভয়ে পালিয়ে গেলেও তাদের ছেলে মেয়েরা পুলিশের কাছে আটক হয়। এরা বিভিন্ন শেল্টার হোমে থাকার পর আজ দেশে ফিরেছে বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে। ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে এদের বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি কামাল হোসেন ভুইয়া বলেন, ফেরত আসা শিশু, কিশোর-কিশোরী ও মহিলাদের থানার আনুষ্ঠানিকতা শেষে বেসরকারী এনজিও সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
যশোর জাস্টিস এন্ড কেয়ার এর এরিয়া ম্যানেজার আব্দুল মুহিত বলেন, যশোর জাস্টিস এন্ড কেয়ার, মহিলা আইনজীবী সমিতি ও যশোর রাইটস নামে তিনটি এনজিও সংস্থা এদের গ্রহন করে যশোর নিজ নিজ শেল্টার হোমে নিয়ে রাখা হবে। পরে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।