সাঈদ ইবনে হানিফ ঃ যশোরের বাঘারপাড়ায় তালিকাভুক্ত ৮১জন মা মাতৃত্বকালীন ভাতা থেকে বঞ্চিত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, যশোরের বাঘারপাড়ার মীরপুর গ্রামের বাসিন্দা রোজিনা খাতুনের নাম তালিকায় থাকলেও প্রায় ৪ বছর ধরে মাতৃত্বকালীন ভাতা পাচ্ছেন না। তবে কি কারণে ভাতা পাচ্ছেন না, তিনি জানেন না। এরকম বাঘারপাড়া পৌর এলাকার ৩টি ওয়ার্ডের ৮১ জন নারী মাতৃত্ব ভাতা পাচ্ছেন না। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সোমবার সকালে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাও করে টাকা প্রদানের দাবি জানিয়েছেন তারা এছাড়াও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন তালিকাভুক্ত এ নারীরা।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে বাঘারপাড়া পৌর শহরে ‘ল্যাকটেটিং মাদার’ কর্মসূচির আওতায় মায়ের স্বাস্থ্য ও শিশুর পুষ্টি নিশ্চিতে শিশুর জন্ম থেকে ৩৬ মাস পর্যন্ত প্রত্যেক মাকে ২৮ হাজার ৮০০ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়। ২০-৩৫ বয়সী দুগ্ধদায়ী মায়েরা এ সুবিধা পেয়ে থাকেন। এ কর্মসূচির সুবিধাভোগীর সংখ্যা ২৫০ জন। এরমধ্যে পৌর এলাকার ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ৮১ জন নারীকে তালিকায় রাখা হয়। তাদের সবার ডাটা এন্ট্রি ও ব্যাংক হিসাব খুলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করা হয়। অন্য ওয়ার্ডের তালিকাভুক্ত নারীরা ভাতা পেলেও এই ৮১ জন ভাতা পাচ্ছেন না। কি কারণে ভাতা পাচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট দপ্তর এবিষয়ে কিছুই বলতে পারেননি।

তবে এই ৮১ জনের কাগজপত্রে ত্রুটি থাকতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছে। বাঘারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রেশমা পারভিন নামে আরেক নারী জানিয়েছেন, প্রায় ৪ বছর আগে কাগজপত্র ও ব্যাংক হিসাব খোলার জন্য মহিলা বিষয়ক দপ্তরে ১০০ টাকা জমা দিই। পরে তারা অগ্রণী ব্যাংকের একটি হিসাব নম্বর দেন। ব্যাংকে খোজ নেওয়া হলে টাকা আসেনি বলে জানা যায়। টাকা পাওয়ার বিষয়ে স্থানীয় কমিশনার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। বাঘারপাড়া উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) রাজকুমার পাল বলেন, মুঠোফোনে বিষয়টি শুনেছি। নিয়মমতো তাদের কাগজপত্র এন্ট্রি করে সফটওয়ারে সাবমিট করা হয়। তবে ধারণা করা হচ্ছে তালিকাভুক্ত নারীদের আইডি কার্ড, জন্ম নিববন্ধন, মোবাইল নাম্বারসহ কাগজপত্রে ত্রুটি থাকায় তাদের ভাতার টাকা আসেনি। আগামী সপ্তাহে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অফিসে এসে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য কাজ করবেন।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ভিক্টোরিয়া পারভিন সাথী জানান, প্রায় শতাধিক নারীর স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ পেয়েছি। ৪ বছর মাতৃত্ব ভাতা পাচ্ছেন না তারা। ক্ষুব্ধ হয়ে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাও করলে তাদের টাকা প্রদানের বিষয়ে আশ্বাস দিলে তারা বাড়ি ফিরে যায়। তিনি আরো বলেন, বিষয়টি দ্রুত সমাধান করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আ ন ম আবুজর গিফারী বলেন, অভিযোগ পেয়েছি।

মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার সাথে কথা বলে তালিকাভুক্ত নারীদের বিষয়টি যাচাই বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।