খুলনা বিভাগ, জেলার খবর, ঝিনাইদহ | তারিখঃ ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৪ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 2570 বার
আতিকুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ভোরের আলো ছাড়ানোর আগেই হাজারো গাঙ শালিকের কিচির মিচির। তারা মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত।
কোলাহলমুখর বাজারে বিভিন্ন দোকানের টিনের চালে, গাছের ডালে খাবারের আশায় বসে থাকে। পাখিদের কলতানে চারপাশে ভিন্ন রকমের আমেজ তৈরী হয়। খাবারের জন্য তাদের অপেক্ষা। পাখিদের অপেক্ষার অবসান ঘটে স্থানীয় জয়ন্ত ঘোষের হোটেল খুললে। এই হোটেল থেকে প্রতিদিন সকালে পাখিদের খাবার দেওয়া হয়। খাবার দিতে দিতে পাখিদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলেছেন হোটেল মালিক জয়ন্ত ঘোষ। পেশায় হোটেল মালিক জয়ন্ত ঘোষ ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ বাজারের মিলন ঘোষের ছেলে।
দীর্ঘ ২০ বছর ধরে হাজারো পাখিদের খাবার এই হোটেল থেকে দেওয়া হয়। জয়ন্ত ঘোষ খাবার নিয়ে বাইরে বের হওয়ার সাথে সাথে গাড়াগঞ্জ বাজারের আশপাশের গাছ, ছাদ থেকে হাজারো পাখি ঝাঁকে ঝাঁকে মাটিতে নেমে আসে। এ সময় পাখির খাওয়া দেখতে পথচারিরাও দাড়িয়ে যান।
পাখি প্রেমী জয়ন্ত জানান, তার হোটেলে বেঁচে যাওয়া ভাত, পরাটা, রুটি, পুরি কেটে পাখিদের দেওয়া হয়। প্রায় ঘন্টাব্যাপী এ সব খাবার খায় পাখিরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবার হারিয়ে যায় হাজারো গাঙ শালিকের দল। গাড়াগঞ্জের ব্যবসয়ী কাজল জোয়ারদার জানান, পাখিকে ভালোবাসে বলেই পাখিগুলো এখানে ছুটে আছে। এখানকার মানুষ সবাই পাখিভক্ত।
প্রায় ১৫/২০ বছর ধরে পাখি গুলো এখানে খাবার খায়। শুধু শালিক পাখি না, এখানে কাক, বাবুই ও চড়ইসহ বিভিন্ন ধরনের পাখি আসে। বাজারের মানুষ পাখিগুলোকে অনেক ভালোবাসে। ব্যবসায়অ হাফিজ উদ্দীন জানান, এমন দৃশ্য খুব কমই দেখতে পাই। পাখির প্রতি মানুষের এই ভালোবাসা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। মুদি ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ২০ বছরের বেশি সময় ধরে পাখিগুলো দেখে আসছি। ভোর সকালে হোটেল খুলতেই কোথা থেকে যেন চলে আসে তারা। খাবার শেষে সবাই চলে যায়। জয়ন্ত ঘোষের পিতা মিলন ঘোষ জানান, ২০ বছর ধরে পাখিদের খাবার দিয়ে আসছি। দিনে দিনে পাখির সংখ্যা বাড়ছে। আমরা আমাদের সাধ্য অনুযায়ী খাবার দিয়ে থাকি।
প্রতিদিন সকালে হোটেলের দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে পাখিগুলো মুহূর্তের মধ্যে ছুটে আসে। আবার খাবার খাওয়া শেষ হলে মুহূর্তের মধ্যে আবার হারিয়ে যায়। জয়ন্ত ঘোষ জানান, আমার পিতা ও চারারা ২০ বছরের ওপর এ পাখির খেদমত করে আসছে। এখন আমি করছি। তিনি বলেন হোটেলে সারাদিন বেচাকেনা শেষে রাতে যে খাবার বেঁচে থাকে সেগুলো কেটে পাখির খাবারের জন্য সকালে প্রস্তুত করে রাখি।