১২:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫

মৃত্যুদণ্ড মাথায় নিয়ে দেশে ফিরলেন হানিফ পরিবহনের কর্ণধার!

নিউজ ডেস্ক

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ মৃত্যুদণ্ডাদেশ মাথায় নিয়ে দেশে ফিরলেন হানিফ পরিবহনের কর্ণধার মোহাম্মদ হানিফ।

শনিবার দুপুরে লন্ডন থেকে তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। পরে সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বিকাল সাড়ে চারটার দিকে তিনি বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে যান। এসময় হানিফের অনুসারীরা তাকে ফুলদিয়ে বরণ করেন। দীর্ঘ ১৫ বছর তিনি দেশে ফিরলেন।

জানা গেছে, ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। এই মামলায় মোট আসামি করা হয় ৫২ জনকে। তবে তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় যা গিয়ে ঠেকে ৪৯ জনে।

আলোচিত এই মামলার এজাহারনামীয় আসামি ছিলেন মোহাম্মদ হানিফ। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যাল মোহাম্মদ হানিফকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়। রায়ের আগে থেকেই বিদেশে পলাতক ছিলেন তিনি।

এদিকে গেল ১ ডিসেম্বর ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত সব আসামিকে খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।

রায়ে উচ্চ আদালত বলেন, যে চার্জশিটের ভিত্তিতে বিচারিক আদালত বিচার করেছিলেন তা আইনগতভাবে গ্রহণযোগ্য ছিল না। তাই বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করা হলো। আসামিদেরকে হাইকোর্টের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল শুনানির তারিখ ছিল ৬ মে। তবে ওইদিন জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি দীর্ঘ সময় ধরে চলার কারণে শুনানি আর হয়নি। ফের কার্যতালিকায় এলে শুনানি হবে বলে জানা যায়।

আইনজীবীরা বলছেন— মামলাটি এখনও পূর্ণনিষ্পত্তি না হওয়ায় তিনি এখনো ওই মামলার আসামি। তাই অনেকে বলছেন মৃত্যুদণ্ড মাথায় নিয়ে তিনি দেশে ফিরলেন। তবে সর্বোচ্চ আদালতে লিভ টু আপিল শুনানি হলে উচ্চ আদালতের রায় বহাল থাকবে বলে আশা আইনজীবীদের।

ইমিগ্রেশন পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইংল্যান্ড থেকে মোহাম্মদ হানিফ আজ দুপুরে ঢাকায় অবতরণ করেন। তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা থাকলেও সেটা ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা। তাই তাকে আটকানো হয়নি। তিনি বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে গেছেন।

তিনি কোথায় যাবেন জানতে চাওয়া হলেন একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘সেটা জানা আমাদের বিষয় ছিল না।’

অন্যদিকে ডিএমপির রমনা বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘শুনেছি উনার নামে ধানমন্ডি থানায় একটি পরোয়ান ছিল। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত বলতে হবে। তবে তার বিষয়ে নেগেটিভ কোনো বার্তায় নেই।’

অন্যদিকে দীর্ঘদিন পর দেশে ফেরা মোহাম্মদ হানিফকে বরণ করতে দুপুরে জড়ো হয় হানিফ পরিবহনের কর্মীরা। পরিবহনটির জেনারেল ম্যানেজার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা ৩৫টি বাসে শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শুভাকাঙ্ক্ষী স্যারকে বাংলাদেশে স্বাগত জানিয়েছি।’

Please Share This Post in Your Social Media

আপডেট: ০৬:২১:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫
৪১

মৃত্যুদণ্ড মাথায় নিয়ে দেশে ফিরলেন হানিফ পরিবহনের কর্ণধার!

আপডেট: ০৬:২১:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ মৃত্যুদণ্ডাদেশ মাথায় নিয়ে দেশে ফিরলেন হানিফ পরিবহনের কর্ণধার মোহাম্মদ হানিফ।

শনিবার দুপুরে লন্ডন থেকে তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। পরে সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বিকাল সাড়ে চারটার দিকে তিনি বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে যান। এসময় হানিফের অনুসারীরা তাকে ফুলদিয়ে বরণ করেন। দীর্ঘ ১৫ বছর তিনি দেশে ফিরলেন।

জানা গেছে, ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। এই মামলায় মোট আসামি করা হয় ৫২ জনকে। তবে তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় যা গিয়ে ঠেকে ৪৯ জনে।

আলোচিত এই মামলার এজাহারনামীয় আসামি ছিলেন মোহাম্মদ হানিফ। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যাল মোহাম্মদ হানিফকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়। রায়ের আগে থেকেই বিদেশে পলাতক ছিলেন তিনি।

এদিকে গেল ১ ডিসেম্বর ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত সব আসামিকে খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।

রায়ে উচ্চ আদালত বলেন, যে চার্জশিটের ভিত্তিতে বিচারিক আদালত বিচার করেছিলেন তা আইনগতভাবে গ্রহণযোগ্য ছিল না। তাই বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করা হলো। আসামিদেরকে হাইকোর্টের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল শুনানির তারিখ ছিল ৬ মে। তবে ওইদিন জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি দীর্ঘ সময় ধরে চলার কারণে শুনানি আর হয়নি। ফের কার্যতালিকায় এলে শুনানি হবে বলে জানা যায়।

আইনজীবীরা বলছেন— মামলাটি এখনও পূর্ণনিষ্পত্তি না হওয়ায় তিনি এখনো ওই মামলার আসামি। তাই অনেকে বলছেন মৃত্যুদণ্ড মাথায় নিয়ে তিনি দেশে ফিরলেন। তবে সর্বোচ্চ আদালতে লিভ টু আপিল শুনানি হলে উচ্চ আদালতের রায় বহাল থাকবে বলে আশা আইনজীবীদের।

ইমিগ্রেশন পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইংল্যান্ড থেকে মোহাম্মদ হানিফ আজ দুপুরে ঢাকায় অবতরণ করেন। তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা থাকলেও সেটা ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা। তাই তাকে আটকানো হয়নি। তিনি বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে গেছেন।

তিনি কোথায় যাবেন জানতে চাওয়া হলেন একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘সেটা জানা আমাদের বিষয় ছিল না।’

অন্যদিকে ডিএমপির রমনা বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘শুনেছি উনার নামে ধানমন্ডি থানায় একটি পরোয়ান ছিল। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত বলতে হবে। তবে তার বিষয়ে নেগেটিভ কোনো বার্তায় নেই।’

অন্যদিকে দীর্ঘদিন পর দেশে ফেরা মোহাম্মদ হানিফকে বরণ করতে দুপুরে জড়ো হয় হানিফ পরিবহনের কর্মীরা। পরিবহনটির জেনারেল ম্যানেজার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা ৩৫টি বাসে শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শুভাকাঙ্ক্ষী স্যারকে বাংলাদেশে স্বাগত জানিয়েছি।’