যশোর ডিবি’র অভিযানে প্রতারক চক্রের ৫ সদস্য আটক, মালামাল জব্দ
নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোর শহরতলীর রামনগর কলুপাড়ায় বাসা ভাড়া নিয়ে এক বাড়ির সদস্যদের খাবারের মাধ্যমে অচেতন করে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার লুটের ঘটনায় পাঁচ সদস্যকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে চুরি যাওয়া বেশ কিছু স্বর্ণালঙ্কারও।
আটককৃতরা হলেন, খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার উত্তর ডিহি গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে মামুন মিয়া (৪৫), পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার দেলবাডী গ্রামের মতিউর রহমান ব্যাপারীর ছেলে জাহারুল (৪৫), পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার কলারদনিয়া গ্রামের শহিদুল ইসলামের স্ত্রী মারুফা (৩৫), খুলনা জেলার শিরোমনি এলাকার যোগীপোল গ্রামের মৃত মোঃ লুতফর রহমান আকনের ছেলে মোঃ লিটন (৪৭), খুলনা জেলার দৌলতপুর উপজেলার পাবলা সাহাপাড়া এলাকার মৃত শচীন্দ্রনাথ কর্মকারের ছেলে বিপ্লব কর্মকার (৫০)।
ভুক্তভোগী শারমিন সুলতানা শান্তা কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করেন, গত ১৩ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে দুই পুরুষ ও দুই নারী বাসা ভাড়া নেওয়ার জন্য তার বাড়িতে আসে। তারা মাসিক ৩ হাজার টাকার চুক্তিতে বাসা ভাড়া নেওয়ার কথা জানায় এবং এক হাজার টাকা অগ্রিম দেয়। পরদিন পুরুষ দুইজন চলে গেলেও নারী দুইজন থেকে যায়।
১৭ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে ওই দুই নারীর ভাগ্নে পরিচয়ে এক ব্যক্তি খাবার নিয়ে আসে। পরে ওই নারীরা পরিবারের সদস্য ও পাশের ভাড়াটিয়াদের ডেকে এনে খাবার খাওয়ায়। খাবারে চেতনা নাশক মিশানো ছিল। সবাই অচেতন হয়ে পড়লে প্রতারক চক্র নগদ দুই লাখ টাকা ও আনুমানিক ১০ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার লুট করে পালিয়ে যায়।
পরে বিষয়টি বুঝতে পেরে ভুক্তভোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং যশোর কোতয়ালী থানায় অভিযোগ করা হয়।দ্রুত অপরাধীদের শনাক্ত ও মালামাল উদ্ধারে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) মাঠে নামে।
ডিবির একটি বিশেষ টিম ২৬ এপ্রিল অভিযান চালিয়ে পিরোজপুরের নাজিরপুর থেকে জাহারুল (৪৫) ও মারুফা (৩৫)কে আটক করে। তাদের স্বীকারোক্তিতে উদ্ধার করা হয় একটি স্বর্ণের রুলি, দুটি চুড়ি, একটি চেইন ও এক জোড়া দুল। পরে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী খুলনার ফুলতলা থেকে মামুন মিয়া (৪৫) এবং খুলনার দৌলতপুর এলাকা থেকে লিটন (৪৭) ও বিপ্লব কর্মকার (৫০)কে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় দুটি স্বর্ণের চেইন ও ১ আনা ১ রতি ওজনের গলিত স্বর্ণ।
যশোর ডিবির ওসি মনজুরুল হক ভূঁইয়া জানান, আটককৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য হিসেবে নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে একই কৌশলে প্রতারণা করে আসছিল। আটককৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।