কক্সবাজার, চট্টগ্রাম বিভাগ, জেলার খবর | তারিখঃ মে ১৪, ২০২৩ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 2466 বার
নিজস্ব প্রতিবেদক ও টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখা অতি প্রবল রূপ নিয়ে কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূলে আঘাত হেনেছে। রবিবার বেলা ২টার দিকে বৃষ্টি ও ১০০ কিলোমিটার গতির ঝড়ো বাতাসে শুরু হয় তাণ্ডব।
এসময় ঝড়ের তাণ্ডবে বেশকিছু বাড়ি-ঘরের উপরের অংশ উড়ে যেতে দেখা গেছে। এছাড়াও তীব্র বাতাস প্রতিমূহূর্তেই বেড়ে ঘূর্ণিঝড় মোখা শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেন্টমার্টিন ও শাহপরীর দ্বীপে ঘরবাড়ি ও গাছপালা ভেঙে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এতে মানুষের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক বিরাজ করছে।
রাজধানীর আগারগাঁও আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান বলেন, ‘সেন্টমার্টিনে আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আমিরুল হোসেন আমাদের জানিয়েছেন- সেখানে বৃষ্টি নেই। প্রচণ্ড গতিতে বাতাস বইছে। এতে তিনতলা ভবন পর্যন্ত কাঁপছে। বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে সেখানে ৮০ কিলোমিটাড় গতিতে বাতাস বয়েছে, এখন সর্বোচ্চ গতিবেগ ১০০ কিলোমিটার।
‘ঘূর্ণিঝড়ের মূল ঝুঁকিটা মিয়ানমানের ওপর দিয়ে যাবে’ উল্লেখ করে আজিজুর রহমান বলেন, ‘টেকনাফ, কক্সবাজারসহ বাংলাদেশের অঞ্চলগুলো ঝুঁকিমুক্ত হতে চলেছে।’
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আরও বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোখার পিক আওয়ার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা। এ সময়ে দ্রুত বেগে জলোচ্ছ্বাস প্রবাহিত হবে। তখন ঘণ্টায় ১২০-১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত ঝোড়ো হাওয়া হতে পারে।’
বিকাল নাগাদ ঘূর্ণিঝড় মোখা বাংলাদেশ অতিক্রম করে গেলেও এর প্রভাব আরও দুই-তিন ঘণ্টা পর্যন্ত থাকবে বলে জানান তিনি। বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি প্রভাব পরিলক্ষিত হবে টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন দ্বীপে।’
আর জলোচ্ছ্বাসের মাত্রা ৮ থেকে ১২ ফুট পর্যন্ত হলে টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে অস্থায়ীভাবে পানির জলাবদ্ধতা থাকবে বলে জানান আজিজুর রহমান।
সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা আব্দুল ঢাকাটাইমসকে বলেন, বাতাসের গতি তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে। মানুষের ঘর বাড়ির টিন, ছাউনি, কাট, বাঁশ ও দোকানপাট ভেঙে ভেঙে উড়ে যাচ্ছে। পুরো সেন্টমার্টিন ধোঁয়ায় অন্ধকার হয়ে পড়েছে। এমনকি বীচের ভেজা মাটি পর্যন্ত বাতাসে তুলে নিচ্ছে।
মুহাম্মদ আমিন নামে একজন বাসিন্দা ঢাকাটাইমসকে বলেন, বাতাসের তীব্রতা এতই বেশি যে সবকিছু উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ১৬০ কিলোমিটারের নেমেছে, যা ১৯৫ কিলোমিটার ছিল। আজ দুপুরে আবহাওয়ার ২০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ রবিবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ২৮৫কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল।