বিল্লাল হোসেন, ভালুকা (ময়মনসিংহ)প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের ভালুকায় ক্রয়কৃত জমির সমুদয় টাকা পরিশোধের পর দলিল রেজিস্ট্রির জন্য চাপ দেয়ার কারণে শ্বশুরবাড়ির লোকদের বিরুদ্ধে শ^সরোধে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার আউলাতলী গ্রামে। ১৮ ফেব্রুয়ারী শনিবার বিকেলে এ ঘটনায় পুলিশ সুপার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মো: আব্দুর রফিক (৪০) নামে এক ব্যক্তি।

অভিযোগে জানা যায়, ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউরা উপজেলার গোয়াতলা গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে মো: আব্দুর রফিক সাত বছর আগে ভালুকা উপজেলার আউলাতলী গ্রামের আব্দুল জলিল মিয়ার মেয়ে লতিফাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে তিনি স্ত্রীকে নিয়ে শ^শুরবাড়িতেই অবস্থান করছিলেন।

রফিক মিয়া জানান, বিয়ের কিছুদিন পর তার শশুর জমি বিক্রির প্রস্তাব করলে তিনি ৩৮ শতাংশ জমি ১৪ লাখ টাকা দিয়ে ক্রয় করেন এবং ৭ কিস্তিতে সমুদয় টাকা পরিশোধ করেন। গত ১৩ ফেব্রæয়ারী সকালে উক্ত জমি তার নামে রেজিস্ট্রি করে দেয়ার জন্য তাগিদ দিলে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে তার শ^শুর মো: আব্দুল জলিল (৫৫), স্ত্রী মোছা: লতিফা শ্যালক রুমান মিয়া (২৫), রহমান মিয়া (৩০), ৫। মামুন মিয়া (২৪) মোস্তফা (৪০) ও মো: জশুসহ (৪০) আরো অজ্ঞাতনামা ৪ জন আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার সময় তাকে বসতঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে গলায় রশি দিয়ে গাছে ঝুলানোর চেষ্টা করে। এসময় তার ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে। পরে আমি ৯৯৯ নম্বরে ফোন করিলে ভালুকা মডেল থানা পুলিশ তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে এবং লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এমনকি অভিযোগ দিয়ে চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। দুইদিন চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর হাসপাতাল থেকে ছুটি পাওয়ার পর তিনি প্রথমে বাড়িতে যান। পরে ভালুকা থানায় গেলে এসআই নজরুল ইসলাম তাকে বাজে বকাবাদ্ধ ও মারধরসহ অস্ত্রমামলায় চালান দেয়ার হুমকী দিয়ে থানা থেকে বের করে দেয়। বর্তমানে তিনি চরম নিরাপত্তাহীনাতায় ভূগছেন এবং নিরুপায় হয়ে সুবিচারা চেয়ে উল্লেখিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগকারী রফিকের স্ত্রী লতিফা জানান, রফিকের সাথে তার পাঁচ বছর আগে বিয়ে হয়েছিলো। তবে বিয়েতে তার পরিবারের সদস্যরা রাজি ছিলেন না। বিয়ের পর থেকে স্বামীর সাথে তেমন ভালো সম্পর্ক ছিলোনা। প্রায়ই মানসিক ও শারীরিক নির্যাতণ সইতে হয়েছে। তাকে হত্যাচেষ্টা অভিযোগটি সত্য নয়, বরং সেই আত্মহ্যার চেষ্টা করতে চাইলে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার সাথে সংসার করা সম্ভব না হওয়ায় তাকে কাজি অফিস ও আদালতের মাধ্যমে ডিভোর্স দেয়া হয়েছে।

অভিযুক্ত রুমান মিয়া তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, রফিক নিজেই আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলো। খোঁজ পেয়ে আমরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করি।

স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার (সাবেক) আব্দুর রউফ জানান, জামাই রফিক নিজেই আত্মহত্যার চেষ্টা করতে চাইলে তার শ^শুর বাড়ির লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। ওর স্বভাব চরিত্র আগে থেকেই খারাপ এবং ওই বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে বলে তিনি জানান।

ভালুকা থানার উপপরিদর্শক এসআই নজরুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ৯৯৯ নম্বরে ফোন পাওয়ার পর থানা পুলিশ রফিককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এসময় রফিকের স্ত্রীসহ তার শ^শুরবাড়ির বেশ কছেশ সাথে ছিলো। পরে তাকে চিকৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করতে বলা হয়।