ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ নাছরিন আক্তার নামে এক নারী হিজড়াকে বিয়ের ফাঁদে ফেলে ১৫ লাখ টাকা আত্মসাত মামলার আসামীরা গ্রেফতার হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

আসামীরা হলেন, শৈলকুপার বিজুলিয়া গ্রামের লুসানুর রহমান লুসান তার পিতা খাসিয়ার রহমান ও মা দিপিকা বেগম। তাদের বিরুদ্ধে খুলনা (মামলা নং ৩৪৮/২২) ও মানিকগঞ্জ আদালতে (২৪/২২) পৃথক দুইটি মামলা চলমান রয়েছে। এই দুই মামলায় ২টি ওয়ারেন্টে থাকলেও পুলিশ গ্রেফতার করতে পারছে না। এ নিয়ে মামলার বাদী নাছরিন আক্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে পুলিশের কাছে ন্যায় বিচার দাবী করেছেন। শোনা যাচ্ছে গ্রেফতারী পরোয়ানা মাথায় নিয়ে লুসান বিদেশে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছেন।

মামলা সুত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার বিজুলিয়া গ্রামের লুসানুর রহমান লুসান নামে এক যুবক বিয়ের অভিনয় করে নাছরিন আক্তার কাছ থেকে বিভিন্ন সময় ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এরপর থেকে তিনি বিয়ে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে হিজড়া নাছরিন ২০২১ সালে মামলা করলে লুসান ও তার পরিবার স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে ঘরে তুলে নেন। তারপর আবার তাকে তাড়িয়ে দিলে খুলনা ও মানিকগঞ্জের আদালতে পৃথক দুইটি মামলা করেন।

মামলা সুত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে নারী হিজড়া নাছরিনের সঙ্গে পরিচয় হয় শৈলকুপা উপজেলার বিজুলিয়া গ্রামের খাসিয়ার রহমানের ছেলে লুসানের। লুসান তখন তেজগাঁও পলিটেকনিক্যাল কলেজের ছাত্র ছিল। ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারী নোটারি পাবলিকে ৫ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য্যে তাদের বিয়ে হয়। এজাহারে বাদীর ভাষ্যমতে বিয়ের আগে ও পরে স্ট্যাম্পে চুক্তিপত্রের মাধ্যমে লুসান ব্যবসার কথা বলে ১৫ লাখ টাকা নিয়েছে। পরে আরো ৪ লাখসহ সর্বমোট ১৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। টাকা নেওয়ার পর লুসান স্ত্রী নাসরিনকে এড়িয়ে চলে। টাকার জন্য ঘুরতে থাকলে লুসান বিভিন্ন সময় হুমকি ধামকি ও সে কোন টাকা নেয়নি বলে অস্বীকার করতে থাকে। নিরুপায় হয়ে নাছরিন স্বামী লুসানের বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জের আদালতে ৪২০, ৪০৬ ও ১০৯ ধারায় প্রথম মামলা করেন। যার মামলা নং ছিল সিআর-১৪৭। মিথ্যা প্রলোভন ও আশ^াস দিয়ে এই মামলা লুসান মিটিয়ে ফেলতে সক্ষম হন। শৈলকুপার মনোহরপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নু জানান, আমি যখন চেয়ারম্যান ছিলাম তখন লুসানের সঙ্গে নারী হিজড়া নাছরিনের বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের সুত্রে বিজুলিয়া গ্রামে দীর্ঘদিন সংসার করেছে নাছরিন। এ বিষয়ে নাছরিন ও তার পরিবার অনেকবার আমার কাছে বিচার চাইতে এসেছিল। তখন আমি তাদেরকে আমি আইনী সহায়তা গ্রহনের পরামর্শ দিয়েছিলাম। অভিযুক্ত লুসানুর রহমান লুসাননের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। ওয়ারেন্টের বিষয় নিয়ে শৈলকুপা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, আদালতের ওয়ারেন্ট আসলে অবশ্যই আসামী গ্রেফতার করা হবে। পালিয়ে যাবার কোন সুযোগ নেই। তিনি আসামীদের নাম ঠিকানা দিয়ে সহায়তা করার পরামর্শ দেন। এদিকে হিজড়া নাছরিন বুধবার বিকালে জানান, লুসানকে কেউ ধরিয়ে দিতে পারলে তাকে দশ হাজার টাকার পুরস্কার দেয়া হবে।