ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহের মহেশপুর ৫৮ বিজিবি পৃথক অভিযান চালিয়ে সাড়ে ৮ কোটি টাকা মূল্যের ১১ কেজি ৭৩৮ গ্রাম ওজনের বার উদ্ধার করেছে।

গত মঙ্গলবার রাতে মহেশপুর উপজেলার গোপালপুর ও চুয়াডাঙ্গার আকন্দবাড়িয়া এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে এই বিপুল পরিমাণ স্বর্ণের বার উদ্ধার করে বিজিবি। এসময় জীবননগর উপজেলার নতুন পাড়া গ্রামের ত তবিবুর রহমানের ছেলে শুকুর আলীকে আটক করে বিজিবি।

ঝিনাইদাহের মহেশপুর ৫৮ বিজিবির সহকারী পরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলাম মঙ্গলবার রাত দশটার দিকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানান। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি উল্লেখ করেন, মহেশপুর উপজেলার গোপালপুর মাঠের মধ্যে স্বর্ণের বার পুঁতে রাখা আছে এমন খবরের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালিয়ে মাটির নিচ থেকে ৮৫টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করে। এ সময় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। উদ্ধারকিত স্বর্ণের মূল্য ৮ কোটি চার লাখ ৫৮ হাজার টাকা। অন্যদিকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে আকন্দবাড়িয়া যাওয়ার সময় পাচারকারী শুকুর আলীকে আটক করা হয়। এ সময় তার দেহ তল্লাশি করে জুতার মধ্যে রাখা ৫০ লাখ ৯৯ হাজার টাকা মূল্যের ছয়টি সোনার বার জব্দ করে বিজিবি। এ ব্যাপারে মহেশপুর ও জীবননগর থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছিলো।

জুয়া ও মাদক ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে যুবলীগ নেতা আরিফ হোসেন (৪৮) নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে আহত হন অন্তত ১০জন। এদিকে সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে এ সময় আহত হন কালীগঞ্জ পৌর কাউন্সিলর মেহেদী হাসান সজল। মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে কালীগঞ্জ পৌরসভাধীন কাশিপুর বেদে পল্লীতে এ সংঘর্ষের ও ঘটনা ঘটে। যুবলীগের সাবেক ওয়ার্ড সম্পাদক নিহত আরিফ কাশিপুর গ্রামের মৃত ইব্রহিম লস্কারের ছেলে। কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম বুধবার সকালে জানান, দীর্ঘদিন ধরে কাশিপুর বেদে পল্লীতে জুয়া ও মাদক ব্যবসা চলে আসছে। এ নিয়ে সাপুড়িয়া মনিরুল ইসলাম ও রাসেলের মধ্যে দ্বন্দ চলে আসছিল। মাদক ও জুয়ার বিরুদ্ধে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নিয়ে বেদে পল্লীতে মোটিভেশন সভা করেন। তারপরও সেখানে জুয়া ও মাদক বন্ধ করা যায়নি। তিনি বলেন, নিহত আরিফ জুয়া ও মাদক ব্যবসায় টাকা লগ্নিকারী হিসেবে বেদেপল্লী নিয়ন্ত্রন করতেন। তিনি আগের কমিটিতে যুবলীগের পদে ছিলেন, কিন্তু এখন নেই।

এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার রাতে জুয়া খেলা ও নারীঘটিত বিষয়কে কেন্দ্র করে মনিরুল ইসলাম ও রাসেল সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হলে যুবলীগ নেতা আরিফ হোসেন, বেদে পল্লীর মালা বেগম, শাবনুর খাতুন, নীরব হোসেন ও পাশ^বর্তী গ্রামের আব্দুল লতিফসহ অন্তত ১০ ব্যক্তি আহত হন। এসময় সাপুড়িয়া রাসেলের সমর্থকরা মনিরুল সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। সংবাদ পেয়ে রাত ৮টার দিকে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর মেহেদী হাসান সজল, উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি খলিলুর রহমান ও কালীগঞ্জ থানার এসআই আশিকুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করলে তাদের উপর সাপুড়িয়া রাসেল গ্রুপের লোকজন ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। আহতদের মধ্যে আরিফ হোসেন, বেদে পল্লীর মালা বেগম, পাশ্ববর্তী গ্রামের আব্দুল লতিফকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হয়। মঙ্গলবার মধ্যরাতে আরিফকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে ফরিদপুর পৌছালে তিনি মারা যান।

অভিযোগ উঠেছে গোটা কালীগঞ্জ উপজেলায় মাদকের বিষয়ে স্থানীয় পুলিশ নমনীয়। ৩/৪ দিন আগে কালীগঞ্জ থানার এসআই জাকারিয়া সেখানে অভিযান চালাতে গিয়ে প্রহৃত হলেও দায়ীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। কালীগঞ্জ থানার ওসি আব্দুর রহিম মোল্লা মাদক ও জুয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, বেদে পল্লীতে এক নারী নির্যাতনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আরিফ নিহত হয়েছে। তিনি বলেন এ ঘটনায় এখনো কোন মামলা হয়নি। এলাকায় পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে।