খুলনা বিভাগ, জেলার খবর, সাতক্ষীরা | তারিখঃ নভেম্বর ৬, ২০২২ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 5606 বার
এস এম মহিদার রহমান, সাতক্ষীরা ঃ সাতক্ষীরা হতে প্রকাশিত সাপ্তাহিক মুক্তস্বাধীন পত্রিকার সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান পেশাদার সাংবাদিক আবুল কালাম মিথ্যা মামলা হতে অব্যহিত পেলেন এবং মিথ্যা মামলা দায়ের কারী মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আমলী আদালত নং ১ সাতক্ষীরায় ৫০ লক্ষ টাকার মানহানী মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ১২২১/২২ বিজ্ঞ আদালত সিআইডি পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জ্বলের নানাবিধ অনিয়ম এবং দুর্নীতির বিষয়ে বাদীর প্রকাশিত মুক্তস্বাধীন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ পেলে মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জ্বল গত ২৫/১১/২০ তারিখে বাদী হয়ে মুক্তস্বাধীন সম্পাদক আবুল কালাম কে আসামী করে সাতক্ষীরা সদর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন জি আর নং ৮৭২/২০ মামলা দায়ের করলে গত ৬/৪/২২ তারিখে বিজ্ঞ সাইবার ট্রাইব্যুনাল খুলনার বিজ্ঞ আদালত মামলার দায় হতে মুক্তস্বাধীন সম্পাদক আবুল কালামকে অব্যাহতির আদেশ প্রদান করে।
আবুল কালাম জানান, পত্র পত্রিকা মুক্ত মতামত প্রকাশের বাহন বিধায় তথ্য বহুল, বস্তুনিষ্ঠ যে কোন সত্য ঘটনা প্রকাশ করাই সংবাদ পত্রের দায়িত্ব আর আমি সেই দায়িত্ব পালনে সতর্ক থেকেছি। যে কারনে ১২২১/২২ মামলার আসামী ঠিকানা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জ্বল, পিতা মৃত লুৎফর রহমান স্থায়ী ঠিকানা মুনজিতপুর, পোস্ট+থানা ও জেলা সাতক্ষীরা, বর্তমান ঠিকানা গ্রাম দক্ষিন কাটিয়া (সরকার পাড়া) সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাকের ভাড়াটিয়া, পো: থানা ও জেলা সাতক্ষীরা আমার নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। এবং বিজ্ঞ আদালতে প্রমান হয়েছে মামলাটি ছিল মিথ্যা। বিধায় সম্মান হানী, দায়িত্ববোধ, সত্য প্রমান আত্মসম্মান, বিবেক, বিবেচনা সর্বপরি মিথ্যা মামলার পরিনতি,সময় এবং বাস্তবতার নিরিখে কতটুকু অর্থনৈতিক তার প্রতিকার ও প্রমান করনে আমি বিজ্ঞ আদালতের স্মরণাপন্ন হয়েছি। মামলার বাদী আবুল কালাম বর্নিত মামলা সূত্রে জানা যায়, আসামী মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জ্বল সাতক্ষীরা আহছানিয়া মিশন মসজিদ এর অবৈধ কমিটির সাধারন সম্পাদক। উক্ত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানটি ৪২ শতক জায়গা নিয়ে সাতক্ষীরা শহরের প্রাণকেন্দ্র শহিদ নাজমুল স্বরনি মুনজিতপুরে অবস্থিত। এখানে মার্কেট ও কমপ্লেক্স এর নামে আসামী কয়েক বছর ধরে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে। বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি, দেশি, বিদেশী সংস্থা, ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অংকের অনুদান, মার্কেটের দোকান বরাদ্ধের লক্ষ লক্ষ টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে আসামী কর্তৃক আত্মসাৎ করায় স্থানীয় জনগন মুসল্লী সহ কমিটির সদস্যরা আয় ব্যয়ের হিসাব চায়। কিন্তু আসামী হিসাব দেয় না।
আসামীর বিরুদ্ধে ইং ২০ নভেম্বর ২০২০ তারিখে প্রায় পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানটির সামনে মানববন্ধন করে। এবং দুর্নীতিবাজ, অর্থ আত্মসাৎকারী কে ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান হতে অপসারনের দাবী জানান। উক্ত সংবাদ বিভিন্ন পত্র পত্রিকার পাশাপাশি ৭ নভেম্বর ২০২০ ও ৯ নভেম্বরে বাদীর সম্পাদনায় প্রকাশিত মুক্তস্বাধীন পত্রিকায় প্রকাশ পায়। আসামী মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জ্বল মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান না হয়েও সে পরিচয় দিতে থাকলে মুক্তস্বাধীন পত্রিকা অনুসন্ধানী সংবাদ প্রকাশ করে প্রমান করে যে সে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান নয় তার দাদা লুটতরাজ করতে গিয়ে হত্যকান্ডের শিকার হয়। তার দাদা কুলিয়ার শহিদ সরদার মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করায় বাদী তাকে দুই বার উকিল নোটিশ প্রদান করে। মুক্তস্বাধীন সম্পাদক আবুল কালামের অব্যাহতির আদেশ নিয়ে যা বললেন বিজ্ঞ আদালত। বিচারিক আদালতে বিজ্ঞ সাইবার ট্রাইব্যুনাল খুলনার বিচারক মামলার সমুদয় নথি পর্যালোচনা করে আসামিদের বিরুদ্ধে এজাহারকারীর এজাহার বর্ণিত এবং তদন্তকারী কর্মকর্তার অভিযোগপত্রের অভিযোগ অনুযায়ী বাদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের যথেষ্ট উপাদান না থাকায় বিজ্ঞ সাইবার ট্রাইব্যুনাল খুলনার বিজ্ঞ বিচারক গত ইং-০৬-০৪-২০২২ তারিখে উক্ত মামলার আসামী অত্র মামলার বাদীকে দায় হতে অব্যাহতির আদেশ প্রদান করেন।
বিজ্ঞ বিচারক আদেশে উল্লেখ করেন, পুলিশ (তদন্ত কর্মকর্তা) তথ্যদাতা কোন লুট বা অসঙ্গতি, দুর্নীতি ইত্যাদি এবং অভিযুক্ত অন্য কোন কাজ করেছে কিনা তা খুঁজে বের করতে হবে। তদন্তকারী কর্মকর্তা সে সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তদন্ত করেননি। ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্ট ২০১৮-এর ওয়ার্ড ডিফেনেশন দ-বিধির ৪৯৯ ধারার সাথে সম্পর্কিত। আইনে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো সত্য ঘটনা প্রকাশ করাকে মানহানিকর বলে গণ্য করা হবে না। পুলিশ রিপোর্ট থেকে যেমন ধারণা করা যায় না যে তথ্যদাতার বিরুদ্ধে প্রকাশিত তথ্য সত্য নয়, তেমনি এটাও অনুমান করা যায় না যে প্রকাশিত তথ্য তথ্যদাতার বিরুদ্ধে কোনো মানহানি করেছে। এই মামলার পরবর্তী কার্যধারার জন্য শুধুমাত্র আদালতের ইচ্ছা এবং মামলার চাপের কারণ হবে। উপরোক্ত কারণ এবং ন্যায়বিচারের শেষের জন্য আদালত অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের কোন ভিত্তি এবং নির্দেশিকা খুঁজে পাইনি।