নিজস্ব প্রতিবেদক : বর্তমান সরকারকে হটানো ছাড়া আর কোনো গতি নেই। এই সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে পরাজিত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি নেতারা।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শনিবার খুলনায় বিভাগীয় গণসমাবেশে বিএনপি নেতারা এসব কথা বলেন। নগরীর সোনালী ব্যাংক চত্বরে এই গণসমাবেশের আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে এখন দেশে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ১০টি আসনেও জিততে পারবে না বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার বেলা ২টায় খুলনার সোনালী ব্যাংক চত্বরে বিভাগীয় গণসমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপির সামনে কোনো পথ খোলা নেই। আন্দোলন, আন্দোলন, আন্দোলন। একনায়ক, কর্তৃত্ববাদী সরকারকে হটিয়ে জনগণের সরকার আনতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের চিহ্ন থাকবে না, ১০টি আসনও পাবে না।’

বিএনপির চলমান আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় শনিবার ছিল খুলনা বিভাগীয় মহাসমাবেশ। খুলনার সমাবেশকে কেন্দ্র করে শুক্রবার থেকেই খুলনার সঙ্গে সারা দেশ বিচ্ছিন্ন হয় পরিবহনে। কিন্তু তারপরও সমাবেশে ছিল মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি।

গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়ে, নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে, গ্রেপ্তার করেও খুলনায় সমাবেশে বিএনপিকে আওয়ামী লীগ একটুও রুখতে পারেনি বলেও এ সময় দাবি করেন ফখরুল। বিএনপি নতুন সাহসে বলিয়ান হয়ে খুলনার গণসমাবেশকে জনসমুদ্রে পরিণত করেছে বলে বক্তব্য দিয়েছেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ভেবেছিল খালেদা জিয়াকে জেলে দিলে বিএনপি শেষ হয়ে যাবে। তবে না, বিএনপি নতুন সাহসে বলিয়ান হয়ে উঠেছে। এই জনসমুদ্র তারই প্রমাণ।’

নির্বাচন কমিশন গঠনেরও সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল। বর্তমান নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের হাতের পুতুল দাবি করেন তিনি। এমনকি এই নির্বাচন কমিশনকে কেউ পাত্তা দেয় না বলেও জানান। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে কমিশন কার তৈরি করা, হাসিনার তৈরি করা। ভালো দেখানোর জন্য কিছু করছে, আরে তাকে তো ডিসি-এসপিরাই মানতে চায় না। তারা আর কী নির্চান করবেন?’

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী বলেছেন, খুলনায় বিএনপির সমাবেশে বাধা দিয়েও জনস্রোত ঠেকাতে পারেনি। সমাবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে সরকারের পেটুয়া বাহিনী ও পুলিশ। কিন্তু লাভ হয়নি। খুলনা বিভাগের প্রান্তরে প্রান্তরে জনস্রোত সৃষ্টি হয়েছে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘এখানে জনসমুদ্র হয়েছে। ‘তারা আমাদের পদ্মার এপারে কোনো সমাবেশ করতে দেবে না বলেছিল। তারা (আওয়ামী লীগ) একটু এসে দেখুক, জনসমুদ্র দেখে লজ্জা পাবে।’

বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যার প্রতিশোধ নেওয়া হবে বলে জানিয়ে বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগকে কখনো ক্ষমা করব না। কয়েক দিনের মধ্যে তারা আমাদের পাঁচজনকে হত্যা করেছে। এই প্রতিশোধ আমরা নেব এবং অচিরেই আওয়ামী লীগকে উৎখাত করে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে।’

গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ও দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শফিকুল আলম।