ডেস্ক রিপোর্ট : সিনহা হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামি প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে দায়ের করা দুর্নীতি মামলার রায়ে প্রদীপকে ২০ বছর ও তার স্ত্রী চুমকীকে ২১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তাদের সম্পতি বাজেয়াপ্ত করার কথা বলা হয়েছে। আজ বুধবার সকালে সোয়া ১১টায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আবদুল মজিদের আদালত এই রায় দেন।

দুদকের এ মামলার আইনজীবী চট্টগ্রাম আদালতের পিপি মাহমুদুল হক জানান, আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন।

সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হয় গত ১৮ জুলাই। এদিন চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আবদুল মজিদ যুক্তি তর্ক শেষে ২৭ জুলাই রায়ের তারিখ নির্ধারণ করেন।

প্রদীপ কুমার দাশ চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের উত্তর সারোয়াতলী গ্রামের মৃত হরেন্দ্র লাল দাশের ছেলে। নগরীর কোতোয়ালি থানার পাথরঘাটা আর সি চার্চ রোডে তাদের নিজস্ব একটি আবাসিক ভবন আছে। সেই ভবনে তার স্ত্রী চুমকি ও সন্তানদের নিয়ে তিনি বসবাস করতেন। ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এরপর টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

গত ১৫ ডিসেম্বর প্রদীপ ও চুমকির বিরুদ্ধে দুদকের মামলায় অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। প্রদীপ কারাগারে থাকলেও তার স্ত্রী চুমকি তখন পলাতক ছিলেন। গত ২৩ মে চুমকি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।

এর আগে ২০২০ সালের ২৩ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে চার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। দুদকের দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানাধীন পাথরঘাটায় ৬ তলা বাড়ি, ষোলশহরে বাড়ি, ৪৫ ভরি সোনা, একটি গাড়ি, একটি মাইক্রোবাস, ব্যাংক হিসাব এবং কক্সবাজারের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে চুমকির নামে।

তাদের ৪ কোটি ৮০ লাখ ৬৪ হাজার ৬৫১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বিপরীতে বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় দুই কোটি ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার ২৩৪ টাকা। দুই কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের সত্যতা পেয়েছে দুদক। এ ছাড়া চুমকি নিজেকে মৎস্য ব্যবসায়ী দাবি করলেও এ ব্যবসার কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। এদিকে ২০২১ সালের ২৬ জুলাই প্রদীপ ও স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুদক। মামলায় ২৯ সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জন সাক্ষ্য দেন।