ওবায়দুল ইসলাম গাজীপুর থেকে : গাজীপুরের শ্রীপুরে দ্বিতীয় স্ত্রীর হাত-পা বেঁধে, মুখে কাপড় গুঁজে ও মোবাইলে ভিডিও চালু করে রেখে তার চোখের সামনেই আত্মহত্যা করেছেন এক যুবক।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীপুর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) এনায়েত কবির। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে শ্রীপুর পৌরসভার মসজিদ মোড় এলাকার আফাজ উদ্দিনের ভাড়া বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে।

২২ বছরের হৃদয় মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর থানার পারিঘাটা গ্রামের পিঞ্জর মিয়া শাহিনের ছেলে।

হৃদয় ছোটবেলা থেকেই শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিম খণ্ড গ্রামের নুরুল চেয়ারম্যানের বাড়ির এলাকায় তার নানার বাড়িতে থাকতেন। স্থানীয় একটি বিপণি বিতানে তার কাপড়ের ব্যবসা আছে। তার প্রথম স্ত্রীর নাম মোহনা। মোহনার সাথে ৫ বছর পূর্বে তাদের বিয়ে হয়।

দ্বিতীয় স্ত্রী, স্বজন ও স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, তিন-চার মাস আগে গোপনে মোছা. আর্জিনাকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন হৃদয়। বিয়ের পর তিনি মসজিদ মোড় এলাকার আফাজ উদ্দিনের বহুতল ভবনের নীচ তলায় একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। আর্জিনাও তার বাবার বাড়ি থেকে সেখানে যাওয়া আসা করতেন।

মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আর্জিনা ওই বাসায় আসলে হৃদয়ও আসেন। কিছু সময় পর তিনি দোকানে গিয়ে আধ ঘণ্টা পর আবার ফিরে আসেন।

তখন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে হাসিঠাট্টার এক পর্যায়ে হৃদয় প্রথমে আর্জিনার দুই হাত খাটের সঙ্গে বেঁধে ফেলেন। পরে দুই পা বেঁধে, মুখে কাপড় গুঁজে দেন।

এরপর আত্মহত্যার জন্য ঘরের ফ্যানের হুকে ওড়না লাগাতে থাকেন। এ সময় আর্জিনার মুখে গুঁজে দেওয়া কাপড় বেরিয়ে যাওয়ায় তিনি চিৎকার শুরু করলে তার মুখে ফের গেঞ্জি গুঁজে দেয় হৃদয়। এরপর স্ত্রীর সামনেই ফ্যানের হুকে ঝুলানো ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়েন তিনি।

কিছু সময় পর আর্জিনা মুখের গেঞ্জি সরাতে পেরে চিৎকার দিলে স্থানীয়রা ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে হৃদয়ের ঝুলন্ত মরদেহ এবং আর্জিনাকে খাটে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দেখতে পায়।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হৃদয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে।

হৃদয়ের নানা এমরান হোসেন বলেন, “হৃদয়ের দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না।”

দ্বিতীয় স্ত্রী মোছা. আর্জিনা বলেন, “আমি জানতাম হৃদয়ের আগের একটা স্ত্রী আছে। তবুও সে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে আমি তা মেনে নিয়ে বিয়ে করি।”

কিন্তু কেন, কী কারণে হৃদয় আত্মহত্যা করলো সে বিষয়ে তিনি বা হৃদয়ের নানা কিছুই জানাতে পারেননি।

এসআই মো. এনায়েত কবির বলেন, হৃদয়ের মরদেহ ও তার মোবাইলে ধারণ করা ঘটনার ভিডিও ফুটেজ উদ্ধার করা হয়েছে। তার স্বজনদের আবেদনের প্রেক্ষিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।