ডেস্ক রিপোর্ট : ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীর প্রায় সব প্রবেশমুখ ও গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থানে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, উত্তরা ও গাবতলী এলাকায় সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে পুলিশের তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে। কাউকে সন্দেহ হলেই তল্লাশি করা হচ্ছে। গাড়ি থামিয়েও চলছে তল্লাশি। তবে পুলিশি তল্লাশির নামে কিছু ক্ষেত্রে হয়রানি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিরীহ অনেককেও আটক করা হচ্ছে, ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্যই জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল পৌনে ৯টার দিকে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় গিয়ে দেখা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকায় প্রবেশের অংশে (দক্ষিণ অংশ) কামাল ম্যানশনের সামনে বিপুল সংখ্যক পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। পুলিশের একটি দল পথচারী ও রিকশা আরোহীদের তল্লাশি করছিল। মাঝে মাঝে গাড়ি থামাতেও দেখা যায়। যাত্রাবাড়ীর শহীদ ফারুক রোডের একটি মার্কেটের বিক্রয়কর্মী আনোয়ার হোসেন থাকেন কুতুবখালীতে। তিনি সেখান থেকে হেঁটেই প্রতিদিন কর্মস্থলে যান। কুতুবখালী থেকে হেঁটে আড়ৎ পেরিয়ে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তার কাছে আসতেই পুলিশের তল্লাশির মুখে পড়েন। তিনি বলেন, পুলিশ রাস্তায় থামিয়ে জানতে চাইলো কোথায় যাবো। পুরো শরীর সার্চ করলো। তারপর ছেড়ে দিল। তোফাজ্জল আখন্দ রামপুরা এলাকায় লাইটিংয়ের ব্যবসা করেন। বিজয়নগরে হোটেল একাত্তরের পেছনে একটি অফিসে বিলের জন্য এসেছিলেন। গতকাল বুধবার পুলিশের অভিযানে তিনি আটক হন। তাকে রমনা থানায় নেওয়া হয়। এখনো এই ব্যবসায়ী ছাড়া পাননি বলে তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন। রাজধানীর গাবতলীতেও ঢাকায় প্রবেশমুখে আমিনবাজার ব্রিজের ওপর পুলিশের বিশেষ চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। সেখানে ১৫ জন পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছেন। ঢাকার বাইরে থেকে আসা বাস, মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসসহ অন্যান্য পরিবহনও তল্লাশি করে ছাড়া হচ্ছে। তল্লাশি সময় পরিবহনের কাগজপত্রও যাচাই-বাছাই করতে দেখা গেছে। এদিন সকাল থেকে সায়েদাবাদ, মতিঝিল, কাকরাইলসহ রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশকে সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, রাজধানীতে নিয়মিত চেকপোস্ট বসছে। কারণ, ১ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশেষ অভিযান চলছে। ১৪ ও ১৬ ডিসেম্বর এবং ২৫ ডিসেম্বরের মতো তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দিন সামনে। এর আগে যেন কোনো ধরনের নাশকতার ঘটনা না ঘটে সেজন্য আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে চেকপোস্ট বসিয়েছি। তবে তল্লাশি চৌকিগুলোতে কোনো সাধারণ ব্যক্তি বা যাত্রীকে আটক, ঢাকায় আসা বন্ধ করে দেওয়া কিংবা হয়রানি করা হচ্ছে না বলেও দাবি করেন তিনি।