খুলনা বিভাগ, জেলার খবর, টপ নিউজ, যশোর | তারিখঃ জুন ২৯, ২০২২ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 6202 বার
সানজিদা আক্তার সান্তনা, যশোর অফিস : যশোর রেলওয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে ভারত ফেরত যাত্রীকে আটকে রেখে হয়রানি, মালামাল লুট ও চাঁদাবাজির ঘটনায় জড়িত দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় এই মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার আগেই অভিযুক্ত দুই কনস্টেবল আবু বক্কার ও আতিকুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
গত ৫ জুন রাতে যশোর রেলওয়ে স্টেশনে ওই হয়রানি, লুটপাট ও চাঁদাবাজির শিকার হন সিরাজগঞ্জের সালঙ্গা থানার ধুপিল মেহমানশাহী গ্রামের বাসিন্দা ও ঢাকা তেজগাঁও কলেজের মাস্টার্সের ছাত্র টি. এম. রাশিদুল হাসান। ঘটনার পরদিন ৬ জুন তিনি জিআরপি পুলিশ হেডকোয়ার্টারে অভিযোগ করেন।
এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৮ জুন দুপুরে খুলনা রেলওয়ে জেলার কুষ্টিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মজনুর রহমান অভিযোগ তদন্তে যশোর রেলওয়ে স্টেশনে আসেন। ঘটনার শিকার রাশিদুল হাসানও সিরাজগঞ্জ থেকে যশোরে আসেন। তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার মজনুর রহমান ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন। এ সময় তিনি ভুক্তভোগীসহ স্টেশন মাস্টার আয়নাল হাসান, রেলওয়ে কর্মকর্তা, কর্মচারী, জিআরপি ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই শহিদুল ইসলাম, ফাঁড়ির কনস্টেবলগণ এবং স্টেশনের বিভিন্ন দোকানের দোকানিদের সাথে সাথে বলেন। একইসাথে অভিযুক্ত কনস্টেবলদেরও জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তদন্ত শেষে এক সপ্তাহ পর রেলওয়ে জেলার কুষ্টিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মজনুর রহমান তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। তদন্তে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে বলে তিনি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন। এর প্রেক্ষিতে ঘটনার সাথে জড়িত কনস্টেবল আবু বক্কার ও আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর আগেই তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে খুলনা রেলওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার মো. রবিউল হাসান জানিয়েছেন, যশোর স্টেশনে যাত্রী হয়রানি, চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়ার পর কুষ্টিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মজনুর রহমান তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত দুই পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজ্জু করা হয়েছে। এর আগেই তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এখন মামলা তদন্তের জন্য তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগের আবেদন করা হয়েছে।
এর আগে ঘটনার শিকার যাত্রী টি. এম. রাশিদুল হাসান অভিযোগে জানান, গত ৫ জুন তিনি ভারত থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করেন। এরপর বাস যোগে রাত ৮টার দিকে যশোর স্টেশনে আসেন সুন্দরবন এক্সপ্রেসে করে বাড়ি (সিরাজগঞ্জ) যাওয়ার জন্য। স্টেশনে অবস্থানকালে রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) কনস্টেবল আবু বক্কার ও আতিকুর রহমানসহ সাদাপোশাকধারী আরও ৩ জন তার ব্যাগ তল্লাশির নামে ফাঁড়িতে নিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, সেখানে তাকে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রেখে ভারত থেকে আনা পোশাক, প্রাসধনীসহ প্রায় ১৫ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে নেয়। পরে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিকাশের মাধ্যমে ৫ হাজার টাকা নিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে ছেড়ে দেয়। রাত দেড়টার দিকে তাকে ছেড়ে দেয়ার পর বাধ্য হয়ে প্রাইভেটকার ভাড়া করে রাশিদুল বাড়িতে ফেরেন। রাশিদুল জানান, রেলওয়ে পুলিশের এই মালামাল লুট, চাঁদাবাজির বিষয়টি তিনি ৯৯৯ এ ফোন করে পরে রেলওয়ে পুলিশের হেডকোয়ার্টারে এসপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) বরাবর অভিযোগ করেন।