আইন ও আদালত | তারিখঃ জুন ২৩, ২০২২ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 5867 বার
নিজস্ব প্রতিবেদক : ইরাকে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশি, পাকিস্তানি ও ইরাকি সদস্যদের সমন্নয়ে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অপহরণ করে অজ্ঞাত জায়গায় আটক রাখে। পরে দেশে থাকা তাদের পরিবারের কাছ মুক্তিপণ আদায় করে আসছে বলে অভিযোগ পায় ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ (সিটিটিসি)।
গতকাল বুধবার (২২ জুন) মধ্যপ্রাচ্যের ইরাকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় চক্রের দুই সদস্যকে ঢাকার মতিঝিল ও নারায়ণগঞ্জ জালকুড়ি বাজার থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিটিটিসি। এছাড়া অপহরণের শিকার সাতজনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মিন্টু রোড়ের ডিবি কার্যলয়ে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) কার্যালয়ের নিজ কক্ষে গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির উপ-পুলিশ কমিশনার তোহিদুল ইসলাম।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ইমরান হোসেনকে ঢাকার মতিঝিল থেকে এবং টাকা সংগ্রহের বিকাশ এজেন্ট সহযোগী আলমগীর হোসনকে নারায়ণগঞ্জ জালকুড়ি বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে জমাকৃত প্রায় সাত লাখ টাকার জমা রশিদ ও দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
তোহিদুল ইসলাম বলেন, মুক্তিপণ আদায়ে চক্রটি প্রবাসীদের অমানবিক নির্যাতন করে, এমনকি মৃত্যু ঘটিয়ে আসছে। ইমু, ফোন কল, হোয়াটসঅ্যাপ ইত্যাদির মাধ্যমে দেশে অবস্থিত পরিবারের কাছে অপহৃত ব্যাক্তির নির্যাতনের ছবি, ভিডিও ইত্যাদি পাঠিয়ে মৃত্যু ঘটানোর ভয়ভীতি দেখায় এবং মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস (নগদ, বিকাশ, রকেট)সহ অন্যান্য মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা আদায় করে থাকে।
গত ১৪ জুন ইরাকে বাগদাদের আবু জাফর আল মনসুর শহর থেকৈ চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রবাসী আপেল আলী ও গাইবান্ধার শের আলী নামক দুই প্রবাসী বাংলাদেশিকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে আটক করে নির্যাতন করতে থাকে। পরে মুক্তিপণের জন্য তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে সাত লাখ টাকা করে দিতে চাপ দেয়। নয়তো অপহৃত ব্যক্তিদের লাশ পাবে বলে হুমকি দেয়।
তোহিদুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগী পরিবার অপহরণকারী কথামত তাদের দেওয়া বিকাশ নম্বরে ১ লাখ টাকা করে দেয়। কিন্তু তাদের মুক্তি না দিয়ে নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয় এবং আরও টাকা দাবি করে।
পরিবার কর্তৃক বিষয়টি শিবগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করে ঢাকার সিটিটিসি ইউনিটের সহযোগিতা চাইলে সিটিটিসির ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ অভিযান চালিয়ে চক্রের বাংলাদেশে টাকা সংগ্রহের দায়িত্বে থাকা দুজনকে গ্রেপ্তার করে।
আসামিদের বিরুদ্ধে রাজধানীর মতিঝিল থানায় একটি ও গাইবান্ধা সদর থানায় আরেক একটি মামলা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।