বিল্লাল হোসেন,রাজগঞ্জ।। যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ এলাকা থেকে প্রায় বিলুপ্তির পথে পরিবেশ বান্ধব গরুর হালচাষ।

রাজগঞ্জে এক সময় কৃষকদের জমি চাষে একমাত্র নির্ভরশীল ছিলো গরু দিয়ে হাল চাষ। সে সময় রাজগঞ্জের প্রতিটি গ্রামের অধিকাংশ চাষী বাড়িতে জমি চাষের জন্য জোড়া জোড়া হালের বলদ, লাঙ্গল, জোয়াল, মইসহ চাষ কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জম যেনো বাড়ির একটি মানান ছিল। যার বাড়িতে যতো বেশি ঐসব সরঞ্জম থাকতো, এলাকা জুড়ে তার পরিচিতি থাকতো ততো বেশি। এতে করে শোভা পেত তার বাড়ির গোয়ালঘর ও বৈঠকখানা।

এখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় সেই বৈঠকখানাও নেই। নেই হালের বলদ, লাঙ্গল, জোয়ালও। সবকিছুই এখন বিলুপ্তি হতে চলেছে। সময় ও অর্থের সাশ্রয় এবং ঝাঁমেলামুক্ত থাকতেই চাষীরা এখন হালের গরুর পরিবর্তে মাঠে মাঠে নামিয়েছে, পাওয়ার ট্রিলার ও ট্রাক্টর নামের যান্ত্রিক যন্ত্র। রাজগঞ্জ এলাকার কয়েকজন চাষী (যারা অন্যের জমিতে কাজ করে) জানিয়েছেন- জমি চাষ কাজে ব্যবহৃত গরুর অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও কামলাদের শ্রমের মূল্য বৃদ্ধিতে, গৃহস্থরা আর চায় না অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে। খুব সহজে কাজ সম্পন্ন করার জন্য ও অর্থ বাঁচাতে অনেক কৃষকরা বেচে নিয়েছে আধুনিকতার যন্ত্র। তবে, রাজগঞ্জ এলাকার কিছু কিছু গ্রামে গরু দিয়ে হালচাষের ঐতিহ্য দেখা যায়। কিছু কিছু চাষী পরিবার এখনো ধরে রেখেছে গরু দিয়ে জমি চাষের প্রথা। লাঙ্গল, জোয়াল ও মই টেনে ফসলও ফলাচ্ছেন তারা। এমনই একজন মোবারকপুর গ্রামের প্রবীন চাষী জব্বার আলী (৬৫)। তিনি বলেন- নিজের গরু লাঙ্গল, জোয়াল, মই দিয়ে জমিতে চাষ দিচ্ছি ফসল করার জন্য। এছাড়া আগের ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য তিনি এখনো গরু দিয়ে জমিতে হাল চাষ দিয়ে থাকেন প্রতিবছর।