খুলনা বিভাগ, জেলার খবর, যশোর | তারিখঃ আগস্ট ১৪, ২০২৩ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 976 বার
স্টাফ রিপোর্টার : দেশ জুড়ে ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগ জনক হলেও সচেতনতা নেই বেনাপোল পৌরসভার বন্দর এলকায়। আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল, বন্দরের পণ্যগার ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সামনে দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা জলাবদ্ধতা, আর্বজনা ও আগাছায় ডেঙ্গুবাহী এডিস মশার উৎপত্তি ও আক্রান্তের শঙ্কা বাড়ছে। তবে পৌরকর্তৃপক্ষ বলছেন ডেঙ্গু মোকাবেলায় জলাবদ্ধতা নিষ্কাসনসহ নানান কার্যক্রম তাদের চলমান আছে।
জানা যায়, টানা ৪ বছর করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে সব কিছু যখন স্বাভাবিকের পথে ঠিক তখন দেশ জুড়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যু আবারও ভাবিয়ে তুলেছে সরকারকে। তবে এ অবস্থা থেকে উত্তরনে সরকার দেশের সবগুলো সিটিকরপোরেশন ও পৌরসভাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিলেও বেনাপোল পৌরসভা বা বন্দর এলাকায় এখনো লক্ষ্যনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর ব্যবহার করছে ৭হাজার পাসপোর্টধারী, দুই হাজারের মত ভারত ও বাংলাদেশি ট্রাক চালক। এছাড়া সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে ১০হাজারের মত কর্মকর্তা, কর্মচারী ও পণ্য খালাসের কাজে শ্রমিকেরা সার্বক্ষিনক অবস্থান করে থাকে। তবে নিয়মিত আবর্জনা বা জলবদ্ধা নিষ্কাসন না হওয়ায় বন্দরের আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল, পণ্যগার ও সরকারি প্রতিষ্ঠান ব্যবহারকারীরা সার্বক্ষনিক ডেঙ্গু আক্রান্তে ঝুকির মধ্যে আছে। ইতিমধ্যে যশোর জেলাতে গতমাসে ডেঙ্গু আক্রান্তে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। দ্রুত জলাবদ্ধতা নিষ্কাসনের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ও সচেতন মহল।
ভারতগামী পাসপোর্টধারী আবির হোসেন জানান, প্যাছেঞ্জার টার্মিনালের সামনে রাত ৩ টা থেকে সকাল ৮ টা পর্যন্ত লাইনে দাড়াতে হয়। কিন্তু এখানে সড়কের উপর জলাবদ্ধতায় এডিস মশা থেকে যে কোন সময় ডেঙ্গু আক্রান্ত হতে পারে পাসপোর্টধারী যাত্রীরা। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
বেনাপোল বন্দরে আমদানি পণ্য পরিবহনকারী ট্রাক চালক জব্বার হোসেন জানান, বন্দরের মধ্যে যেভাবে মাছের পানি ও আবর্জনা জমে সবসময় জলাবদ্ধতা থাকে এতে ট্রাক চালকেরা ডেঙ্গু আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়।
বেনাপোল পৌরসভার বড়আচড়া গ্রামের সোহাগ হোসেন জানান, ডেঙ্গু নিয়ে আমরা আতঙ্কিত। নবনির্বাচিত পৌর মেয়র নাসির উদ্দীন দায়িত্ব গ্রহন করে প্রথমেই জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করার দাবি রাখছি। বন্দর এলাকার জলাবদ্ধতায় ডেঙ্গু আক্রান্তের শঙ্কায় আছি। দ্রুতপদক্ষেপ না নিলে ভয়াবহ অবস্থার মুখোমুখি হতে হবে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের সহকারী আনসার কমান্ডার তপন কুমার বিশ্বাস জানান, তাদের ক্যাম্পের সামনে মহাসড়কেই দীর্ঘদিন ধরে আর্বজনার স্তুপ ও জলাবদ্ধাতা রয়েছে। বার বার চিঠির মাধ্যমে পৌরসভাকে জানানো হলেও তারা পদক্ষেপ নিচ্ছেনা। এতে ডেঙ্গু আক্রান্তের ভয় বাড়ছে।
বেনাপোল পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বিশ্বাস জানান, ইতিমধ্যে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ডেঙ্গু প্রতিরোধে নানান কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। বন্দর এলাকায় মানুষের চাপ বেশি থাকায় আবর্জনা বা জলাবদ্ধতা হয়। পর্যায়ক্রমে বন্দর এলাকায় জমে থাকা এসব পানি বা আবর্জনা পরিস্কার করা হবে।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যন মতে গত ২৪ ঘন্টায় দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ১২ জন মারা গেছে। বর্তমানে দেশে সর্বমোট ৯হাজার ৭৯০ ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্তে মোট ৩৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।