খুলনা বিভাগ, জেলার খবর, যশোর | তারিখঃ জানুয়ারি ৩১, ২০২৩ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 4141 বার
আশরাফুজ্জামান বাবু, স্টাফ রিপোর্টার : যশোরের ঝিকরগাছা রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার নিগার সুলতানা ডিউটি না করেই বাড়িতে বসে বেতন উত্তোলন করে চলেছেন। ঝিকরগাছা স্টেশনে যোগদান করার পর থেকেই দায়িত্বে অবহেলা, স্টেশনে ঠিকমতো না আসা, কাল ভাদ্রে আসলেও স্টেশনে অবস্থান না করা, যাত্রীদের সাথে দূর্ব্যবহার করা, বহিরাগত লোক দিয়ে স্টেশন পরিচালনা করা, অনৈতিক সুবিধা নিয়ে রেল স্টেশনের অভ্যন্তরের জায়গা ইজারার সুপারিশ করা সহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
সোমবার এবং মঙ্গলবার (৩০ও৩১ জানুয়ারি) পরপর দুই দিন সরজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় স্টেশন মাস্টারের রুম তালাবদ্ধ অবস্থায় আছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায় ঝিকরগাছা স্টেশনে দুইজন স্টেশন মাস্টার আছে। তার মধ্যে একজন পারভীন আক্তার ছুটিতে আছেন। এসময় দায়িত্বে আছেন নিগার সুলতানা। কিন্তু দুইদিনই তিনি অফিসে আসেননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অফিসের একাধিক স্টাফ জানান, ম্যাডামের বাড়ি ঝিকরগাছায় হওয়ায় তিনি কাওকে মুল্যায়ন করেন না। স্টেশনের পাশে একটা বাসা ভাড়া নিয়ে সেখানেই থাকেন। ইচ্ছে হলে স্টেশনে আসেন, না হলে আসেননা। সুবিধাজনক সময়ে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে যান। স্টেশনে নিয়মিত যাতায়াতকারী যাত্রীরা জানান, নিগার সুলতানার ব্যবহার খুব খারাপ। তাকে ঠিকমতো স্টেশনে দেখা যায় না। আর যদি থাকেও তবে ট্রেন সংক্রান্ত কোনো বিষয় জানতে তার কাছে গেলে তিনি ভালো ভাবে কথা বলেননা।
নিগার সুলতানা সম্প্রতি স্টেশন ভবনের সাথেই একটি দোকান বসানোর জন্য মিথ্যা তথ্য দিয়ে তার অধিদপ্তরে সুপারিশ করেছেন। ফলে সেখানে সাগর হোসেন নামের এক ব্যক্তি একটা টোং দোকান তৈরি করেছেন। এই ঘটনায় তিনি অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে। তাছাড়া পার্শ্ববর্তী মাছ বাজারের পাইকারি মাছ কিনতে আসা ব্যক্তিদের যানবাহন রাখার জায়গার জন্য মাসে ২ হাজার করে টাকা নেন বলে অভিযোগ আছে।
স্টেশনে অনুপস্থিত থাকায় ফোনে যোগাযোগ করা হলে নিগার সুলতানা দুই দিনই বলেন, আজ আমার ডিউটি নেই তাই স্টেশনে যায়নি। স্টেশনের মুল ভবনের সাথেই দোকান করার সুপারিশ করার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, আমার কাছে ভালো মনে হয়েছে তাই করেছি।
বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের
বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক শাহ সুফী নুর মোহাম্মদ বলেন, স্টেশন মাস্টারের অনুপস্থিতির বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। দোকান বরাদ্দের বিষয়ে তিনি জানান, স্টেশনের এরকম জায়গায় দোকান বা অন্য কোনো কাজের জন্য জায়গা বরাদ্দ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। অতিসত্বর এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে নিগার সুলতানা আসার পর থেকেই ঝিকরগাছা স্টেশনের সেবার মান একেবারে তলানিতে ঠেকেছে। তার স্বেচ্ছাচারিতায় মানুষ ট্রেনে যাতায়াত করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। অতিদ্রুত ঝিকরগাছা রেলস্টেশনের পূর্বের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে এই স্টেশন মাস্টারকে বদলির দাবী জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল।