জেলার খবর, ঢাকা বিভাগ, ফরিদপুর | তারিখঃ জানুয়ারি ২০, ২০২৩ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 3249 বার
সনতচক্রবর্ত্তীঃ ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে দাম্পত্য কলহের জেরে এক ভগ্নিপতি স্থানীয় কিছু বিএনপি সমর্থকদের নিয়ে তার শ্যালকসহ ৩ জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেছেন। আহতদের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহত শ্যালক ঘটনার দিনই বুধবার (১৮ জানুয়ারি) রাতে বোয়ালমারী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেন। কিন্তু লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর দুইদিন কেটে গেলেও থানা এ ব্যাপারে বিভিন্ন অজুহাতে তা মামলা হিসেবে গ্রহণ করছে না।
আহত শ্যালক কুমারেশ অধিকারীর থানায় দেয়া একটি লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কুমারেশের চাচাতো বোন মুক্তি অধিকারীকে তার স্বামী সাগর বিশ্বাস (৩০) ঠিকমতো ভরণপোষণ না দিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। গত বুধবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে সাগর বিশ্বাস বোয়ালমারী সদর ইউনিয়নের সৈয়দপুরস্থ নিজ বাড়ির পাশে অবস্থিত স্ত্রীর চাচাতো ভাইয়ের বাড়ি যান। সেখানে গিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সাগরের নেতৃত্বে ১০/১১ জন স্ত্রী মুক্তি অধিকারীর চাচাতো বড় ভাই কুমারেশ অধিকারী, কুমারেশ অধিকারীর ছেলে সম্রাট (১৩) ও স্ত্রী সীমা অধিকারীকে রামদা, চাইনিজ কুড়াল, লোহার হাতুড়ি, বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করেন। এসময় দুর্বৃত্তরা কুমারেশ অধিকারীর হাতের কব্জি ভেঙে ফেলেন এবং হাতের একটি আঙুলের অর্ধেকটা কেটে ফেলেন। হামলাকারীরা কুমারেশের ছেলের মাথায় রামদা দিয়ে কোপ দেন। এছাড়া কুমারেশ অধিকারীর স্ত্রী সীমার গলার ১০ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন ও কুমারেশ অধিকারীর নিকট থাকা ৭৩০০ টাকা তারা ছিনিয়ে নেন। এ ঘটনায় বুধবার (১৮ জানুয়ারি) রাতে কুমারেশ অধিকারী অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে বোয়ালমারী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযুক্তরা হলেন- সাগর বিশ্বাস, গুরাই চাঁদ, মো. রফিক শেখ, মো. রশিদুল, মো. রবিউল, মো. রনি শেখ ও গওরঙ্গ অধিকারী।
এদিকে এ ঘটনা ঘটার পর দুই দিন কেটে গেলেও থানা মামলা গ্রহণে গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আহত কুমারেশ অধিকারী বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, পারিবারিক কলহের জেরে আমার ছোট বোনের স্বামীকে শাসন করায় স্থানীয় গুরাই চাঁদের উস্কানিতে রফিক শেখ, মো. রশিদুল, মো. রবিউল, মো. রনি শেখ আমাকে এবং আমার স্ত্রী-সন্তানকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেছে। এমনকি চিকিৎসার জন্য আমাদের হাসপাতালে যেতে পর্যন্ত বাধা দেয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী মো. বিশু শেখ (৬০) বলেন, আমার সামনে কুমারেশ অধিকারীকে রফিক, রাশিদুল, গুরাইরা বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছে। আমি ঠেকানোর চেষ্টা করেও পারিনি।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানার সেকেন্ড অফিসার উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো. আক্কাস আলী শেখ বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, কুমারেশ অধিকারী বোয়ালমারী সদর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। সাগর-মুক্তি দম্পতির ১২ ও ৪ বছর বয়সী দুটি মেয়ে আছে।