জেলার খবর, ঢাকা বিভাগ, ফরিদপুর | তারিখঃ জানুয়ারি ১৪, ২০২৩ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 2683 বার
সনতচক্রবর্ত্তীঃ ফরিদপুর শহরে বিভিন্ন এলাকায় ভিক্ষা করে সংসার চলে পল্লিকবি জসীমউদ্দীনের কবিতায় উঠে আসা আসমানীর ছেলে পঙ্গু আশরাফুলের।
আশরাফুল ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা।
আশরাফুল বলেন, এক সময় কাজ করে সংসার ভালোই চলছিল। কিন্তু ২০১৪ সালে নেমে আসে চরম বিপর্যয়। ঢাকা থেকে ফরিদপুর ফেরার পথে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাটে মাইক্রোবাস দুর্ঘটনার শিকার হই। এতে ডান হাতটি ভেঙ্গে যায়। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে না পারায় এখন পুরোপুরি পঙ্গু। ভিক্ষা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
তিনি বলেন, ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান চৌধুরী পঙ্কজ আমাকে একটি পুঙ্গ ভাতা করে দিয়েছিলেন। তিনি বিভিন্ন সময় সাধ্য মতো সহযোগিতাও করতেন। পরে ওই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম মজনু নির্বাচিত হয়ে ভাতাটি বন্ধ করে দেন। আমি পঙ্গু মানুষ কোনো কাজ করতে পারি না। কেউ কাজকর্মেও নেন না। তাই পেটের দায়ে ভিক্ষা করে কোনো মতে জীবন চালাচ্ছি।
ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. নুরুজ্জামান চৌধুরী পঙ্কজ বলেন, আশরাফুল পল্লিকবি জসীমউদ্দীনের কবিতার আসমানীর সন্তান। আমি চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে আশরাফুলকে একটি পুঙ্গ ভাতাসহ সব ধরনের সহযোগিতা করেছি। এখনও সাধ্যমতো তাকে সহযোগিতার চেষ্টা করি।
ওই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলামের সঙ্গে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। তার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. লিটন ঢালী বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। যোগাযোগ করলে নিয়ম অনুযায়ী তার পঙ্গু ভাতাসহ তাকে সার্বিক বিষয়ে সহযোগিতা করা হবে।
উল্লেখ, ১৯১৩ সালে ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের ভানুরজঙ্গা গ্রামে আসমানীর জন্ম। আরমান মল্লিকের মেয়ে আসমানীর মাত্র ৯ বছর বয়সে বিয়ে হয় পাশের রসুলপুর গ্রামের হাসাম মণ্ডলের সঙ্গে। তিনি দুই ছেলে ও ছয় মেয়ের জননী ছিলেন। ৯৯ বছরের বয়সের বার্ধক্যজনিত ও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০১২ সালে তিনি মারা যান। এ সময় তিনি দুই ছেলেসহ চার মেয়ে রেখে যান।