খুলনা বিভাগ, জেলার খবর, যশোর | তারিখঃ ডিসেম্বর ২১, ২০২২ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 1599 বার
আশরাফুজ্জামান বাবু, ঝিকরগাছা : যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার পানিসারা ইউনিয়নের কুলিয়া গ্রামের মৃত মোরশেদ আলীর ২য় স্ত্রীর বড় ছেলে কথিত ডাক্তার বিল্লাল হোসেনের কুকীর্তি সকলের সামনে উন্মুক্ত হয়ে যাওয়ার পর সে নিজেকে বাঁচাতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে।
সম্প্রতি একটি সাংবাদিক সম্মেলনে নির্জলা মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করেছে। সংবাদ সম্মেলনে সে দাবি করেছে তার কথিত বানানো পিতা মুক্তিযোদ্ধা মশিয়র রহমান বাংলাদেশের বীর বিক্রম খেতাব প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ঝিকরগাছার শিমুলিয়া ইউনিয়নের রকেট জলিলের সাথে ১৯৭১ সালে ভারতের উড়িষ্যায় ট্রেনিং নিয়ে দেশে ফিরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছে। কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো ১৯৭১ সালে ভারতের উড়িষ্যায় কোনো মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ শিবির ছিলো না।
এ তথ্য নিশ্চিত করে বীর বিক্রম রকেট জলিলের ভাইপো বীর মুক্তিযোদ্ধা, ঝিকরগাছা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার শাহজাহান আলী বলেন রকেট জলিলের সাথে আমি নিজে থেকে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছি। কুলিয়া গ্রামের কেউ মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেনি। মোরশেদ নামের কেউ আমাদের সহযোদ্ধা ছিলোনা। বরং কুলিয়া গ্রামে ১৫ জন রাজাকার ছিলো। তার মধ্যে একজন ঐ মোরশেদের ভাই বলে আমরা লোকমুখে শুনেছি। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দাবি করা বিল্লাল মিথ্যা বলছে।
বিল্লাল তার সংবাদ সম্মেলনে আরেকজন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম ব্যবহার করেছে। তিনি হলেন ঝিকরগাছা পৌরসভার মোবারক পুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইদ্রিস আলী জানান, উক্ত সংবাদ সম্মেলনে আমি উপস্থিত ছিলামনা। বিল্লালের পিতা মোরশেদকে আমি চিনিনা। সে মুক্তিযুদ্ধ করেছে কিনা সেটাও আমার জানা নেই। কুলিয়ায় কোনো মুক্তিযোদ্ধা নেই বলে তিনি জানান।
এদিকে ঝিকরগাছা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আরেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী বলেন, ঝিকরগাছায় মশিয়র রহমান নামে কোনো মুক্তিযোদ্ধা নেই। মশিয়রের ভাতা মোরশেদ পরিবার আত্মসাৎ করছে বিষয়টি জনসমক্ষে নিয়ে আাসায় তিনি এই প্রতিবেদককে ধন্যবাদ জানান।
বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গেছে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দাবী করা বিল্লাল হোসেনের নামে ধারাবাহিক ভাবে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর স্থানীয় প্রশাসন নড়েচড়ে বসেছে। ইতিমধ্যে ভাতা প্রদানকারী সোনালী ব্যাংক কতৃপক্ষ বিল্লালকে তলব করে তার পক্ষে প্রমাণাদী উপস্থাপন করতে বললেও সে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি। এজন্য ব্যাংক কতৃপক্ষ তাকে এ যাবৎকাল গ্রহন করা সন্মানীর টাকা ফেরত প্রদানের জন্য মৌখিক ভাবে জানিয়ে দিয়েছে।
এদিকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে পানিসারা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বিল্লালের পিতা মোরশেদ আলী কে মশিয়র বানিয়ে জন্ম নিবন্ধন সংগ্রহ করার খবর প্রকাশের পর উক্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন পিপুল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে উক্ত জন্ম নিবন্ধন বাতিল করার জন্য আবেদন জমা দিয়েছেন।
অন্যদিকে বিল্লালের বিভিন্ন প্রতারনার বিচার চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন্, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, যশোর শাখায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন এর উপপরিচালক মোঃ আল আমিন।