জেলার খবর, ময়মনসিংহ, ময়মনসিংহ বিভাগ | তারিখঃ নভেম্বর ৫, ২০২২ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 2030 বার
বিল্লাল হোসেন, ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় দিনে গরম আর মধ্য রাতের দিকে ভাগে বইছে হালকা শীত। মৌসুমী শীত না আসলেও ঋতু পরিবর্তনের কারণে শীতের আমেজ অনুভূত হচ্ছে।
সরজমিন উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, বান্দিয়া বাজার, নিঝুরী বাজার, ভালুকা পৌরসভা রোড,পশ্চিম বাজার, থানার মোড় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ছোট বড় হাট বাজার বিরুনীয়া বাজার,সিডস্টোর বাজার, ডাকাতিয়া ও আঙ্গারগাড়া বাজার,উথুরা ও চামিয়াদী বাজার,ধলিয়া ও শান্তিগঞ্জ বাজার, ভরাডোবা বাসস্ট্যান্ড বাজার, মল্লিকবাড়ী ও কাচিনা বাজার গুলো কারিগররা লেপ-তোশক বানাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। দোকানের সামনে বড় মাদুর কিংবা চাটাই বিছিয়ে তার ওপর মাপের কাপর বিছিয়ে প্রয়োজন মত তুলা দিয়ে শুরু চলছে সুঁই ফুটিয়ে সেলাইয়ের কাজ। এক থেকে দুই ঘন্টার মধ্যেই তৈরী হয়ে যাচ্ছে একটি লেপ বা তোশক। এভাবে একটার পর একটা অর্ডার করা লেপ-তোশক তৈরী করে ক্রেতাদের হাতে তুলে দিচ্ছে কারিগরা।
ভালুকা পৌর সভার হাসপাতাল রোডে বিসমিল্লাহ বেডিং হাউজের সত্বাধিকারী ধুনকর আজিজুল ইসলাম জানান, লেপ তোশক তৈরী বংশপস্পরায়। । পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত সংসারের হাল ধরতে অল্প বয়স থেকেই তাকে এ পেশায় কাজ করতে হচ্ছে। প্রতি মাসেই ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা তার উপার্জন হয়।
শীতের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে অনেকেই নতুন লেপ তোশকের অগ্রিম অর্ডার দিয়ে যাচ্ছেন। সারা বছরই টুকি টাকি লেপ-তোশক তৈরীর কাজ থাকে। তবে শীত আসলে কাজের চাপ অনেক বেড়ে যায়। তখন অতিরিক্ত শ্রমিক দিয়ে কাজ করতে হয়।
তিনি আরো জানান, সাইজ অনুযায়ী প্রতিটি লেপ ও তোশক তৈরীতে তারা ২০০ থেকে ২৫০ টাকা মজুরী পান । সেলাই কর্মীরাও সবাই একই মজুরি পেয়ে থাকেন। দিন শেষে ৫শ থেকে ৭শ টাকা রোজগার হয় তাদের। তা দিয়েই সংসার চালান তারা।
এখনো ভালো করে শীত পড়েনি। শীত মৌসুমে প্রতিদিন তার দোকানে প্রায় ৮-৯টি লেপ-তোশকের অর্ডার হয়ে থাকে। তাছাড়া বিভিন্ন সাইজের তৈরী করা বালিশ প্রতিদিন বিক্রি হয় । অনেকেই কম দামে তৈরী করা লেপ- তোশক কিনে নেন।
তিনি আরো জানান, তুলা ও কাপড়ের মূল্য বৃদ্ধি না হওয়ায় গত বছরের তুলনায় এ বছর মৌসুমের শুরুতেই অর্ডার একটু বেশি হচ্ছে। শিমুল তুলা প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, কার্পাস তুলা ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, গার্মেন্টস তৈরি কালো হুলু কালা তুলা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, সাদা তুলা ৮০ থেকে ১শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাপড়ের মান অনুযায়ী প্রতি গজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। সব মিলিয়ে ভালো মানের একটি লেপ তৈরি করতে ১৫শ থেকে ১৬শ টাকা খরচ হয়। একই মানের একটি তোশকেও খরচ হয় ২৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা।
লেপ কিনতে আসা ডাকাতিয়া ইউনিয়নের ক্রেতা ছিটাল গ্রামের রইছ উদ্দীন জানান, দিনে গরম থাকলেও রাতে ঘুমানোর সময় সামান্য শীত লাগে। আবার শীত শুরু হলে লেপ তোশকের দোকানে ভীড় বেশী থাকে। তাই বেশি শীত আসার আগেই শীতের জন্য লেপ বানিয়ে নিচ্ছি।