০১:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫

দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে চিকিৎসার নামে ভয়ঙ্কর প্রতারণার অভিযোগ

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট: ০৯:১৪:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫
  • / ১৬

বিশ্বজিৎ বসু, স্টাফ রিপোর্টারঃ দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে চিকিৎসার নামে রোগীদের সাথে প্রতারণা করার অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, নাকের মধ্যে পলিপাস, পাইলস, অর্শ, গেজ, বাউশি, ভগন্দার ও হাঁপানিসহ বিভিন্ন জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসার নামে চলছে ভয়ংকর প্রতারণার ফাঁদ। আর এই ভয়ংকর ফাঁদে পা দিয়ে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন গ্রামের সহজ-সরল, নিরীহ জনগণ এবং আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। এছাড়া ভুল চিকিৎসার কারণে অনেকে পঙ্গুত্ব বরণসহ প্রাণ হারাচ্ছেন অনেকেই এমনটাই অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

তারা দীর্ঘদিন যাবৎ ধরে ফরিদপুর থেকে বিভিন্ন সময়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে প্রতারণামূলক চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অনেকে অভিযোগ জানিয়েছেন। নিজেকে অভিজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে দাবি করা প্রথম অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম মোঃ তরিকুল ইসলাম ও অপরজনের নাম মোঃ জাহিদুল ইসলাম। তারা সম্পর্কে আপন ভাই এবং নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলাধীন লাহুড়িয়া হেচলাগাতি গ্রামের মোঃ নুলু মিয়ার ছেলে।

জানা গেছে, অভিযুক্ত তরিকুল ও জাহিদুল ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানাধীন ওয়াপদা মোড়ের হাসান মঞ্জিলের পূর্ব পার্শ্বের ৩য় তলা ভবনের নিচতলায় সেবা সার্জিক্যাল ক্লিনিক এন্ড নিউ সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে গোপনভাবে “পাইলস্ ও পলিপাস চিকিৎসালয়, বোয়ালমারী” নামে প্রতিষ্ঠান স্থাপনের মাধ্যমে প্রতি বৃহস্পতির সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নাকের মধ্যে পলিপাস, পাইলস, অর্শ, গেজ, বাউশি, ভগন্দার ও হাঁপানিসহ বিভিন্ন জটিল ও কঠিন রোগের অপচিকিৎসা করে আসছে। এছাড়াও একই জেলার সালথা থানাধীন সালথা বাজারের হাইস্কুল রোড এলাকায় অভিযুক্তদের “পাইলস ও পলিপাস চিকিৎসালয়” নামে একই ধরনের প্রতিষ্ঠান রয়েছে এবং সেখানে প্রতি শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত তারা উভয়েই অপচিকিৎসা প্রদান করে আসছে। তারা উভয়েই ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা থানার পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের ২০০ গজ উত্তরে হাজী ময়েন উদ্দিনের বাড়ি সংলগ্ন জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনের সামনে “পাইলস ও পলিপাস চিকিৎসালয়, আলফাডাঙ্গা” ও মাদারীপুর জেলার শিবচর থানাধীন জেলখানা নদীর পশ্চিম পাড় হোটেল আরিফের দোতলায় “পাইলস ও পলিপাস চিকিৎসালয়, শিবচর” নামক প্রতিষ্ঠান স্থাপনের মাধ্যমে প্রতি রবিবার রোগী দেখছেন এই নামধারী ডিপ্লোমা প্রকারক চিকিসকদ্বয়।

এছাড়াও বিভিন্ন রোগীর নিকট থেকে ফোন কল পেয়ে তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়মিতভাবে রোগী দেখছে বলেও জানা গেছে। ফলে দেশের নিরীহ জনগণের জন্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।

সরেজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায়, চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন ও সাইনবোর্ড দিয়ে তরিকুল ও জাহিদুল ফরিদপুর জেলার জনবহুল দুই থানা ও মাদারীপুরের শিবচর থানাধীন এলাকায় ভুইফোঁড় প্রতিষ্ঠান খুলে বসে আছে। তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রশ্নেও তারা সাংবাদিকদের ডিপ্লোমাধারী বললেও কোনো প্রমাণ দাখিল করতে পারেনি।

এছাড়াও খবর নিয়ে জানা গেছে, এ ধরনের জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসা সেবা প্রদান করার মতো শিক্ষাগত যোগ্যতা বা উচ্চতর প্রশিক্ষণের কোনোটিই তাদের নেই। তারপরও নিজেরা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত জনগণকে অপচিকিৎসা দিয়ে নানা শারীরিক জটিলতা তৈরি করে দিচ্ছে। নিজেদেরকে ফরিদপুর জেলার বাসিন্দা দাবি করে নিজেদের দাম্ভিকতা জাহির করে প্রশাসনকে ম্যানেজ করার মধ্য দিয়ে তারা প্রকাশ্যে এ ধরণের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। গোপন চিকিৎসা বিধায় অনেকে লোকলজ্জার ভয়ে কোনো অভিযোগ জানানো বা প্রতিবাদ করা থেকে বিরত থাকে বিধায় অভিযুক্তরা দিনে দিনে আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, প্রশাসনের নাকের ডগায় তরিকুল ও জাহিদুল দীর্ঘদিন ধরে অপচিকিৎসা চালালেও স্থানীয় প্রশাসনের রহস্যজনক কারণে নীরব ভূমিকা পালন করে আসছে। এছাড়াও তারা এলাকার নানাবিধ অপকর্মের সাথে জড়িত। সঠিক তদন্ত ও অভিযান পরিচালনা করে তাদের এই ধরনের অপচিকিৎসালয় উচ্ছেদ ও তাদের কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করারও দাবি জানান তারা।

এ বিষয়ে অভিযুক্তদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করতে গেলে অভিযোগকারীদের খুন করে ফেলবে মর্মে উপস্থিত সাংবাদিকদের নিকট বলেন। তাদের এরূপ কর্মকান্ড অচিরে বন্ধ করা না গেলে যে কোনো মূহুর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশংকা রয়েছে। এ বিষয়ে এলাকার সচেতন মহল সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ করেছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে চিকিৎসার নামে ভয়ঙ্কর প্রতারণার অভিযোগ

আপডেট: ০৯:১৪:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫

বিশ্বজিৎ বসু, স্টাফ রিপোর্টারঃ দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে চিকিৎসার নামে রোগীদের সাথে প্রতারণা করার অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, নাকের মধ্যে পলিপাস, পাইলস, অর্শ, গেজ, বাউশি, ভগন্দার ও হাঁপানিসহ বিভিন্ন জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসার নামে চলছে ভয়ংকর প্রতারণার ফাঁদ। আর এই ভয়ংকর ফাঁদে পা দিয়ে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন গ্রামের সহজ-সরল, নিরীহ জনগণ এবং আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। এছাড়া ভুল চিকিৎসার কারণে অনেকে পঙ্গুত্ব বরণসহ প্রাণ হারাচ্ছেন অনেকেই এমনটাই অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

তারা দীর্ঘদিন যাবৎ ধরে ফরিদপুর থেকে বিভিন্ন সময়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে প্রতারণামূলক চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অনেকে অভিযোগ জানিয়েছেন। নিজেকে অভিজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে দাবি করা প্রথম অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম মোঃ তরিকুল ইসলাম ও অপরজনের নাম মোঃ জাহিদুল ইসলাম। তারা সম্পর্কে আপন ভাই এবং নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলাধীন লাহুড়িয়া হেচলাগাতি গ্রামের মোঃ নুলু মিয়ার ছেলে।

জানা গেছে, অভিযুক্ত তরিকুল ও জাহিদুল ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানাধীন ওয়াপদা মোড়ের হাসান মঞ্জিলের পূর্ব পার্শ্বের ৩য় তলা ভবনের নিচতলায় সেবা সার্জিক্যাল ক্লিনিক এন্ড নিউ সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে গোপনভাবে “পাইলস্ ও পলিপাস চিকিৎসালয়, বোয়ালমারী” নামে প্রতিষ্ঠান স্থাপনের মাধ্যমে প্রতি বৃহস্পতির সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নাকের মধ্যে পলিপাস, পাইলস, অর্শ, গেজ, বাউশি, ভগন্দার ও হাঁপানিসহ বিভিন্ন জটিল ও কঠিন রোগের অপচিকিৎসা করে আসছে। এছাড়াও একই জেলার সালথা থানাধীন সালথা বাজারের হাইস্কুল রোড এলাকায় অভিযুক্তদের “পাইলস ও পলিপাস চিকিৎসালয়” নামে একই ধরনের প্রতিষ্ঠান রয়েছে এবং সেখানে প্রতি শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত তারা উভয়েই অপচিকিৎসা প্রদান করে আসছে। তারা উভয়েই ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা থানার পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের ২০০ গজ উত্তরে হাজী ময়েন উদ্দিনের বাড়ি সংলগ্ন জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনের সামনে “পাইলস ও পলিপাস চিকিৎসালয়, আলফাডাঙ্গা” ও মাদারীপুর জেলার শিবচর থানাধীন জেলখানা নদীর পশ্চিম পাড় হোটেল আরিফের দোতলায় “পাইলস ও পলিপাস চিকিৎসালয়, শিবচর” নামক প্রতিষ্ঠান স্থাপনের মাধ্যমে প্রতি রবিবার রোগী দেখছেন এই নামধারী ডিপ্লোমা প্রকারক চিকিসকদ্বয়।

এছাড়াও বিভিন্ন রোগীর নিকট থেকে ফোন কল পেয়ে তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়মিতভাবে রোগী দেখছে বলেও জানা গেছে। ফলে দেশের নিরীহ জনগণের জন্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।

সরেজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায়, চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন ও সাইনবোর্ড দিয়ে তরিকুল ও জাহিদুল ফরিদপুর জেলার জনবহুল দুই থানা ও মাদারীপুরের শিবচর থানাধীন এলাকায় ভুইফোঁড় প্রতিষ্ঠান খুলে বসে আছে। তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রশ্নেও তারা সাংবাদিকদের ডিপ্লোমাধারী বললেও কোনো প্রমাণ দাখিল করতে পারেনি।

এছাড়াও খবর নিয়ে জানা গেছে, এ ধরনের জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসা সেবা প্রদান করার মতো শিক্ষাগত যোগ্যতা বা উচ্চতর প্রশিক্ষণের কোনোটিই তাদের নেই। তারপরও নিজেরা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত জনগণকে অপচিকিৎসা দিয়ে নানা শারীরিক জটিলতা তৈরি করে দিচ্ছে। নিজেদেরকে ফরিদপুর জেলার বাসিন্দা দাবি করে নিজেদের দাম্ভিকতা জাহির করে প্রশাসনকে ম্যানেজ করার মধ্য দিয়ে তারা প্রকাশ্যে এ ধরণের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। গোপন চিকিৎসা বিধায় অনেকে লোকলজ্জার ভয়ে কোনো অভিযোগ জানানো বা প্রতিবাদ করা থেকে বিরত থাকে বিধায় অভিযুক্তরা দিনে দিনে আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, প্রশাসনের নাকের ডগায় তরিকুল ও জাহিদুল দীর্ঘদিন ধরে অপচিকিৎসা চালালেও স্থানীয় প্রশাসনের রহস্যজনক কারণে নীরব ভূমিকা পালন করে আসছে। এছাড়াও তারা এলাকার নানাবিধ অপকর্মের সাথে জড়িত। সঠিক তদন্ত ও অভিযান পরিচালনা করে তাদের এই ধরনের অপচিকিৎসালয় উচ্ছেদ ও তাদের কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করারও দাবি জানান তারা।

এ বিষয়ে অভিযুক্তদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করতে গেলে অভিযোগকারীদের খুন করে ফেলবে মর্মে উপস্থিত সাংবাদিকদের নিকট বলেন। তাদের এরূপ কর্মকান্ড অচিরে বন্ধ করা না গেলে যে কোনো মূহুর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশংকা রয়েছে। এ বিষয়ে এলাকার সচেতন মহল সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ করেছেন।