০৫:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫

শ্রীপুরে ২০ বছরের পরিত্যক্ত ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কল্যাণ কেন্দ্র, ঝুঁকি নিয়েই চলছে চিকিৎসা সেবা

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট: ০১:০৯:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
  • /

স্বপন বিশ্বাস, মাগুরা। মাগুরার শ্রীপুরে দীর্ঘ ২০ বছর আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে কাদিরপাড়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কল্যাণ কেন্দ্রটি। পরিত্যক্ত ঘোষণার পরেও ঝুঁকি নিয়েই চলছে চিকিৎসা সেবা।

শ্রীপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় জানায়, ২০০৫ সালে কাদিরপাড়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র সিএমএমইউ কর্তৃক পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে আজ অবধি নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়নি।

উপজেলার রাধানগর বাজার সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত এই স্বাস্থ্য কল্যাণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের ছাদ দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে ছাদ খসে পড়ে ইট, খোঁয়া রড় বেরিয়ে গেছে। ছাদের উপর বিভিন্ন প্রকারের আগাছা জন্মেছে। দরজা, জানালা পচে নষ্ট হয়ে গেছে। বাথরুম গুলো আবর্জনার স্তুপে ডুবে গেছে।

পরিত্যক্ত ঘোষণা করার আগে স্বাস্থ্য কেন্দ্রিটিতে ১ জন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো), ১ জন ফার্মাসিষ্ট, ১ জন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শকা, ১ জন পিয়ন ও ১ জন আয়া প্রসূতি মায়েদের চিকিৎসা, নরমাল ডেলিভারি, মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা ও সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা, টিকাদান, পরিবার পরিকল্পনা পরামর্শ ও জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির সেবা প্রদান করা হতো। এই ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কল্যাণ কেন্দ্রের ৫ টি পদের সকলেই এখন অবসরে গেছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরিত্যক্ত ভবনের রুমে বর্তমানে সব্দালপুর ইউনিয়নের ১ জন উপসহকরী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) অনন্ত কুমার বিশ্বাস ও ১জন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক মো. খায়রুল আলম অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে রোগীদের সাধারণ জ্বর, ঠান্ডা কাশির চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন।

তবে দীর্ঘদিন যাবত ওষুধ সরবরাহ খুব কম।চিকিৎসা সেবা নিতে আসা মো. হাসান মোল্যা (৪৫) বলেন, এখানে কোনো ধরণের ওষুধ দেওয়া হয় না, শুধু ওষুধ কাগজে লিখে দেওয়া হয়। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই আমাদের এই ভবনে আসা-যাওয়া করতে হয়। জহুরা বেগম (৭৫) বলেন, এখান থেকে কোনো ওষুধ না দেওয়াতে আমাদের দূরের ঘাষিয়াড়া কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ওষুধ আনতে যেতে হয়।

কাদিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব হোসেন খাঁন বলেন, দীর্ঘ ২০ বছর যাবত স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণার পর থেকেই চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকাই ইউনিয়নবাসী ছাড়াও দূর-দূরান্তের রোগীরা এখান থেকে চিকিৎসা সেবা গ্রহন করতেন। এখন রোগীদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা সেবা নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এতে রোগীদের ভোগান্তি পোঁহাতে হচ্ছে। ইউনিয়নবাসীর দাবি দ্রুত ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কল্যাণ কেন্দ্রটির নতুন ভবন নির্মাণ করা।

এ বিষয়ে পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. এনামুল হক বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাখী ব্যানার্জী বলেন, স্বাস্থ্যসেবা মানুষের মৌলিক অধিকার। ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে নিয়ে আসাসহ দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

শ্রীপুরে ২০ বছরের পরিত্যক্ত ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কল্যাণ কেন্দ্র, ঝুঁকি নিয়েই চলছে চিকিৎসা সেবা

আপডেট: ০১:০৯:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫

স্বপন বিশ্বাস, মাগুরা। মাগুরার শ্রীপুরে দীর্ঘ ২০ বছর আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে কাদিরপাড়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কল্যাণ কেন্দ্রটি। পরিত্যক্ত ঘোষণার পরেও ঝুঁকি নিয়েই চলছে চিকিৎসা সেবা।

শ্রীপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় জানায়, ২০০৫ সালে কাদিরপাড়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র সিএমএমইউ কর্তৃক পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে আজ অবধি নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়নি।

উপজেলার রাধানগর বাজার সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত এই স্বাস্থ্য কল্যাণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের ছাদ দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে ছাদ খসে পড়ে ইট, খোঁয়া রড় বেরিয়ে গেছে। ছাদের উপর বিভিন্ন প্রকারের আগাছা জন্মেছে। দরজা, জানালা পচে নষ্ট হয়ে গেছে। বাথরুম গুলো আবর্জনার স্তুপে ডুবে গেছে।

পরিত্যক্ত ঘোষণা করার আগে স্বাস্থ্য কেন্দ্রিটিতে ১ জন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো), ১ জন ফার্মাসিষ্ট, ১ জন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শকা, ১ জন পিয়ন ও ১ জন আয়া প্রসূতি মায়েদের চিকিৎসা, নরমাল ডেলিভারি, মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা ও সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা, টিকাদান, পরিবার পরিকল্পনা পরামর্শ ও জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির সেবা প্রদান করা হতো। এই ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কল্যাণ কেন্দ্রের ৫ টি পদের সকলেই এখন অবসরে গেছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরিত্যক্ত ভবনের রুমে বর্তমানে সব্দালপুর ইউনিয়নের ১ জন উপসহকরী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) অনন্ত কুমার বিশ্বাস ও ১জন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক মো. খায়রুল আলম অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে রোগীদের সাধারণ জ্বর, ঠান্ডা কাশির চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন।

তবে দীর্ঘদিন যাবত ওষুধ সরবরাহ খুব কম।চিকিৎসা সেবা নিতে আসা মো. হাসান মোল্যা (৪৫) বলেন, এখানে কোনো ধরণের ওষুধ দেওয়া হয় না, শুধু ওষুধ কাগজে লিখে দেওয়া হয়। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই আমাদের এই ভবনে আসা-যাওয়া করতে হয়। জহুরা বেগম (৭৫) বলেন, এখান থেকে কোনো ওষুধ না দেওয়াতে আমাদের দূরের ঘাষিয়াড়া কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ওষুধ আনতে যেতে হয়।

কাদিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব হোসেন খাঁন বলেন, দীর্ঘ ২০ বছর যাবত স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণার পর থেকেই চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকাই ইউনিয়নবাসী ছাড়াও দূর-দূরান্তের রোগীরা এখান থেকে চিকিৎসা সেবা গ্রহন করতেন। এখন রোগীদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা সেবা নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এতে রোগীদের ভোগান্তি পোঁহাতে হচ্ছে। ইউনিয়নবাসীর দাবি দ্রুত ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কল্যাণ কেন্দ্রটির নতুন ভবন নির্মাণ করা।

এ বিষয়ে পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. এনামুল হক বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাখী ব্যানার্জী বলেন, স্বাস্থ্যসেবা মানুষের মৌলিক অধিকার। ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে নিয়ে আসাসহ দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।