১১:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

শার্শায় ক্বওমী মহিলা মাদ্রাসায় ছাত্রীদের কক্ষে সিসি ক্যামেরা, অভিযোগে চাঞ্চল্য: শিক্ষক জিজ্ঞাসাবাদে

নিউজ ডেস্ক

সাব্বির হোসেন,যশোর: যশোরের শার্শা উপজেলার একটি ক্বওমী মহিলা মাদ্রাসায় ছাত্রীদের শোবার ঘরে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে—এমন গুরুতর অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে পুলিশ ও প্রশাসনের যৌথ অভিযানে ১৬টি নাইট ভিশন ক্যামেরা ও একটি মনিটর জব্দ করা হয়েছে। ঘটনায় শিক্ষক আবু তাহেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পরে শর্তসাপেক্ষে ছেড়ে দেওয়া হয়।

অভিভাবকদের একাধিক লিখিত অভিযোগে উঠে এসেছে, কিছুদিন ধরে মাদ্রাসায় অবস্থানরত মেয়েরা ঘরে সিসি ক্যামেরার উপস্থিতি টের পাচ্ছিল। বিষয়টি তারা প্রথমে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পরে মেয়েরা বিষয়টি নিজ নিজ পরিবারকে জানায়।

একজন অভিভাবক জানান, “আমার মেয়ে হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করত। কয়েকদিন আগে সে জানায়, রাতে ঘুমাতে গিয়ে ক্যামেরার লাল আলো জ্বলতে দেখে ভয় পেয়ে যায়। এমনকি কাপড় বদলের সময়ও অস্বস্তি অনুভব করত।”

আরেক অভিভাবক বলেন, “মেয়েরা জানায়, ঘরে একাধিক ক্যামেরা বসানো হয়েছে। তারা ভাবত, এটা নিরাপত্তার জন্য। কিন্তু যখন জানতে পারলাম ক্যামেরার ফুটেজ নিচতলার শিক্ষকদের রুমে মনিটরের মাধ্যমে দেখা হয়, তখনই আমরা থানায় অভিযোগ করি।”

অভিযোগের ভিত্তিতে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নাজিব হাসান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিশাত আল নাহিয়ানের নেতৃত্বে মাদ্রাসায় অভিযান চালানো হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিশাত আল নাহিয়ান বলেন, “মেয়েদের শোবার ঘরে নাইট ভিশন ক্যামেরা বসিয়ে তাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করা হয়েছে। এটি অত্যন্ত গুরুতর অপরাধ।”

তিনি আরও জানান, “ক্যামেরাগুলোতে অন্তত এক মাসের ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত রয়েছে। ফুটেজগুলো যাচাই–বাছাই করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

অভিযানকালে পুলিশ জানতে পারে, পাঁচতলা মাদ্রাসা ভবনের নিচতলায় দুই শিক্ষক থাকেন এবং ওপরের চারতলায় প্রায় ১০০–১৫০ জন মেয়ে আবাসিকভাবে থাকেন। তবে কতজন ছাত্রী মাদ্রাসায় রয়েছে—সে বিষয়ে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।

ঘটনার পর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। অভিভাবক মহলে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। অনেকে তাদের সন্তানদের মাদ্রাসা থেকে সরিয়ে নেওয়ার চিন্তা করছেন

Please Share This Post in Your Social Media

আপডেট: ০৪:২৫:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫
১৩১

শার্শায় ক্বওমী মহিলা মাদ্রাসায় ছাত্রীদের কক্ষে সিসি ক্যামেরা, অভিযোগে চাঞ্চল্য: শিক্ষক জিজ্ঞাসাবাদে

আপডেট: ০৪:২৫:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫

সাব্বির হোসেন,যশোর: যশোরের শার্শা উপজেলার একটি ক্বওমী মহিলা মাদ্রাসায় ছাত্রীদের শোবার ঘরে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে—এমন গুরুতর অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে পুলিশ ও প্রশাসনের যৌথ অভিযানে ১৬টি নাইট ভিশন ক্যামেরা ও একটি মনিটর জব্দ করা হয়েছে। ঘটনায় শিক্ষক আবু তাহেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পরে শর্তসাপেক্ষে ছেড়ে দেওয়া হয়।

অভিভাবকদের একাধিক লিখিত অভিযোগে উঠে এসেছে, কিছুদিন ধরে মাদ্রাসায় অবস্থানরত মেয়েরা ঘরে সিসি ক্যামেরার উপস্থিতি টের পাচ্ছিল। বিষয়টি তারা প্রথমে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পরে মেয়েরা বিষয়টি নিজ নিজ পরিবারকে জানায়।

একজন অভিভাবক জানান, “আমার মেয়ে হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করত। কয়েকদিন আগে সে জানায়, রাতে ঘুমাতে গিয়ে ক্যামেরার লাল আলো জ্বলতে দেখে ভয় পেয়ে যায়। এমনকি কাপড় বদলের সময়ও অস্বস্তি অনুভব করত।”

আরেক অভিভাবক বলেন, “মেয়েরা জানায়, ঘরে একাধিক ক্যামেরা বসানো হয়েছে। তারা ভাবত, এটা নিরাপত্তার জন্য। কিন্তু যখন জানতে পারলাম ক্যামেরার ফুটেজ নিচতলার শিক্ষকদের রুমে মনিটরের মাধ্যমে দেখা হয়, তখনই আমরা থানায় অভিযোগ করি।”

অভিযোগের ভিত্তিতে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নাজিব হাসান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিশাত আল নাহিয়ানের নেতৃত্বে মাদ্রাসায় অভিযান চালানো হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিশাত আল নাহিয়ান বলেন, “মেয়েদের শোবার ঘরে নাইট ভিশন ক্যামেরা বসিয়ে তাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করা হয়েছে। এটি অত্যন্ত গুরুতর অপরাধ।”

তিনি আরও জানান, “ক্যামেরাগুলোতে অন্তত এক মাসের ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত রয়েছে। ফুটেজগুলো যাচাই–বাছাই করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

অভিযানকালে পুলিশ জানতে পারে, পাঁচতলা মাদ্রাসা ভবনের নিচতলায় দুই শিক্ষক থাকেন এবং ওপরের চারতলায় প্রায় ১০০–১৫০ জন মেয়ে আবাসিকভাবে থাকেন। তবে কতজন ছাত্রী মাদ্রাসায় রয়েছে—সে বিষয়ে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।

ঘটনার পর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। অভিভাবক মহলে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। অনেকে তাদের সন্তানদের মাদ্রাসা থেকে সরিয়ে নেওয়ার চিন্তা করছেন