আনোয়ার হোসেন, যশোর অফিস : যশোর ইজিবাইক চালক বুলবুল হোসেন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটন হয়েছে। ইজিবাইক ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে তাঁকে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। একই সঙ্গে ছিনতাই হওয়া ইজিবাইক উদ্ধার হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) বেলাল হোসাইন প্রেস ব্রিফিংতে হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটনে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের তথ্য জানান।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগরের পুরাখালী গ্রামের বাসিন্দা এসার আলী (৩১),সদর শংকরপুর ইসহাক সড়কের মামুনের বাড়ির ভাড়াটিয়া মাহমুদ ওরফে মামুন (৩৮),যশোর শংকরপুর মেডিকেল কলেজপাড়ার শুকুর আলী (২০), গোলপাতা মসজিদ পশ্চিমপাড়ার জুয়েল (৩৮), শংকরপুর জমাদ্দারপাড়ার হৃদয় (২৩) এবং সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার নয়কাঠি গ্রামের আকবর গাজী (২৮) ও ইব্রাহিম গাজী (২৪)।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়,গত ১০ই জুলাই সন্ধ্যায় যশোর সদর উপজেলার নতুনহাট পাবলিক কলেজের পাশে পাটখেত থেকে যুবকের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। অনুসন্ধানের একপর্যায়ে মরদেহটি ইজিবাইকচালক বুলবুল হোসেনের (৩৬) বলে শনাক্ত হয়। বুলবুল যশোর সদর উপজেলার কচুয়া গ্রামের মৃতঃ শেখ আব্দুর রশিদের ছেলে।

নিহতের ভাই ফরহাদ হোসেন জানান, তাঁর ভাই বুলবুল গত ৮ই জুলাই সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজারহাট থেকে ভাড়ায় চালিত ইজিবাইক নিয়ে যশোর শহরের উদ্দেশে বের হন। এরপর তাঁর আর সন্ধান পাওয়া যায়নি। একপর্যায়ে পাটখেত থেকে উদ্ধার হওয়া মরদেহ শনাক্ত করেন নিহতের ভাই ফরহাদ ১১ই জুলাই যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন।

মামলার পর তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মফিজুল ইসলাম ও পুলিশ পরিদর্শক শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে এসআই শফি আহম্মেদ রিয়েল ও সঙ্গীয় ফোর্সের সমন্বয়ে একটি দল তদন্তে নামেন তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের শনাক্ত করেন। এরপর গতকাল মঙ্গলবার দুপুর থেকে আজ বুধবার ভোর পর্যন্ত শহরের শংকরপুর ও সাতক্ষীরার শ্যামনগরে অভিযান চালিয়ে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও ইজিবাইক উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত গামছা ও ওড়না জব্দ করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, ইজিবাইক ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে তাঁরা চালক বুলবুল হোসেনকে ৮ই জুলাই সন্ধ্যা ৬টার দিকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে ভাড়া করেন। যশোর মনিহার থেকে উঠে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে এবং রাস্তায় জুসের সঙ্গে চেতনানাশক খাইয়ে অচেতন করেন ঘটনাস্থলে নিয়ে গভীর রাতে গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করেন। লাশ পাটখেতে ফেলে তাঁরা ইজিবাইক নিয়ে চলে যান বলে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়েছে।