০৪:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ইউনূস সরকার চাপে আছে : আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপ

নিউজ ডেস্ক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার শুরুতে ব্যাপক সমর্থন পেলেও এখন তা কমতে শুরু করেছে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি)।

প্রতিষ্ঠানটি বলছে, সরকার রাজনৈতিক বিভেদ ঠেকাতে এবং প্রতিশ্রুত সংস্কার কার্যক্রম শেষ করতে এখন যথেষ্ট চাপের মধ্যে আছে। এ ছাড়া, দেশের অর্থনীতি ও জনগণের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা নিয়েও বাড়ছে ব্যাপক সমালোচনা।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) প্রকাশিত আইসিজির প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার উল্লাসে শুরুতে ইউনূস প্রশাসন অভাবনীয় জনসমর্থন পায়। কিন্তু সেই হানিমুনের (মধুচন্দ্রিমা) এখন সময় শেষ হয়ে গেছে।

আইসিজি আরো মনে করছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও তার সদস্য দেশগুলো বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে সহায়তা করতে পারে। এ জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে। যেমন- সংস্কার প্রক্রিয়ায় প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সহায়তা, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশে রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ আরো বাড়ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভক্তি এবং নির্বাচন সংক্রান্ত অনিশ্চয়তার কারণে সরকার চাপের মধ্যে রয়েছে। ২০২৬ সালের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এর আগে বড় ধরনের সংস্কার প্রয়োজন। এ জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের জন্য বেশ কিছু কমিশনও গঠন করেছে। চারটি কমিশন জানুয়ারির মাঝামাঝিতে তাদের সুপারিশ প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছে। ব্যাপক রাজনৈতিক সংস্কারকাজ চালানোর সুপারিশ করেছে তারা।

অপরদিকে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখনও সংকটমুক্ত হয়নি। মুদ্রাস্ফীতি, খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি ও দুর্নীতি সমস্যা বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে সরকারের সংস্কারের কিছু পদক্ষেপ ইতিবাচক ফল দেখাতে পারে, যেমন ব্যাংকিং খাতের উন্নয়ন ও দক্ষ কর্মকর্তা নিয়োগ। কিন্তু দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা থাকলে অর্থনীতি আরো বিপদের মধ্যে পড়তে পারে।

আইসিজির মতে, বাংলাদেশের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হলো ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক। ভারতীয় সীমান্তে উত্তেজনা এবং মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা এখনও সমাধান হয়নি। এসব সমস্যা মোকাবিলায় ইইউ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা প্রয়োজন।

প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে জানানো হয়, বাংলাদেশের সামনে নতুন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সুযোগ রয়েছে। কিন্তু এগুলো কাজে লাগাতে প্রয়োজন রাজনৈতিক ঐক্য ও আন্তর্জাতিক সমর্থন। ইইউ ও তার সদস্য দেশগুলোর সহায়তায় বাংলাদেশ তার গণতান্ত্রিক উত্তরণ এবং অর্থনৈতিক পুনর্গঠন আরো ত্বরান্বিত করতে পারে।

Please Share This Post in Your Social Media

আপডেট: ০৩:০৩:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫
২০

ইউনূস সরকার চাপে আছে : আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপ

আপডেট: ০৩:০৩:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার শুরুতে ব্যাপক সমর্থন পেলেও এখন তা কমতে শুরু করেছে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি)।

প্রতিষ্ঠানটি বলছে, সরকার রাজনৈতিক বিভেদ ঠেকাতে এবং প্রতিশ্রুত সংস্কার কার্যক্রম শেষ করতে এখন যথেষ্ট চাপের মধ্যে আছে। এ ছাড়া, দেশের অর্থনীতি ও জনগণের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা নিয়েও বাড়ছে ব্যাপক সমালোচনা।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) প্রকাশিত আইসিজির প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার উল্লাসে শুরুতে ইউনূস প্রশাসন অভাবনীয় জনসমর্থন পায়। কিন্তু সেই হানিমুনের (মধুচন্দ্রিমা) এখন সময় শেষ হয়ে গেছে।

আইসিজি আরো মনে করছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও তার সদস্য দেশগুলো বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে সহায়তা করতে পারে। এ জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে। যেমন- সংস্কার প্রক্রিয়ায় প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সহায়তা, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশে রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ আরো বাড়ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভক্তি এবং নির্বাচন সংক্রান্ত অনিশ্চয়তার কারণে সরকার চাপের মধ্যে রয়েছে। ২০২৬ সালের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এর আগে বড় ধরনের সংস্কার প্রয়োজন। এ জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের জন্য বেশ কিছু কমিশনও গঠন করেছে। চারটি কমিশন জানুয়ারির মাঝামাঝিতে তাদের সুপারিশ প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছে। ব্যাপক রাজনৈতিক সংস্কারকাজ চালানোর সুপারিশ করেছে তারা।

অপরদিকে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখনও সংকটমুক্ত হয়নি। মুদ্রাস্ফীতি, খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি ও দুর্নীতি সমস্যা বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে সরকারের সংস্কারের কিছু পদক্ষেপ ইতিবাচক ফল দেখাতে পারে, যেমন ব্যাংকিং খাতের উন্নয়ন ও দক্ষ কর্মকর্তা নিয়োগ। কিন্তু দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা থাকলে অর্থনীতি আরো বিপদের মধ্যে পড়তে পারে।

আইসিজির মতে, বাংলাদেশের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হলো ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক। ভারতীয় সীমান্তে উত্তেজনা এবং মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা এখনও সমাধান হয়নি। এসব সমস্যা মোকাবিলায় ইইউ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা প্রয়োজন।

প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে জানানো হয়, বাংলাদেশের সামনে নতুন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সুযোগ রয়েছে। কিন্তু এগুলো কাজে লাগাতে প্রয়োজন রাজনৈতিক ঐক্য ও আন্তর্জাতিক সমর্থন। ইইউ ও তার সদস্য দেশগুলোর সহায়তায় বাংলাদেশ তার গণতান্ত্রিক উত্তরণ এবং অর্থনৈতিক পুনর্গঠন আরো ত্বরান্বিত করতে পারে।