নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই অনেকে নিজে থেকে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ নেন। ওষুধের দোকানগুলোও নির্বিচারে এ ধরনের ওষুধ বিক্রি করে। অ্যান্টিবায়োটিকের এই অপব্যবহার ঠেকাতে শিগগির একটি নতুন আইন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

মন্ত্রী বলেছেন, আইন অনুযায়ী ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ফার্মেসি অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ বিক্রি করতে পারবে না। কেউ বিক্রি করলে তার লাইসেন্সও বাতিল হবে।

মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অ্যান্টিবায়োটিকের যত্রতত্র ব্যবহার রোধে করণীয় শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

জাহিদ মালেক জানান, ‘ওষুধ আইন-২০২২ প্রণয়ন শেষ পর্যায়ে আছে। শিগগিরই অনুমোদনের জন্য সংসদে তোলা হবে। এরপরই অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ন্ত্রণে আইন হবে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘দেখা গেছে যত্রতত্র অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের কারণে পৃথিবীতে বছরে প্রায় ১৫ লাখ লোক মারা যায়। বাংলাদেশেও অ্যান্টিবায়োটিকের যত্রতত্র ব্যবহারে অসংখ্য রোগে এখন আর ওষুধ কার্যকর হয় না। পরে তাদেরকে সুস্থ করতে হলে একটি কঠিন অবস্থার মুখোমুখি হতে হয়। যেখানে অল্প চিকিৎসাতেই রোগ ভালো হয়ে যেত, সর্বোচ্চ চিকিৎসার মাধ্যমে এখন রোগ ভালো করা যাচ্ছে না। এমনকি এর ফলে অসংখ্য লোক অকালে মৃত্যুবরণ করছে।’

সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি শরীর প্রতিরোধ গড়ে তুললে সে অবস্থাকে বলা হয় অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স। আর এই প্রবণতার কারণে প্রতি বছর বিশ্বে সাত লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। ২০৫০ সাল নাগাদ এ সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াতে পারে এক কোটিতে।

আর পশুখাদ্য, মাছ এবং কৃষিতে অতিমাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। সবচেয়ে বেশি অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হচ্ছে কৃষিতে। এটি বাংলাদেশে ব্যবহৃত মোট অ্যান্টিবায়োটিকের প্রায় অর্ধেক। ফলে খুব সহজেই কৃষি খাদ্যের মধ্য দিয়ে এই অ্যান্টিবায়োটিক মানুষের শরীরে ঢুকছে। এতে একদিকে যেমন অ্যান্টিবায়াটিকের কার্যকারিতা হারাচ্ছে, তেমনি শরীরও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারাচ্ছে। এ ছাড়া অতিমাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে কারণে সামান্য জীবানু সংক্রমণও এখন ব্যবহারকারীর জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে।