জাতীয় সংবাদ | তারিখঃ ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 3206 বার
নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ এ গানটি শুনলে মনে পড়ে যায় ভাষা শহিদদের কথা। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা বাংলার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন ভাষা শহিদরা। তাদের রক্তের বিনিময়ে এসেছে মাতৃভাষা বাংলা। তাই ভাষা শহিদদের স্মৃতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের বহিপ্রাঙ্গণে নির্মাণ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার।
প্রতিবছর ২১ ফেব্রুয়ারি আসলে এ শহিদ মিনারে শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে জনতার ঢল নামে। এবারও এসে গেছে ভাষা শহিদদের রক্তে রঞ্জিত মহান দিবসটি। সোমবার রাত ১২ টা ১ মিনিট থেকে শুরু অমর একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ইতোমধ্যে এ দিবসকে ঘিরে শহিদ মিনারের সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে এখন পুরোপুরি প্রস্তুত কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার।
সন্ধ্যার পর রাতের প্রথম পর্বের পাঠ চুকলেই একুশের প্রথম প্রহর। জাতির সূর্য সন্তানদের দিন, একুশে ফেব্রুয়ারি। সোমবার দিবাগত রাতের প্রথম প্রহরে জাতি বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে ভাষার জন্য জীবন উৎসর্গকারীদের।
একুশের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ধাপে ধাপে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হবে স্মৃতির মিনার। জাতি স্মরণ করবে বায়ান্নর বীর শহীদদের।
সরেজমিনে সোমবার বিকালে দেখা যায়, শহীদ মিনার ঘিরে ব্যপক নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। স্তরে স্তরে বিভিন্ন বাহিনীর নজরদারি চলছে। শেষ মুহূর্তের পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। শহীদ মিনার সংলগ্ন রাস্তা আলপনার রাঙানো হয়েছে৷ আশেপাশের রাস্তার দেয়ালে নতুন রঙ করা হয়েছে। গাছের গুঁড়ি রং করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে দর্শনার্থীদের আনাগোনাও দেখা গেছে। করোনা মহামারিতে জনসমাগম এড়াতে গত দুই বছর সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে সর্বোচ্চ পাঁচজন এবং ব্যক্তি পর্যায়ে সর্বোচ্চ দুইজন একসঙ্গে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের নির্দেশনা থাকলেও এবার সে বিধিনিষেধ থাকছে না।
জনসাধারণের শহীদ মিনারে যাওয়ার পথ এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান জানান, সর্বস্তরের জনসাধারণ পলাশী মোড় হয়ে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ও জগন্নাথ হলের সামনে দিয়ে শহীদ মিনারে যেতে হবে। শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের পর সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠের সামনের রাস্তা দিয়ে দোয়েল চত্ত্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রাস্তা দিয়ে চাঁনখার পুল হয়ে শুধুমাত্র প্রস্থান করতে হবে। শহীদ মিনারের দিকে আসা যাবে না।
এছাড়া, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও আজিমপুর কবরস্থানে যাতায়াতের জন্য একটি রুট-ম্যাপও প্রণীত হয়েছে বলে জানান উপাচার্য। শহীদ মিনার এলাকায় কোনো মিছিল বা সমাবেশ করা যাবে না, কোনো ব্যানার, পোস্টার বা ছবি টাঙানো যাবে না।
শহীদ মিনারের প্রবেশপথে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ বিএনসিসি, রেড ক্রিসেন্ট, রোভার স্কাউটস, রেঞ্জার ও স্বেচ্ছাসেবকরা বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও একুশে উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে আমাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের অতিথিরা আসবেন। চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রস্তুতি, কোথাও কিছু করার প্রয়োজন আছে কিনা সেগুলো এখন দেখা হচ্ছে এবং সবকিছু পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।’