খুলনা বিভাগ, জেলার খবর, মাগুরা | তারিখঃ জুলাই ২৯, ২০২৪ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 3805 বার
স্বপন বিশ্বাস , শালিখা (মাগুরা) প্রতিনিধি: স্বল্প পুঁজি, কম পরিশ্রম ও অল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় মাগুরার শালিখায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বস্তায় আদা চাষ।
বাড়ির আঙিনা, বাড়ির ছাদ, ছায়াতল অনাবাদি ও পতিত জমিসহ বিভিন্ন জায়গায় বস্তায় কিংবা টবে বালু, মাটি ও জৈবসার মিশিয়ে আদা চাষ করছেন অনেকে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ২ হেক্টরেরও বেশি জমিতে ৬ হাজার বস্তায় আদা চাষ করেছেন চাষীরা। যেখানে প্রতি বস্তায় খরচ হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা। খরচ বাদ দিয়ে প্রতি বস্তায় লাভ হচ্ছে দুই থেকে তিন গুণ টাকা।পোকামাকড়ের উপদ্রব খুব বেশি না হলে শুধুমাত্র জৈব সার, ছাই, মাটি এবং বালি দিয়েই মিটছে আদা চাষের ঝামেলা। অল্প জায়গায় স্বল্প খরচে আদা চাষ করতে পারায় উপজেলার তরুণ চাষীদের ঝোঁক বাড়ছে বস্তায় আদা চাষের প্রতি। এমনই একজন আদা চাষী শালিখা উপজেলার শতখালি ইউনিয়নের পাঁচকাহুনিয়া গ্রামের সোহেল রানা। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, সর্বপ্রথম ইউটিউব এর ভিডিও দেখে বস্তায় আদা চাষের প্রতি উদ্বুদ্ধ হয়েছি পরে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ নিয়ে দুই বিঘা জমিতে সাড়ে চার হাজার বস্তায় আদা (বারি-২) চাষ শুরু করি। প্রথম বছরেই আদা চাষ করে তিনগুণ লাভ হওয়ায় এবছর আরো পাঁচশত বস্তা বাড়িয়ে দিয়েছি। এদিকে আড়পাড়া ইউনিয়নের দড়িশলাই গ্রামের বদরুল ইসলাম বলেন, দুই কাঠা জমিতে সাড়ে তিন শত বস্তায় আদা চাষ করেছি যেখানে জৈব সার, মাটি এবং বালু ব্যবহার করেছি। মাঝেমধ্যে পোকার উপদ্রব দেখা দিলে সামান্য পরিমাণ কীটনাশক ব্যবহার করছি। দাম যদি ভালো থাকে তাহলে এখান থেকে এবারো ভালো লাভ করব। একই ইউনিয়নের পুকুরিয়া গ্রামের আদাচাষী গিয়াস উদ্দিন বলেন, বাড়ির আঙ্গিনার ২০ শতক জমিতে ৪ শত বস্তায় আদা চাষ করেছি। ভালো দাম পেলে সামনের বছর আরো ২০০ টি বস্তা বৃদ্ধি করব। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, আদা চাষ একটি লাভজনক চাষ যা ইতোমধ্যে শালিখা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, এই চাষকে আরো বেশি সম্প্রসারিত করতে কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত প্রশিক্ষণ, পরামর্শ এবং ক্ষেত পরিদর্শন করে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
গত কয়েক বছরের চেয়ে এবছর বছর আদা চাষীর সংখ্যা বৃদ্ধি হয়েছে বলেও জানান তিনি। বস্তায় আদা চাষে অতি বৃষ্টি বা বন্যায় ফসল নষ্ট হওয়ার ভয় নেই। এছাড়া একবার ফসল তোলার পর সেখানে আলাদা করে কোনো সার ছাড়াই আরেকটি ফসল ফলানোর সুবিধা থাকায় স্বল্প পরিচর্যা ও স্বল্প খরচে বস্তায় আদা চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন একাধিক পরিবার।